মোবাইল থেকে ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় দুই হাজার ৪৫৮ জনে ছাড়িয়েছে। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
হুবেই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার এ ভাইরাসে প্রদেশটিতে একদিনে মৃত্যু হয়েছে আরও ৯৬ জনের। এ নিয়ে মোট হুবেইপ্রদেশে এ রোগে প্রায় দুই হাজার ৪৫৮ জনের মৃত্যু হলো। এ ছাড়া এ ভাইরাসে নতুনভাবে আরও ৬৩০ জন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে প্রদেশটির কর্তৃপক্ষ।
এ ভাইরাসের প্রতিরোধে অনেকেই বাইরে বের হচ্ছেন মুখে মাস্ক পরে। তবে আমরা অনেকেই জানি না যে মুখে মাস্ক পরলেই এই ভাইরাস প্রতিরোধ করা যায় না।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই ভাইরাসে সংক্রমণ এড়াতে ঘন ঘন হাত ধুতে হবে। আর নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীও নিরাপদ রাখতে হবে।
আমাদের নিত্য ব্যবহার সামগ্রীর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মোবাইল ফোন। এই মোবাইল ছাড়া আমাদের এক মুহূর্ত চলে না। সব সময় এই মোবাইল আমাদের সঙ্গে থাকে।
আর শখের মোবাইল সবচেয়ে বেশি অপরিচ্ছন্ন থাকে বলে এর মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন করোনাভাইরাস থেকে দূরে থাকতে চাইলে মোবাইল নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে, যা মাস্ক পরার চেয়েও কার্যকর হতে পারে।
গত সপ্তাহে সিঙ্গাপুরের চার চিকিৎসক কোলেন থমাস, জুডি চেন, থাম হো মেং এবং লিম পিন পিন দেশটির জনসাধারণকে মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করেন ও একটি বার্তা দিলে তা মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে চার চিকিৎসকের ওই বার্তা নাকচ করে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, করোনাভাইরাস বাতাসে ছড়ায় কিনা তা এখনও প্রমাণিত নয়। ফলে মাস্ক ব্যবহার করেই যে করোনাভাইরাসের বিপদ থেকে দূরে থাকা যাবে- সে নিশ্চয়তা নেই।
তবে এই ভাইরাস ছাড়ানোর মাধ্যম হিসেবে হাতের মোবাইল ফোনটিকেই তালিকায় সবার আগে রাখছেন সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিকেল সেবার পরিচালক কেনেথ ম্যাক।
এর আগে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, টয়লেটের কমোডের চেয়েও মোবাইল ফোনের গায়ে বেশি রোগ-জীবাণু পাওয়া যায়। কারণ মানুষ নিয়মিত টয়লেট পরিষ্কার করলেও দিনের বড় একটি সময় হাতে রাখা মোবাইল ফোনটির পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ভাবে না।
২০১৮ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির চার গবেষক তাদের এক গবেষণায় দেখান, ফোনের স্ক্রিনের চেয়ে যন্ত্রটির গায়ে এবং ফোনের যে কভার থাকে, তাতেই বেশি ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়।
কথা বলার সময় ফোন থাকে চোখ, নাক ও ঠোঁটের কাছাকাছি। ফলে এসব অঙ্গের মাধ্যমে সহজেই মানুষের শরীরে পৌঁছে যেতে পারে ভাইরাস।
আর যারা টয়লেটেও মোবাইল ফোন রাখেন তাদের রোগজীবাণুর বিস্তার রোধে এখনই অভ্যাস বদলানোর পরামর্শ দিচ্ছেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকরা।
ফোনকে কীভাবে রোগজীবাণু মুক্ত করা যায়?
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন বলছে, আল্ট্রাভায়োলেট স্মার্টফোন সেনিটাইজার ডিভাইস ব্যবহার করে ফোনের অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করা সম্ভব।
এ ছাড়া অ্যালকোহল দ্রবণও কার্যকর হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, হাতের কাছে কিছু না পেলে মাইক্রোফাইবার কাপড় দিয়ে ফোন মুছে নিলেও সংক্রমণের ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।
রাজশাহী বার্তা/admin