রাণীনগরে প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মিরাট চরকানাই গ্রামে জেসমিন আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের সন্দেহ জেসমিনকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাণীনগর থানা পুলিশ শনিবার দুপুরে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত জেসমনি আক্তার মিরাট চরকানাই গ্রামের সৌদি প্রবাসী আব্দুল বারিকের স্ত্রী এবং একই এলাকার মিরাট মোল্লাপাড়া গ্রামের বাদেশ আলীর মেয়ে।

নিহত জেসমিন আক্তারের মামা আজাহার আলী বলেন, ১৫-১৬ বছর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে তার ভাগ্নি জেসমিনকে উপজেলার চরকানাই গ্রামে আব্দুল বারিকের সঙ্গে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর এক ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। এরই মধ্যে জামাই বারিক সৌদিতে চলে যান। এরপর থেকে জেসমিনের ভাসুর, শ্বশুড়-শ্বাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন নানা কারণে জেসমিনকে নির্যাতন করতেন। প্রায় এক মাস আগে জেসমিনকে ভাসুর জয়বুলসহ পরিবারের লোকজন মারপিট করলে জেসমিন নিজেই রাণীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর স্থানীয় মেম্বার ও গণ্যমান্য লোকজন বসে বিষয়টি সমাধান করে দেয়।

আজাহার আলী আরো জানান, তার ভাগ্নি যে মারা গেছে এই খবর তাদেরকে কেউ জানায়নি। তারা লোকমারফত খবর পেয়ে সেখানে যান। তাদের সন্দেহ, ভাগ্নি জেসমিনকে হত্যা করা হয়েছে। তবে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ইউডি মামলা করেছেন।

জেসমিনের ভাসুর জয়বুলসহ স্থানীয়রা বলেন, শুক্রবার দুপুরে প্রতিবেশী একটি বিয়ে অনুষ্ঠানে বরযাত্রী হয়ে যান জেসমিন ও তার ছেলে জিহাদ। এরপর রাত অনুমান সাড়ে ৮টার দিকে ফিরে আসে জেসমিন। এ সময় ছেলে জিহাদ হোসেন বাড়িতে ফিরে আসতে দেরি হওয়ায় জেসমনি তার ছেলে জিহাদকে মারপিট করে। এমন সংবাদ জিহাদ তার বাবা আব্দুল বারিককে সৌদি আরবে মোবাইল ফোনে জানালে বারিক ফোনে তার স্ত্রী জেসমিনের সঙ্গে কথা বলেন।

এর কিছু পরেই জেসমিন আক্তার বাড়িতে ঢুকে গ্যাস ট্যাবলেট খায়। এসময় ছেলে জিহাদ প্রতিবেশী লোকজনদের ডাক দিলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই রাজশাহী স্থানান্তার করে। রাজশাহী নেয়ার পথে মারা যান জেসমিন।

এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি শাহিন আকন্দ বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত করার জন্য জেসমিনের মা জানো বেওয়া ইউডি মামলা করেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।