পাবনায় অটোচালক খুন সম্পর্কের সন্দেহ থেকে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা
৭২ ঘন্টার মধ্যে সাথিয়ার আলোচিত সেলিম হত্যার রহস্য উদঘাটন,০৫(পাঁচ)জন আসামী গ্রেফতার ও ভিকটিমের ইজিবাইক উদ্ধার করলো পাবনা জেলা পুলিশ। ০৩(তিন) জন আসামীর আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান।
গত ০৯/৬/২০২১ ইং তারিখ বিকাল ০৪-০০ ঘটিকায় ভিকটিম সেলিম প্রতিদিনের ন্যায় ইজিবাইক নিয়ে সুজানগরের গোশাইপাড়া বাড়ী হতে বের হয় এবং বলে যায় রিজার্ভ ভাড়া আছে ফিরতে দেরি হবে। কে জানতো এই রিজার্ভ ভাড়ায় তার জীবনের জন্য মহাবিপদ হবে।
রাত ১১-০০ পর্যন্ত বাড়ী না আসা এবং ফোনের দুটি নাম্বার বন্ধ পাওয়ায় পরিবারের সবাই সারারাত বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকে। সকাল অনুমান ০৭-০০ জানা যায় বহলাবাড়ী গ্রামের পাশ্বে কালুকাটা বিলে ডেমা ঘাসের জমির মধ্যে সেলিমের লাশ পড়ে আছে।মাথা-গলায় মারাত্মক জখম,দুই পায়ের রগকাটা সর্বোপরি খুনিরা কতটা খারাপ যে ভিকটিমের অন্ডকোষ কেটে নিয়ে যায়।
জেলা পুলিশের অভিভাবক জনাব মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই ক্লুলেস খুনের রহস্য উদঘাটনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মাসুদ আলমের সমন্বয়ে কাজ শুরু হয় বিরামহীন ভাবে। পুলিশ সুপার মহোদয়ের সুনিপুণ তদারকি ও পুলিশ হেডকোয়ার্টারে সহযোগিতায় একদিনের মধ্যেই খুনীচক্রকে সনাক্ত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মাসুদ আলম কিন্তু ততক্ষণে খুনীরা অনেকদূর পালিয়ে যায়। পুলিশ সুপার মহোদয় এই করোনার ভয়াবহতা মধ্যেও দ্রুত সিন্ধান্ত নেন অভিযানের। ১১/৬/২০২১ তারিখ রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলমের নেতৃত্বে এএসপি(প্রবি) মোঃরিজওয়ান সাঈদ জিকু ও ডিবির এস আই মোঃআবু আব্দুল্লাহ জাহিদ পিপিএম সহ একটি টিম নিয়ে দ্রুত সড়ক-নৌ পথে রওনা হন ঢাকা জেলার উদ্দেশ্যে। অফিসার ইনচার্জ আমিনপুরের সহয়তায় যানজট ও প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে গভীর রাতে টিম ফেরীতে উঠে। সারারাতই অস্বাভাবিক বৃষ্টি থাকায় ফেরি থেকে নামার রাস্তা ছিলো কর্দমাক্ত তাই দুই পাশ্বেই ট্রাক আটকে যায়।মানুষের সহয়তায় অতি কষ্টে পার হয় টিম। গন্তব্যের উদ্দেশ্যে এগিয়ে চলা যেকোন মূল্যে ভোর হওয়ায় আগেই পৌঁছাতে হবে।আগে থেকেই নির্দেশনা মোতাবেক টিম ধামরাই থানা রাস্তায় অপেক্ষামাণ। ভোর অনুমান ০৬-০০ টিম পাবনা ধামরাই থানার এক ইট ভাটা হতে ঘটনার অন্যতম প্রধান নায়ক রাসেল ও রানাকে আটক করে।চলছে বিরামহীন বৃষ্টি সাথে টিম পাবনা জেলা পুলিশের অভিযান। এসপি পাবনা মহোদয় ও সারারাত জেগে থেকে ফোনের বারবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সাথে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ। আটককৃত দুই খুনী প্রাথমিক কিছু তথ্য দেয়,তাৎক্ষণিকভাবে সিন্ধানত প্রদান করেন এই টিমই দ্রুত ফিরে এসে সাথিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান করবে।ফেরার পথে মানিকগঞ্জের মধ্যে চোখের সামনেই বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় গতি হারিয়ে এ্যাম্বুল্যান্স ও মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় প্রাণ হারাই দুইজন।মহান আল্লাহ সহায়,আমিন। আবার ফেরিতে পার হয়ে সাথিয়া থানার বহলাবাড়ীর উদ্দেশ্য রওনা পূর্বহতে অফিসার ইনচার্জ সুজানগর প্রস্তুত।দুপুরের পর সেখান হতে আসামী হোসেন আলী ও শিলা খাতুন আটক। তারপর শুরু হয় বিরামহীন জিজ্ঞাসাবাদ।
রাত-দিন শেষে আবার সন্ধা নামে,নির্ঘুম ক্লান্ত টিম পাবনা জেলা পুলিশ আলোর মুখ দেখে,দুজন খুনী অনেক তথ্য দিতে থাকে যাতে রহস্যের জট খুলতে থাকে। একপর্যায়ে তারা ভিকটিম সেলিমের ইজিবাইকের সন্ধান দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে আবার শুরু,টিম আতাইকুলা থানার সহায়তায় পাবনা জেলা পুলিশের টিম পৌঁছে যায় লুন্ঠিত ইজিবাইকের নিকট এবং ইজিবাইক উদ্ধারসহ আসামী দেলোয়ার নামে আরো একজন আটক। ৭২ ঘন্টার বৃষ্টিভেজা বিরামহীন অভিযান পুরা সময় তথ্য ও নির্দেশনা দিয়ে সাথে থাকেন পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম মহোদয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মাসুদ আলম চলেন বিরামহীনভাবে টিমের সদস্যদের নিয়ে। এই আলোচিত ক্লুলেস খুনের ঘটনার ৭২ ঘন্টার অভিযানটি ছিলো শ্বাসরুদ্ধকর ও নাটকীয়তায় ভরা এবং বৃষ্টি ছিল প্রিয় সঙ্গী।
গ্রেফতারকৃত তিনজন আসামী এ হত্যাকান্ড সংক্রান্তে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
রাজশাহী বার্তা/admin