রুয়েটে কাফনের কাপড়, ৪ কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

সময়: 1:01 pm - May 9, 2023 | | পঠিত হয়েছে: 134 বার

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৯ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে কাফনের কাপড় পাঠানোর ঘটনায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) বিষয়টি তদন্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার কর্মকর্তাকে আদালতে তলব করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ মে) ওই চার কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৮ মে) রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।

আদেশে বলা হয়েছে, জিডির তদন্ত ও সত্যতা যাচাই করার জন্য বিতর্কিত ব্যক্তি রুয়েটের পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আল বেরুনী ফারুক, নির্বাহী প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব ও সিনিয়র সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন ইতির স্বাক্ষর/লেখা সংগ্রহ করা এবং হাতের লেখা পরীক্ষার জন্য আদালতে হাজির করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। জিডির বিষয়ে সঠিক তদন্তের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখিত ব্যক্তিদের আগামী ৯ মে আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

জানা গেছে, গত ৬ ডিসেম্বর রুয়েট শিক্ষক সমিতি ও শুদ্ধাচার কমিটির সদস্যরা কয়েকজন কর্মকর্তাকে নির্ধারিত সময়ে অফিসে হাজির না হওয়া ও প্রায়ই অফিসে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। এদের মধ্যে রুয়েটের পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আল বেরুনী ফারুকও ছিলেন। ওই দিন দুপুরে তিনি শুদ্ধাচার কমিটি ও শিক্ষক সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাকবিতণ্ডায় জড়ান এবং তাদের দেখে নেবেন বলে হুমকি প্রদান করেন।

এরপর গত ২১ ডিসেম্বর রুয়েটের ৯ শিক্ষক-কর্মকর্তার নামে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে চিঠি আসে। চিঠিতে প্রেরকের ঠিকানায় ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’ উল্লেখ ছিল। চিঠি খুললে এর ভেতরে সাদা কাফনের দুটি করে টুকরো পায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ৯ শিক্ষক-কর্মকর্তা। হুমকি পাওয়া একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তার সন্দেহ, এভাবে চিঠিতে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে শাহ মো. আল বেরুনী ফারুক, মোতাহার হোসেনসহ তাদের সহযোগীরা জড়িত থাকতে পারেন। তবে আল বেরুনী ফারুক এমন অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।

কাফনের কাপড়ের মাধ্যমে হত্যার হুমকি প্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম সেখ, গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরের পরিচালক এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন, রুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রবিউল আওয়াল, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক এবং রুয়েট শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মিয়া মো. জগলুল সাদত, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন, কন্ট্রোলার নাজিম উদ্দীন আহম্মদ, ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের উপ-পরিচালক মামুনুর রশীদ, সহকারী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ ও সেকশন অফিসার প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম রোজ।

চিঠিতে সাদা কাপড়ের টুকরো পাওয়ার ঘটনায় ওই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন মতিহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কামাল হোসেন ইতি বলেন, আমাকে আসলে কেন আদালতে ডাকা হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। আর আমার আগের কিছু পারিবারিক বিষয় ছিলো। যেগুলো চাকরির ক্ষেত্রে প্রয়োগ হতে পারে না।

আদালতে তলবের বিষয়ে জানতে চাইলে রুয়েটের পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আল বেরুনী ফারুক বলেন, ৯ শিক্ষক-কর্মকর্তার কাছে ডাকযোগে চিঠির খামের মধ্যে সাদা কাগজ পাঠানো হয়েছিল। এই ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছিল। সেখানে আমাদের ব্যাপারে অভিযোগ করা হয়েছিলো। হয়তো ওই চিঠির খামের উপরে হাতের লেখা মেলানোর জন্য আমাদের আদালতে ডাকা হয়েছে। আমরা সেখানে অবশ্যই যাব।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর