করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগিদের জন্য সক্ষমতা বাড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে
করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগিদের জন্য সক্ষমতা বাড়াচ্ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড ভবনটি করোনায় আক্রান্ত রোগিদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ভবনের দ্বিতীয়তলায় রয়েছে নিবিড় পরিচর্র্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ)। আর নিচতলায় রয়েছে বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি এবং নিউরোসার্জারী বিভাগ। এখন সেখানে চিকিৎসাধীন রোগিদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে। দুই দিনের মধ্যে সেটি করোনা রোগিদের জন্য প্রস্তুত করা হবে।
বুধবার সকালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ও হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা ওয়ার্ডটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান, রামেকের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী ও আইসিইউ এর ইনচার্জ ডা. গোলাম মোস্তফাসহ অন্যান্য চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের এই ভবনটিকে করোনাভাইরাসের রোগিদের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব। হাসপাতালের প্রধান ফটক ব্যবহার না করেই পেছনের গেট দিয়ে এখানে রোগিদের আনা-নেয়ার সুযোগ রয়েছে। মূল হাসপাতালের সঙ্গে এটার কোনো সংযোগ থাকবে না। এখানে প্রায় ২০০ রোগিকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে। অক্সিজেনের ব্যবস্থা আছে। আইসিইউ, এইচডিইউ রয়েছে। এখানে করোনা রোগিদের সর্বোচ্চ ভালো চিকিৎসা সম্ভব।
এরপর সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সবাই মিলে নেমেছি। দেশ এবং জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে সংকট মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের যে সামর্থ্য আছে সে অনুযায়ীই কাজ করতে হবে। কল্পনাপ্রসূত কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে লাভ নেই। বাস্তবতার ভিত্তিতে এগুতো হবে। এখন আমরা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাই। মন্ত্রণালয় কথা বলবে, কিন্তু তার বাস্তব প্রতিফলন থাকবে না এটা হবে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে কথা এবং কাজের সামঞ্জস্য রাখতে হবে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান জানান, এখন ৩০ নম্বর ওয়ার্ড ভবনটি প্রস্তুত করা হচ্ছে। যদি প্রয়োজন হয় অন্য ওয়ার্ডেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। কারণ, সব রোগির আইসিইউ বা এইচডিইউ লাগবে না। সাধারণ রোগিও থাকবে। তিনি জানান, এখানে এখন ১০টি আইসিইউ এবং ৮টি এইচডিইউ রয়েছে। এছাড়া সার্জারি রুমেও ৬টি আইসিইউ বেড রয়েছে।
রামেকের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী জানান, চিকিৎসকদের নিরাপত্তার হাসপাতালে এখন প্রায় ২৫০ পিপিই মজুত রয়েছে। আরও কিছু আসছে। আরও এক হাজার পিপিই জরুরি প্রয়োজন। তাহলে চিকিৎসকরা নিরাপদে কাজ করতে পারবেন। আর করোনা রোগ শনাক্তের জন্য খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে পিসিআর মেশিন আসছে। সঙ্গে একজন বিশেষজ্ঞও আসছেন। তারা মেশিনটি স্থাপন করে দিয়ে যাবেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হবে। তখন কিটও আসবে। আগামী দুই বা তিনদিনের মধ্যে এই কাজটি শুরু হবে।
রাজশাহীতে করোনা রোগিদের জন্য সংক্রমণ ব্যধি (আইডি) হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি সিডিএম এবং ক্যান্সার হাসপাতালকেও করোনার চিকিৎসায় ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজশাহী শহরের তিনটি স্টেডিয়ামও প্রয়োজনে চিকিৎসাকাজে ব্যবহার করা হবে। বুধবার পর্যন্ত রাজশাহীতে কোনো করোনা রোগি শনাক্ত হয়নি। পুরো জেলায় বুধবার ৩৯৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।