আপনার পিরিয়ড হলে খাদ্য তালিকায় রাখুন সেসব খাবার
পিরিয়ডের সময় নারী দেহের জন্য অতিরিক্ত পুষ্টি দরকার। প্রয়োজন বাড়তি কিছু খাবার গ্রহণ। এই ঘাটতি পুষিয়ে নেয়া সহ এ সময়ে নারীকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে কিছু খাবার গ্রহণ বেশ জরুরি। চলুন মাসিকের সময় মহৌষধ হিসেবে কাজ করে এমন কিছু খাবারের নাম এবং খাবারের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই-
১. কলা : কলা পটাশিয়ামের ও ভিটামিনের খুব ভালো উৎস, যা মাসিকের সময় আপনার জন্য জরুরী। এই কলা মাসিকের বিষণ্ণতা কমাতেও সহায়ক। এই সময় প্রতিদিনকার খাদ্য তালিকায় একটি কলা রাখুন। এটি দেহের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করবে।
২. সবুজ শাক সবজি : সবুজ শাকসবজি পিরিয়ডের সময়ে আপনার শরীরের বেশ উপকারে আসে। সবুজ শাক সব্জিতে আছে প্রচুর আয়রন, যা শরীরের ক্ষয় পূরণে সহায়তা করবে। এটি শুধুমাত্র আয়রন ও বি ভিটামিনে পরিপূর্ণ নয় বরং উচ্চমাত্রায় আঁশও আছে এতে যেটি কিনা হজমে সহায়তা করে। ভালোমতন হজম হওয়া পিরিয়ডের সময় সুস্থ থাকার একটি অপরিহার্য শর্ত। তাই প্রতি বেলার খাবারে রাখুন সবুজ শাক সবজি।
৩. লাল মাংস : শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয় পিরিয়ডের সময়ে, যা পূরণ করবে লাল মাংস। অ্যানিমিয়া বা রক্তশূণ্যতা কমানোর জন্য এটি খুব প্রয়োজনীয়। চর্বি ছাড়া লাল মাংস অবশ্যই রাখুন খাবারের তালিকায়, সাথে রাখুন প্রচুর সালাদ। শরীর থাকবে সুস্থ।
৪. বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার : বাদামে নানান রকম ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে যা পিরিয়ডের সময় শরীরের জন্য ভালো। তবে বাজারের বাড়তি লবণে ভাজা বা চিনিতে জড়ানো বাদাম খাওয়া যাবেনা। চীনা বাদাম, কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম, পেস্তা, আখরোট ইত্যাদি পিরিয়ডজনিত শরীরের ঘাটতি পূরণে বেশ উপকারী। সাথে কুমড়ার বীজ সহ নানা ধরণের বীজ রাখতে পারেন খাবারের তালিকায়।
৫. সামুদ্রিক মাছ : বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, ফ্যাটি এসিড ইত্যাদি। এগুলো পিরিয়ড চলাকালীন শরীরের ক্ষয় পূরণ করে এবং ব্যথা কমাতেও ভূমিকা রাখে। পিরিয়ডের সময় মাছ খেতে ভুলবেন না যেন। সামুদ্রিক মাছ খেলে আরও ভালো।
৬. ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার : এক গ্লাস গরম দুধ মাসিকের সময় আপনাকে আরাম দেবে। Internal Medicine অনুযায়ী ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি পিএমএস এর লক্ষণ হ্রাস করে থাকে। এমনকি এই খাবারগুলো পেশী ব্যথা, পেট ব্যথা দূর করে দেয়। দুধ, দুধ জাতীয় খাবার, ডিম এই সময় খাওয়া উচিত।
৭. আঁশজাতীয় খাবার : ফলের মতন আঁশজাতীয় খাবার আপনার হজমশক্তি উন্নত করবে, বিশেষভাবে পিরিয়ডের সময়। কারণ এতে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এবং মিনারেল আছে।
৮. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল : মাসিকের সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি খাওয়া প্রয়োজন। শরীরে আয়রনের ঠিকমত শোষণ ও যথাযথ কার্যকারিতার জন্য ভিটামিন সি অতীব জরুরি। কিছু সহজ লভ্য ফল যেমনঃ পেয়ারা, আমড়া, আমলকি, লেবু, জলপাই, জাম্বুরা, পাকা টমেটো, কামরাঙা, পাকা পেঁপে, আনারস ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন সি পাওয়া যায়। মাসিকের সময় এ ফলগুলো খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
৯. পানি : মাসিকের সময় রক্তপাতের পাশাপাশি শরীর থেকে অনেক পানি বেরিয়ে যায়। আর এই অভাব পূরণ করতে পান করতে হবে প্রচুর পানি। মনে রাখতে হবে পানীয় নয় শুধু পানি। চা, কফি, কোলা ইত্যাদি দিয়ে এই ঘাটতি পূরণ হবে না। সাধারণ পানিই শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে সব চাইতে বেশি কার্যকর।
১০. আয়রন সমৃদ্ধ খাবার : পিরিয়ডের সময় আয়রন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুব জরুরী। যেসব খাবারে প্রচুর আয়রন পাওয়া যায় যেমন মাছ, মাংস, ডিম, কলিজা, কচু শাক, পুঁই শাক, ডাঁটা শাক, ফুলকপির পাতা, ছোলা শাক, ধনে পাতা, তরমুজ, কালো জাম, খেজুর, পাকা তেঁতুল ও আমড়া নিয়মিত খাবার চেষ্টা করতে হবে। এই খাবারগুলো শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করবে।
রাজশাহী বার্তা/admin