রাজশাহীতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা মানুষ কমেছে
করোনা পরিস্থিতিতে অনেক দুঃসংবাদের মধ্যে একটি ভালো খবর হলো রাজশাহীতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা মানুষের সংখ্যা কমেছে। আর ল্যাব স্থাপনের পর এখন পর্যন্ত জেলায় কোনো করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়নি।
তবে এ নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলার কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, দেশের অন্য জেলার মত রাজশাহীও ঝুঁকির বাইরে নেই।
এই অবস্থায় রাজশাহীকে এখনই লক ডাউন করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। যদিও গত ৬ এপ্রিল থেকে রাজশাহীর প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাজশাহী শহরে ওইদিন থেকে কেউ ঢুকতে পারছেন না। আবার কাউকে বের হতেও দেওয়া হচ্ছে না।
এছাড়া সকল প্রকার দোকানপাট সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)। তবে সকল প্রকার ওষুধের দোকান-ফার্মেসিসহ জরুরি সেবা সংক্রান্ত সকল প্রতিষ্ঠান এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৫ জনসহ বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৫৫ জন। তারা বিদেশ ফেরত ব্যক্তি ও তাদের স্বজন। আর রাজশাহীতে এ পর্যন্ত এক হাজার ১২২ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হয়েছে। প্রত্যেকে ১৪ দিন শেষে এখন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিন থেকে মোট এক হাজার ৬৭ জন বিদেশ ফেরত ব্যক্তিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ফলে বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন মাত্র ৫৫ জন।
তবে এখন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনে কেউ নেই। এছাড়া শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। কিন্তু এরপরও রাজশাহী করোনাভাইরাসের ঝুঁকির বাইরে নেই বলে মন্তব্য করেন সিভিল সার্জন।
তবে রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে এখনই ‘লকডাউন’ করে দেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।
শুরু থেকেই তিনি দাবি জানিয়ে আসছেন, পুরো রাজশাহীকে দ্রুত লকডাউন করে ফেলা হোক। না হলে রাজশাহীর অবস্থাও অন্য সংক্রমিত জেলার মত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন তিনি।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গত ৬ এপ্রিল রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সমন্বয় সভায় উপস্থিত অধিকাংশই লকডাউনের পক্ষে মত দিয়েছেন।
ওই সভা শেষে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ঢাকা থেকে সিদ্ধান্ত আসলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের সব রকম প্রস্তুতি আছে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক জানিয়েছেন, রাজশাহীতে ১০টি সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রের ১১৫টি বেড করোনা চিকিৎসায় প্রস্তুত করা হয়েছে। ১৬ জন ডাক্তার ও ১৩ জন নার্স করোনা চিকিৎসায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছেন। দুই হাজার ২০ সেট ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) এবং প্রয়োজনীয় জরুরি ওষুধ মজুদ রয়েছে। ইতোমধ্যে এক হাজার ১৭ সেট পিপিই বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত জেলার ৭৩ হাজার ৮০৪টি পরিবারে ৬৫৫ দশমিক ২৩০ মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী এবং ১৪ লাখ ২০ হাজার নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আরও ৫২৪ দশমিক ৩০০ মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী ও ২৬ লাখ ৭৫ হাজার নগদ অর্থ মজুদ রয়েছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ