বেশি বয়সে মা হচ্ছেন, নিয়ম মেনে চলবেন, না হলে বিপদ!
এখন কর্মক্ষেত্রেও পুরুষের সঙ্গে টক্কর দিচ্ছেন নারীরা। ক্যারিয়ার গড়তে ব্যস্ত তারাও। স্বভাবতই দেরিতে বিয়ে (লেট ম্যারেজ) করছেন মেয়েরা। কারণবশত এ যুগে বিলম্বে মা (লেট মাদারহুড) হচ্ছেন তারা। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রথম মা হওয়ার গড় বয়স ৩০ দাঁড়িয়েছে! অনেকেই নিজের ক্যারিয়ারের জন্য ৩৫-এ মা হচ্ছেন কিংবা এর আশেপাশে।
লেট মাদারহুডে কমবেশি সবারই সমস্যা হয়। বয়স ৩০-এর কোটা পেরিয়ে গেলে সন্তান প্রসবের আগে বেশ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। প্রসবকালীন ও পরবর্তীতেও কতিপয় বিষয় গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হয়। সেই সঙ্গে বাচ্চার যাতে কোনও শারীরিক সমস্যা না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হয়।
বয়স বাড়ার সঙ্গে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও থাইরয়েডের মতো সমস্যা হলে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। সাধারণ যেসব নিয়ম মানলে ৩৫-এর পরেও মা হতে কোনও সমস্যা হয় না, সেগুলো একঝলকে দেখে নেয়া যাক-
চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ
বেশি বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হলে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তাই এসব কারণে যাতে মা ও বাচ্চার কোনও ক্ষতি না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে নিয়মিত হেলথ চেকআপ করতে হবে। আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, সেটা হলো চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভুলেও কোনও ওষুধ খাওয়া যাবে না।
প্রেগন্যান্সি সম্পর্কে জ্ঞান
যেকোনও নতুন কাজ শুরুর আগে আমরা হোমওয়ার্ক করি। একইভাবে প্রেগন্যান্সির আগে ও পরের নানা অবস্থা সম্পর্কে ভাবী মায়ের জ্ঞান থাকা জরুরি। অন্যথায় ছোট ছোট বিষয়ে চিন্তা বাড়বে। আর এসময়ে সেটা মা ও বাচ্চার শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয়।
ডায়েটের দিকে নজর
গর্ভাবস্থায় মা ও বাচ্চার শরীরের গঠনে ডায়েট বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই এই পরিস্থিতিতে শারীরিক জটিলতা এড়াতে চিকিৎসকের পরামর্শে খাবার খেতে হবে। জাঙ্ক ফুড একদম এড়িয়ে চলতে হবে। বন্ধ করতে হবে কোল্ড ড্রিঙ্কের মতো পানীয় খাওয়া। তাই হবু মায়েরা কী খাচ্ছেন তা বিবেচনা করা জরুরি। পাশাপাশি কত পরিমাণে খাচ্ছেন, সেদিকে নজর রাখাও বাঞ্ছনীয়।
নিয়মিত শরীরচর্চা
৩০ পেরোনোর পর মা হওয়ার পরিকল্পনা থাকলে প্রেগন্যান্ট হওয়ার আগে থেকে নিয়মিত যোগাসন করতে হবে। প্রেগন্যান্সির পরও তা চলবে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভাবী মায়েরা নিয়মিত শরীরচর্চা করলে বয়স যতই হোক প্রসবকালীন সমস্য়া হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
ধূমপান ও মদ্যপান নয়
সুস্থ-সুন্দর বাচ্চার জন্ম দিতে চাইলে ভুলেও এমন ধরনের নেশা করবেন না। নাহলে মিসক্যারেজের (গর্ভপাত) শঙ্কা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি সন্তানের শরীরের ওপর চাপ বাড়বে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেই স্ট্রেস শরীরের পক্ষে ভালো নয়। গর্ভাবস্থায় যদি সেটা হয়, তাহলে তো কথাই নেই। মায়ের মানসিক চাপ বাচ্চার মারাত্মক ক্ষতি করে। সেই সঙ্গে ব্লাড প্রেসার বেড়ে গিয়ে পরিস্থিতি আরও কুটিল হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই এসময় বিষণ্ণতা, বিষাদ দূরে রাখতে হবে।
রাজশাহী বার্তা/Durul Haque