পাল্টে যাচ্ছে বদলগাছীর শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম

সময়: 12:33 pm - February 23, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 152 বার

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য ফাটাকেষ্ট আব্দুল মজিদের প্রচেষ্টায় দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে স্কুলের চিত্র ও শিক্ষা কার্যক্রম।

জানাযায়, উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনয়িনের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত শিবপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। এই ইউনিয়নের উচ্চ বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এটি ছিল এক সময়ের সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ঐতিহ্যবাহী হলুদবিহার দ্বীপ সংলগ্ন। এই স্কুলে এক সময় নিয়মিত পাঠদানসহ জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা বৃত্তিসহ গোল্ডেন প্লাস ও স্কুল পরীক্ষায় খুব ভাল ফলাফল করে থাকে। এই স্কুলে মনোরম পরিবেশ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা কোলাহলে মুখরতি ছিল। কয়েক বছর ধরে সাবেক স্কুল পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকদের অব্যবস্থাপনার কারণে বিদ্যালয়টির শিক্ষার মান ও পরিবেশ ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো বলে অভিযোগ তুলেছিলো স্কুলের একাধিক অভিভাবকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, ঐ স্কুলের পরিচালনা কমিটির এক সদস্য লাঠি হাতে স্কুল গেটে দাঁড়িয়ে আছে। এবং তার আসে পাশে অনেক এলাকাবাসী দাঁড়িয়ে আছে।

লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা বিষয়ে আসে পাশের লোকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং তারিখে এই স্কুলে নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠনের পর ঐ স্কুলের পরিচালনা কমিটির সহযোগিতায় অভিভাবক সদস্য আব্দুল মজিদ শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সময়মত স্কুলে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য তিনি এই উদ্যেগ নিয়েছেন। তারা আরোও জানান, তার এই উদ্যেগের কারণে আবারও এই স্কুলের শিক্ষার মান, পরিবেশ ও চিত্র পাল্টে যাচ্ছে। আর এতে করে সুষ্ঠ সুন্দর শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বলনে, নতুন কমিটি আসার পরে স্কুলের চিত্র পাল্টে যাচ্ছে, নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রীদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন, শিক্ষকদের নিয়মিত পাঠদানের বিষয়ে নানা রকম পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে আব্দুল মজিদের এই কর্মকান্ডে আমরা স্কুলের শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা অত্যন্ত খুশি হয়েছি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল মজিদ বলনে, আমি স্কুলের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আগে এই স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছিলো। ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা সময় মত বিদ্যালয়ে আসত না। স্কুল চলাকালীন সময়ে অনেক শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা নিজের ইচ্ছামত বাড়িতে চলে যেত। ধরাবাঁধার কোন নিয়মই ছিল না।

আমি সদস্য হওয়ার পর কড়াকড়ি নির্দেশ দিয়েছি ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকদের সময় মত স্কুলে আসতে হবে এবং স্কুল ছুটি হলে বাড়িতে যাবে। স্কুল চলাকালীন সময়ে কেউ বিশেষ কাজ ছাড়া বাহিরে যেতে পারবেনা। স্কুলে শিক্ষকরা যদি দেরিতে আসে তাহলে নির্দিষ্ট কারন দর্শানোর পর হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারবেন। কারণ দর্শাতে না পারলে ঐ শিক্ষককে হাজিরা খাতায় অনুপস্থতি দেখানো হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা যদি দেরিতে স্কুলে আসে এবং স্কুল চলাকালীন সময়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বাহিরে যদি কোন দোকানে আড্ডা দেয় বা ঘোরাঘুরি করে তাহলে তাদের স্কুল গেটে দাঁড়িয়ে রেখে অভিভাবককে ডেকে আনার পর বিষয়টি ঐ ছাত্রের অভিভাবককে জানানোর পরে ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।

লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকা বিষয়ে আব্দুল মজিদ বলেন, প্রতিদিন আমি সকাল ৯টায় স্কুলের মেইন গেটের সামনে দাঁড়ায় এবং বিকেল ৪টায় বাড়িতে যাই। সকাল ১০,১৫ মিনিটের পর কোন ছাত্র-ছাত্রী কিংবা কোন শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুলে আসলে আমি তাদের কাছে দেরিতে স্কুলে আসার নির্দিষ্ট কারণ জানার পর ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়। আমি যতদিন এই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য থাকব স্কুলের নিয়ম-কানুন সকলকে যথাযথ ভাবে পালন করতে হবে এর কোন ব্যতিক্রম হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে শিবপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস.এম আফজাল হোসেন বলেন, আমার স্কুলে নিয়মিত পাঠদান করি। এছাড়া অভিভাবক সদস্য আব্দুল মজিদের কর্মকান্ডে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক ও এলাকাবাসী খুব খুশি।

শিবপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বেলাল হোসেন বলেন, আমারা এই স্কুলে ম্যানেজিং কমিটিতে আসার আগে এই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ঠিকমতো স্কুলে আসতোনা ও ছাত্র-ছাত্রীদের ঠিকমতো পাঠদান করাতোনা। তাই স্কুলের শিক্ষার মান বৃদ্ধিসহ বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিাকাদের ঠিক সময় মতো স্কুলে উপস্থিত করার জন্য আব্দুল মজিদের এই উদ্যেগকে আমার সমর্থন করি। বর্তমানে আব্দুল মজিদের জন্য স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ অনেক ফিরে এসেছে।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর