জয়পুরহাটে নদী খননকালে সেতু ভেঙে জনদুর্ভোগ চরমে
সময়: 7:53 pm - March 31, 2021 | | পঠিত হয়েছে: 97 বার
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে তুলশীগঙ্গা নদী খননের সময় ব্রিজের তলদেশের অতিরিক্ত মাটি তোলায় ব্রিজটির পিলার ভেঙে পরেছে। এতে পুরো ব্রিজে ফাটল দেখা দিলে তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যায়। এতে জেলার পাঁচবিবি-গাইবান্ধা সড়কে সব ধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের দাবি করেছেন জনদুর্ভোগের শিকার হওয়া হাজার হাজার মানুষ।
শুকনো মৌসুমে পানি ধরে রাখতে ও বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে খনন কাজ চলছে তুলশীগঙ্গা নদীতে। খনন চলাকালে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি-গাইবান্ধা সড়কের ফিচকার ঘাট ব্রিজের তলদেশ থেকে অতিরিক্ত মাটি তোলায় ভেঙে যায় ব্রিজটির পিলার। ফলে ব্রিজটিতে ফাটল দেখা দিলে তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায় এবং জেলার সঙ্গে গাইবান্ধা, রংপুর, বগুড়া, ঢাকার পরিবহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে।
এ অবস্থায় বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা করা হলেও তা দুর্বল হওয়ায় সামান্য ভোগান্তিও কমেনি জনসাধারনের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি, দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতাকে দায়ি করে এ অবস্থার পরিত্রাণ চান ভুক্তভোগীরা।
ফিচকারঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক আজাদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড তুলশী গঙ্গা নদী খনন করে। তখন আমরা বলেছিলাম, নদীর পাড়ে মাদ্রাসা ও মসজিদ আছে, ব্রিজের তলদেশের মাটি যেন খনন না করা হয়। এলাকাবাসী মিলে অনুরোধও করেছিলাম। কিন্তু কর্মকর্তারা আমাদের কথায় পাত্তাই দেননি।
এলাকার শিক্ষক আহসান হাবিব, ব্যবসায়ী মোকলেসার রহমান, ট্রাক ড্রাইভার মঞ্জুরুল ইসলাম, বাস চালক শাহিন আলম ও ভ্যান চালক লিটনসহ যানবাহন চালকরা বলেন, এই পথ দিয়ে যাতায়াত করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ২০/২৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে জয়পুরহাট জেলা শহর হয়ে তারা তাদের যানবাহন নিয়ে চলাচল করছেন। এতে খরচ ও সময় বেশি ব্যয় হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার কারণে এমন জনদুর্ভোগের অভিযোগ উঠলেও ভিন্ন কথা বললেন জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাদেুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রকল্পের স্বার্থে নদীর ব্রিজের আগে একটা রিং বার দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রবল পানির স্রোতে সেই রিং বার ভেঙে ব্রিজের পিলারে আঘাত করে। পুরাতন ব্রিজের পিলারগুলো ইটের গাঁথুনী। তাই পানির স্রোতে পিলারগুলো ভেঙে যায়। এতে করে ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি। ব্রিজের পাশ দিয়ে ডাইভারশন করে দিয়েছি। আগামী বর্ষার আগে একটি কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করে দিব।
এমন দুর্ভোগের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষই দায়ী বলে ইঙ্গিত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ও পরিস্থিতি বিবেচনায় শিগগির দুর্ভোগ লাঘবের আশ্বাস দিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) জয়পুরহাট কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জয়পুরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আলাউদ্দিন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে তুলশীগঙ্গা নদী খননের কাজ হচ্ছিল। এতে করে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি-গাইবান্ধার কামদিয়া সড়কের ফিচকা ঘাট ব্রিজটির পিলার ভেঙে গিয়ে তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরেছে। যেকোন মুহূর্তে ব্রিজটি ভেঙে পরতে পারে। এ ব্যাপারে যতো দ্রুত সম্ভব ব্রিজটি নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হবে। সেই সঙ্গে গাফিলতির জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ব্রিজটি অকেজো হওয়ার কারণে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে গেছে। পাশাপশি এখানকার কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে না পারায় ক্ষতির মুখে আছেন এ অঞ্চলের হাজার হাজার বাসিন্দা। এ অবস্থার উত্তরণে দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী।