রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে গ্রেড টপকে ছয় কর্মকর্তার পদোন্নতি

সময়: 8:39 pm - March 5, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 163 বার

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে ‘অনিয়ম’ করে ছয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। সপ্তম গ্রেডের কর্মকর্তাকে ছয় গ্রেডে না রেখেই পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি দিয়েছেন শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান। স্বজনপ্রীতি ও উৎকোচের জনই এমন হয়েছে বলে অনেকেই সন্দেহ করছে।

 

বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযানে এই অনিয়ম ধরা পড়েছে। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল শিক্ষাবোর্ডে এ অভিযান চালায়।

 

 

 

পদোন্নতি পাওয়া ছয় কর্মকর্তা হলেন, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (জেএসসি) ফরিদ হাসান, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (স্ক্রীপ্ট) রুবী, উপ-সচিব (ভান্ডার) দুরুল হোদা, উপ-সচিব (প্রটোকল) খোরশেদ আলম, উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক (রেজি.) মো. নুরুজ্জামান ও লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন ডকুমেন্টশন অফিসার সুলতানা শামীমা আক্তার।

 

 

 

তারা প্রত্যেকে সপ্তম গ্রেডের কর্মকর্তা ছিলেন। ষষ্ঠ গ্রেড টপকে সরাসরি তাদের পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি দেয়া হয়। বোর্ডসভা অনুষ্ঠিত না হলেও গত ১৫ জানুয়ারি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মকবুল হোসেন এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের পদোন্নতির আদেশ জারি করেন। এরপর গত ২৬ জানুয়ারি সই করার জন্য বোর্ডের সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে বেতনশীট উপস্থাপন করা হলে পদোন্নতির বিষয়টি জানাজানি হয়। বিধিসম্মতভাবে পদোন্নতি হয়নি বলে তিনি বেতনশীটে সই করেননি।

 

 

 

এতে বোর্ডের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বন্ধ হয়ে থাকে। পরে গত ৫ ফেব্রুয়ারি চেয়ারম্যান ড. মকবুল হোসেন নিজের ক্ষমতাবলে বেতন প্রদান করেন। এরই মধ্যে এই পদোন্নতির বিষয়ে দুদকের হটলাইন ১০৬-এ একটি অভিযোগ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার শিক্ষাবোর্ডে অভিযান চালায় দুদক।

 

এই অভিযানের সময় চেয়ারম্যান ড. মকবুল হোসেন বোর্ডে ছিলেন না। তিনি বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেন দুদক কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তাকে না জানিয়েই ছয় কর্মকর্তার পদোন্নতি দেয়া হয়েছিল। পদোন্নতি দেয়া পদে বেতন-ভাতার ফাইল তার কাছে উপস্থাপন করা হলে তিনি পদোন্নতির বিষয়টি জানতে পারেন।

 

 

 

জানতে চাইলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তারা অভিযোগ পান যে বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মকবুল হোসেন কোন প্রকার বোর্ডসভা না করেই ছয়জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেন। এর বিনিময়ে চেয়ারম্যান প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা করে ঘুষ গ্রহণ করেন বলেও অভিযোগ পান। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতেই শিক্ষাবোর্ডে এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়।

 

দুদক জানিয়েছে, সরেজমিনে পরিদর্শন ও রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে পদোন্নতিতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। দুদক দেখেছে, বিদ্যমান জনবল কাঠামোতে কোন শূন্য পদ না থাকলেও মনগড়া পদ সৃস্টি করে ছয় কর্মকর্তাকে ষষ্ঠ গ্রেড সুপারসিড করে সপ্তম গ্রেড থেকে সরাসরি পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। এরপর সেখান থেকে যে নির্দেশনা আসবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

অনিয়মের বিষয়ে কানাডায় অবস্থানরত শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান ড. মকবুল হোসেনের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দুদক তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। অভিযানের বিষয়েও কিছু জানেন না। পদোন্নতির বিষয়ে তিনি বলেন, ১৯৬১ সালের অধ্যাদেশে বোর্ড চেয়ারম্যানের যে ক্ষমতা রয়েছে তা দিয়ে এই পদোন্নতি তিনি দিতেই পারেন। এক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়নি। তিনি শতভাগ সততার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর