ঈদকে ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কামারশালাগুলোতে নেই তেমন ব্যস্ততা
ঈদুল আজহা আসতে আর বেশী দিন বাকি নেই। তবে, ঈদকে ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কামারশালাগুলোতে নেই তেমন ব্যস্ততা। যেখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলতো তপ্ত লোহাকে পিটিয়ে দা, ছুটি, কোপতা তৈরির কাজ। বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সরকারের কঠোর লকডাউনের মধ্যে ক্রেতা পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন কামাররা। তাই এবারও করোনার কারণে সেরকম ব্যস্ততা নেই।
জেলা শহরের কামারশালা ঘুরে দেখা যায়, আগের মতো ব্যস্ততা নেই কামারদের, লকডাউনে কয়েকটি বন্ধ। এক মাস আগে থেকে কামারশালায় হাতিয়ার বাননোরা কাজ শুরু হতো। আর পাশে দিয়ে গেলেই শোনা যেত ঠুকঠাক আর লোহা গরম করা ভাতির শব্দ। এবারের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। শহরের প্রাণ কেন্দ্র সিসিডিবিমোড়ে একটি কামার শালায় কথা হয়, মালিক শ্রী সুনিল কর্মকারের সাথে। তিনি জানালেন, এ বছরও বাবসার সময়টাতে লকডাউন।
ঈদ আসলেই তাদের কাজের চাপ কয়েকগুন বেড়ে যায়, কিন্তু এবার তাদের সে পরিমাণ কাজ নেই। ঈদের এক মাস আগে থেকেই দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ নানা হাতিয়ার তৈরি করা শুরু হতো। সেই সাথে কামারশালার সামনে বিক্রি করার জন্য সাজানো থাকতো কোরবানি করার বিভিন্ন সরঞ্জামাদি আর বিক্রি শুরু হতো এক সপ্তাহ আগে থেকে। এ বছর তেমন ক্রেতাও নেই কাজ পাওয়া যায়নি। লকডাউনের কারণে ক্রেতারা আসতে পারছে না। কাজ অর্ধেকে নেমে এসেছে, কোনরকমে চলছে তার কামারশালা।
গত বছর এসময় কাজ শেষ করার ফুরসত ছিল না। বাড়তি চাপ সামাল দিতে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োগ করতে হতো। কিন্তু করোনার কারণে কাজ একেবারে কমে গেছে। তার সহযোগী হিসেবে মিজানুর রহমান নামে একজন কাজ করছে বলে জানালেন। কোরবানির আগের মাস থেকেই ব্যবসা চাঙা হতো। কিন্তু এ বছর তাদের আশানুরুপ কাজ নেই। সামান্য পরিমাণে কাজ পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, জিনিসপত্রের দামও বেড়ে গেছে, তৈরি করতে সাহস পাওয়া যাচ্ছে না। ভাতি ব্যবহারে কয়লা মজুদ করে রাখতে হতো, এবার সেটি নেই। দা ও কোপতা বানাতে ৪শ, বড় ছুরি ৬শ টাকা, ছিলা ছুরি ১শ ৫০ টাকা এবং শান দেয়ার মজুরী প্রকার ভেদে ৮০ ও ১২০ টাকা নেয়া হচ্ছে। লকডাউন শিথিল হলে বেচাকেনা শুরু হতে পারে।
কামারশালায় আসা নাহিদুল হক নামে এক ক্রেতা জানান, কোরবানির আগে কামারশালায় ভীড় থাকে। লকডাউনের কারণে সে তুলনায় ভীড় নেই। কাজেরও তেমন ব্যস্ততা নেই। তাই এ সুযোগে লোহা কিনে নিয়ে চাহিদানুযায়ী চাপাতি বানিয়ে নেয়া হলো।
রাজশাহী বার্তা/admin