করোনায় চরম উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে রাজশাহী
রাজশাহীতে আর কাউকে ঢুকতে বা বেরোতে দেওয়া হবে না এবং অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বরতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। সোমবার প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক থেকে সন্ধ্যার পর রিকশা, মোটরসাইকেলসহ সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
ফলে রাজশাহীর সঙ্গে সব জেলার যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে গেছে। রাজশাহীতে ঢোকার যতগুলো পথ আছে সবখানে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোষ্ট। রাজশাহী মহানগর এলাকায় করোনাভাইরাসের চরম উদ্বেগজনক পরিস্থিতি উল্লেখ করে পরবর্তি নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব বন্ধ রাখতে আদেশ জারি করেছে আরএমপি।
সোমবার বিকেলে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে নগরবাসীর জন্য নির্দেশনা ও নিষেধাজ্ঞা জারি করে। গনমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় মহানগর এলাকা করোনাভাইরাস এর বর্তমান চরম উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। আরএমপি এলাকায় এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার রাজশাহী মহানগরবাসীকে তিন দফা নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করেন।
এগুলো হলো- প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টার পর হতে সকাল ছয়টা পর্যন্ত ঔষধের দোকান ব্যতীত সকল প্রকার দোকান বন্ধ থাকবে। রাজশাহী মহানগরের বাহির হতে কোন প্রকার যানবাহন বা ব্যক্তি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া মহানগরে প্রবেশ করতে পারবেন না বা বাহির হতে পারবেন না। মহানগরের কোন বাসিন্দা জরুরী প্রয়োজন ব্যতিত বাড়ির বাইরে বের হবেন না এবং অযথা কোন যানবাহন রাস্তায় চলাচল করা যাবে না।
তবে জরুরী সেবা, চিকিৎসা সেবা, ভোগ্য পণ্য, কৃষি পণ্য, রপ্তানিপণ্য ইত্যাদি পরিবহনকার্যে নিয়োজিত ব্যক্তি ও যানবাহন এ নির্দেশের আওতামুক্ত থাকবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে এবং নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এর আগে রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সকাল ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবির খন্দকারের সভাপতিত্বে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলা নিয়ে আলোচনার ৩ নম্বর বিষয়ে রাজশাহীজুড়ে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত হয়। এর পর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য নিদের্শনা দেয়া হয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি একেএম হাফিজ আক্তার, রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. জামিলুর রহমান, রামেক অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুজায়েত, কর্নেল কামরুল ইসলাম, এনএসআইয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ জহীর উদ্দদিন, জেলা প্রশাসক মোঃ হামিদুল হক।
মতবিনিময় সভা হতে করোনা বিস্তার রোধে রোগীদের হোম বেজড কোয়ারেন্টিনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করে রাজশাহী মহানগরসহ রাজশাহী জেলা এলাকাকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সোমবার থেকে লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সভায় মৃতদেহ দাফন ও বহন করার জন্য ব্যাগ সরবরাহ করার বিষয়েও আলোচনা হয়।
এছাড়া সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষনের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার জনাব জাকির হোসেন, অতিরিক্ত ডিআইজি জনাব মিরাজ উদ্দিন আহমেদ, সিটি কর্পোরেশনের সচিব আবু হায়াত মোঃ রহমতউল্লাহ, উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ সাজিদ হোসেন এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারি পরিচালক ডা. আনোয়ারুল কবির।
রাজশাহী বার্তা/admin