করোনার থাবায় পাবনায় হলো না হাজারে বছরের ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা

সময়: 7:30 pm - April 14, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 194 বার

করোনাভাইরাসের থাবায় পাবনার চাটমোহর উপজেলার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা হয়নি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে এই প্রথম পূজা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় মন্দির কমিটি।

অথচ প্রতিবছর চৈত্রসংক্রান্তির একদিন আগে শিব মূর্তি স্থাপনের মধ্যে দিয়ে শুরু হতো পূজার আনুষ্ঠানিকতা। চলতো একনাগাড়ে তিন দিন। মন্দির প্রাঙ্গণে বসতো বিশাল মেলা। দেশ-বিদেশের পূণ্যার্থীদের পদচারণয় মুখর হয়ে উঠত মন্দির প্রাঙ্গণ। সেখানে এখন শুধুই নীরবতা।

মঙ্গলবার দুপুরে বড়াল নদের পাড়ে বোঁথড় চড়কবাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মন্দিরে মহাদেবের মূর্তি স্থাপন করা হয়নি। ঢাক-ঢোল-কাশরের বাজনাও নেই। নেই ভরণ নাচ বা কালী নাচ। ছাড়া হয়নি হাজরাও। ছিল না দেশ বিদেশের পূণ্যার্থীদের ভিড়। মন্দিরের পাশের দিঘী থেকে তোলা হয়নি চড়ক গাছ। বসেনি মেলার কোনো পসরা।

কোলাহল পূর্ণ মন্দির এখন শুধুই নিষ্প্রাণ। তবে শুধুমাত্র ঘট পূজায় ব্যস্ত ছিলেন একজন পুরোহিত। মন্দিরের পাশে গাছের নিচে বিক্ষিপ্তভাবে বসে আছেন কয়েকজন ভক্ত অনুরাগী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস।

মন্দিরে পূজা দিতে না পারা দোলবেদীতলার রনি রায়, সুমিত্রা কুণ্ডু, বাসন্তী কুণ্ডুসহ অনেকেই বলেন, এর আগে কোনো দিন পূজা বন্ধ হয়নি। করোনাভাইরাস আমাদের অনেক শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। তবে করোনা থেকে যেন আমাদের দেশসহ পৃথিবীর সব মানুষ মুক্তি পায় সেজন্য ঘরে বসেই বাবা মহাদেবের কাছে প্রার্থনা করেছি।

বোঁথড় মহাদেব মন্দির কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজীব কুমার বিশ্বাস রাজু জানান, বাবা-কাকার মুখে শুনেছি বিভিন্ন সময় দেশে অনেক মহামারী হলেও এই পূজা কখনো বন্ধ হয়নি। তবে ঘট পূজার মাধ্যমে পূজা শেষ করেছি।

সাধারণ সম্পাদক কিংকর সাহা জানান, চৈত্র সংক্রান্তির এক সপ্তাহ আগে ঢাকের তালে ‘পাঠ’ বাড়ি বাড়ি নিয়ে যাবার আনুষ্ঠানিকতা থাকলেও এ বছর সেটি বন্ধ রাখা হয়েছিল। অনেক পূণ্যার্থীর মাঝে মনঃকষ্ট থাকলেও করোনার মহাসংকট থেকে মুক্তির জন্য সবাইকে প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর