বাঘায় পদ্মার চরে পিঁয়াজের বাম্পার ফলন!

সময়: 4:40 pm - February 1, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 190 বার

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে পিঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। পিঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত চাষীরা। পিঁয়াজ উত্তোলন করতে শত শত শ্রমিক কাজ করছেন। বর্তমানে দাম পেয়ে খুশি চাষীরা।

শনিবার উপজেলার আড়ানী হাটে খুরচা হিসাবে প্রতিকেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

পলাশি-ফতেপুর চরের এনাত হোসেন জানান, বিভিন্ন এনজিও ও মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পিঁয়াজ আবাদ করেছি। পিঁয়াজ তুলে তাদের টাকা পরিশোধ করব।

তিনি জানান, বাজারে প্রতি মণ পিঁয়াজ পাইকারী হিসাবে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকায়। কিন্তু প্রতি মণ পিঁয়াজের গড় উৎপাদন খরচ হয়েছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। তারপরও খরচ বাদ দিয়ে উৎপাদিত পিঁয়াজ বিক্রি করে মণপ্রতি ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা ঘরে আসছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পিঁয়াজ আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৮৮০ হেক্টর জমিতে পিঁয়াজ চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮০০ হেক্টর।

চকরাজাপুর চরের আমিন সিকদার জানান, চলতি মৌসুমে যারা পিঁয়াজ আবাদ করেছে, ইতিমধ্যে তারা বিক্রি করতে শুরু করেছে। এ বছর ১০ বিঘা জমিতে পিঁয়াজ উৎপাদন খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে ১ বিঘা জমির আগাম জাতের পেঁয়াজ উঠান হয়েছে। দাম ভালো পেয়েছি।

টিকটিকিপাড়া চরের আঞ্জু মোল্লা জানান, বর্তমানে যে দাম আছে সেটা না থাকলে পিঁয়াজ চাষ করে লাভবান হওয়া মুশকিল হয়ে পড়বে। কারণ বীজ ও অন্যান্য দ্রব্য সার কিটনাশকের দাম আগের চেয়ে বেশি।

পলাশি-ফতেপুর চরের মহিলা শ্রমিক জয়গন বেগম, পারভীন আক্তার, নাসিমা বেগম জানান, চলতি মৌসুমে আগাম জাতের পিঁয়াজ উৎপাদন করে চরের অধিকাংশ চাষী লাভবান হয়েছেন। পাশাপাশি আমরা কাজ করে টাকা রোজগার করে সংসার চালাতে সুবিধা হচ্ছে। আগাম জাতের পিঁয়াজ চাষে শ্রমিকরা কাজ করে সঙ্গে সঙ্গে মুজুরি পেয়ে খুশি।

চকরাজাপুর চরের পিঁয়াজ চাষী বাবলু দেওয়ান জানান, দাম ভালো ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ১৬ বিঘা জমিতে পিঁয়াজ চাষ করেছি। এবার বাম্পার ফলন হয়েছে।

গড়গড়ি ইউনিয়নের চরের স্থানীয় সাবেক মেম্বার রেজাউল করিম জানান, গত বছর ন্যায্য মূল্য না পেয়ে এ বছর অনেকে পিঁয়াজ চাষ কমিয়ে দিয়েছিলাম। গতবারের কথা না ভেবে এবার যারা বেশি পিঁয়াজ চাষ করে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

বাঘা হাটের পিঁয়াজ ব্যবসায়ী নজমুল হোসেন জানান, মোকামে পিঁয়াজের যথেষ্ট চাহিদা আছে। পিঁয়াজ নিয়ে কৃষকদের কোনো চিন্তা নেই। সরকার যদি এলসি ও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করে তাহলে চাহিদা ও দাম থাকবে।

আড়ানী হাটের ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন জানান, ঢ্যামনা ও চারা পিঁয়াজ নামে দুই ধরনের পিঁয়াজ এলাকায় চাষ হয়ে থাকে। চারা পিঁয়াজের দীর্ঘ সময় মজুদ রাখা যায়। এই পিঁয়াজ বেশি আবাদ হয় উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে। এই ধরনের পিঁয়াজের বাজার থাকলে আগামীতে উৎপাদনে মনোযোগী হবেন চরাঞ্চলের কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানান, উপজেলা সর্বত্র কম-বেশি পিঁয়াজের চাষ হয়েছে। উপজেলার দুটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে যে পরিমাণ পিঁয়াজ চাষ হয়েছে তার চেয়ে বেশি চাষ হয়েছে শুধু পদ্মার চরাঞ্চলে। গত বছরের চেয়ে এ বছর ভালো দাম পাচ্ছে কৃষকরা।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর