পদ্মার গর্ভে বাঘার ৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সময়: 11:17 pm - July 3, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 159 বার

রাজশাহীর বাঘায় ৮ বছরের ব্যবধানে ৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া কয়েকটি মসজিদ ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি, গাছপালা পদ্মাগর্ভে চলে গেছে। ৫ শতাধিক বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

কিন্তু অন্য চারটি প্রতিষ্ঠান টেন্ডার দেয়ারও সুযোগ পায়নি। সেগুলো পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর মধ্যে ২০১২ সালে পূর্ব চকরাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০১৬ সালে চকরাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০১৮ সালে চকরাজাপুর উচ্চবিদ্যালয়, ২০১৯ সালে চৌমাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে এই বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চৌমাদিয়া বিদ্যালয় বাদে সবগুলোর ভবন পাকা ছিল।

এ দিকে ৮ বছরের ব্যবধানে হাজার হাজার একর আমবাগান, ফসলি জমি পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ৫ শতাধিক পরিবার অন্যত্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পাকুড়িয়া গ্রামের আশরাফুদৌলা বলেন, আমরা চরের মানুষ। নদীভাঙনের কারণে উপরে উঠে এসেছি। কিন্তু দুই বছরের ব্যবধানে আমার ৩০ বিঘা জমি পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে আমরা নিঃশ্ব হয়ে গেছি।

চকরাজাপুর চরের আনোয়ার হোসেন শিকদার বলেন, গত বছরের বন্যায় আমার ২৫ বিঘা এবার কয় বিঘা পদ্মাগর্ভে চলে যাবে বলতে পারছি না। তবে যে হারে পদ্মা ভাঙতে শুরু করেছে, এতে আমার আর কোনো জমি থাকবে কিনা জানি না।

কালিদাসখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেলিনা পারভীন বলেন, বিদ্যালয়টি ভাঙন থেকে ৩০ মিটার দূরে অবস্থান করছিল। এ সময় কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলে তা উন্মুক্ত টেন্ডার দিয়ে বিক্রি করা হয়। তবে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো টেন্ডার দেয়ার সুযোগ না পাওয়ায় পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফুর রহমান বলেন, চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়টির পাকা ভবন পদ্মাগর্ভে চলে গেলেও অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়ে সেটা চালু রাখা হয়েছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার ও চৌমাদিয়া চরের আবদুর রহমান বলেন, চৌমাদিয়া বিদ্যালয়টি ১৯৫৫ সালে চরের সিরাজ মণ্ডল ও ভানু বেপারী স্থাপন করেন। বিদ্যালয়টি নদীভাঙনের কারণে ৪বার স্থানান্তর করা হয়। এর মধ্যে চৌমাদিয়ায় চরে ১৭ বছর, তেমাদিয়ায় ১২ বছর, দিয়ারকাদিপুর ২৫ বছর, টিকটিকিপাড়ায় ১০ বছর যাবত পরিচালিত হয়। বিদ্যালয়ে ১৪১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। করোনার কারণে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবিএম সানোয়ার হোসেন বলেন, সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয় আমার নখদর্পণে রয়েছে। এর আগে পূর্ব চকরাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও এবার চরকালিদাসখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্মুক্তভাবে টেন্ডার দিয়ে ভবন বিক্রি করা হলেও অন্যগুলো রক্ষা করা যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, পদ্মার ভাঙনের বিষয়ে সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছি। এ ছাড়া চরের বিষয়ে সব সময় খোঁজ-খবর নেয়া হয়।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর