রাজশাহী ওয়াসা ভবন নির্মাণ শুরু জুলাইয়ে
গত ৩১ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর ২০১৯-২০ অর্থ বছরের ১৮ তম সভায় রাজশাহী ওয়াসা ভবন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয়। এ ভবন নির্মাণে ৬৫ কোটি ৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ অনুমোদন হয়েছে।
এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রাজশাহী ওয়াসার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ ভালো হবে এবং রাজশাহীবাসী সুষ্ঠুভাবে সেবা গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়াও এ ভবনটি ভবে দৃষ্টিনন্দনও।
প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়ায় রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতান আব্দুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী ও সিনিয়র সচিবসহ রাজশাহীর নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, প্রকল্পটির নাম ‘রাজশাহী ওয়াসা ভবন নির্মাণ প্রকল্প’। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি ৯ লাখ ৩২ হাজার। প্রস্তাবিত বাস্তবায়নকাল জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২৩। আশা করছি জুলাইয়ে এ ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারবো।
জানা গেছে, ১৯৩৭ সালে তৎকালীন ভারতের কলকাতার পূর্ত মন্ত্রনালয়ের পানি সরবরাহ শাখার উদ্যোগে রাজশাহী পৌরসভার অধিনে প্রথম রাজশাহী শহরে পানি সরবরাহ ব্যাবস্থা চালু হয়। এই সরবরাহ ব্যাবস্থায় নিরবিচ্ছিন্ন পানি সরবরাহের লক্ষ্যে পুঠিয়ার রানী হেমন্ত কুমারীর ২.৫ লক্ষ টাকা দান সহায়তায় ১৯৩৭ সালে ৪৭০ গ্যালন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন ১০০টি খাড়া জলাধার রাস্তার পাশে স্থাপিত হয়। যাহা স্থানীয় ভাবে “ঢোপ কল” নামে পরিচিতি পায়। এই ঢোপ কলগুলো কেন্দ্রীয় ভাবে নির্মিত হেতম খাঁ অবস্থিত আয়রণ ও শক্ত দ্রব্যাদি দুরিকরণ শোধনাগারের সাথে যুক্ত ছিল এবং একটি ওভারহেড সার্ভিস জলাধার স্থাপিত ছিল। হেতম খাঁ অবস্থিত এই পানি শৌধনাগারটির ক্ষমতা ছিল প্রতিদিন ৭০০ ঘন মিটার। ১৯৬৫ সালে এই পানি শোধনাগারটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয় ।
১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ও নেদারল্যান্ড সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার রাজশাহী পানি সরবরাহ মহা পরিকল্পনা নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। এই প্রকল্পের অধিনে ৪টি ভূ-গর্ভস্থ পানি শোধনাগার ৩০টি গভীর নলকুপ ২৩১.৪৮ কি.মি. পাইপ নেটওয়ার্ক জালের মত ৯৩.৩৪ বর্গ কি.মি অঞ্চলে স্থাপন করা হয়।
২০০০ সালে এই ব্যাবস্থায় ৭ লক্ষ জনসংখ্যার পানির চাহিদা পূরনের জন্য নকশা করা হয়। পানি ব্যাবস্থাপনার শৃঙ্খলা আনয়নের লক্ষে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন উচু জলাধার নির্মান করে। ডাচ সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পের সিমাবদ্ধতার কারণে ইহা পৌরবাসীর পানির চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। প্রায় ১০ বছর পরে সিটি কর্পোরেশন স্ব-উদ্দ্যোগে কিছু গভীর নলকুপ ও পাইপ লাইন স্থাপন করে কিন্তু ইহাও দ্রুত বর্ধন চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয় ।
পানি সরবরাহ ও পয়:নিষ্কাশন শাখা ২০১০ সালের ১লা, আগাষ্ট রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন হতে আলাদা হয়ে যায় এবং রাজশাহী ওয়াশা নামে রাজশাহী পৌর এলাকার পানি সরবরাহ ও পয়:নিষ্কাশনের একক কতৃপক্ষ হিসাবে একটি সতন্ত্র প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। রাজশাহী ওয়াশা ২০১১ সালের ১০ই মার্চ শাল বাগানে অবস্থিত পানি শোধনাগার হইতে কার্যক্রম শুরু করে এবং অদ্যবদি এটাই রাজশাহী ওয়াশার প্রধান কার্যালয় হিসাবে পরিচালিত হচ্ছে।
রাজশাহী বার্তা/admin