চোখ সাজাতে সতর্কতা নিন
চোখ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এর সাজও চোখকে দেয় অন্যতর মাত্রা। কিন্তু চোখকে সাজাতে গিয়ে ঘটতে পারে বিপত্তি। এজন্য সতর্কতা যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন চোখসজ্জার মানসম্মত উপকরণ। সাধারণত সব প্রসাধনেই কমবেশি রাসায়নিক পদার্থ থাকে। যে কারণে চোখে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বা প্রদাহ হতে পারে। চোখ সাজাতে গিয়ে চোখের কনজাংটিভায় সহজেই হতে পারে এমন সমস্যা। অনেক সময় অসতর্কতায় হিতে বিপরীতও হতে পারে। তাই চোখ সাজান চোখের অনিষ্ট না করে।
সাধারণত সব প্রসাধনেই কমবেশি রাসায়নিক পদার্থ থাকে। যে কারণে চোখে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বা প্রদাহ হতে পারে। চোখ সাজাতে গিয়ে চোখের কনজাংটিভায় সহজেই হতে পারে এমন সমস্যা।
চোখের মেকআপে ঝুঁকির কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ, সৌন্দর্যের জন্য চোখসজ্জায় প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহার করা হলেও সেসব চোখের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই ভালো নয়। বৈজ্ঞানিক দিক থেকে চিন্তা করলে প্রসাধনসামগ্রীর ঝুঁকিপূর্ণ দিকগুলো সহজেই বোঝাযায়।
আইশ্যাডো : পাউডার আইশ্যাডো দেওয়ার ১০ মিনিট আগে প্রাইমার লাগাতে হবে। প্রাইমার না থাকলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। চোখের সাজে একটি তরল ভিত বা বেজ তৈরি করা প্রয়োজন। গুঁড়া পাউডার বসবে সহজে। এতে চোখে ঢুকে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে।
ফোম ব্রাশ, আইশ্যাডো ব্রাশ বা হাত দিয়ে ব্লেন্ড করে আইশ্যাডো ব্যবহার করুন। যেভাবেই আইশ্যাডো দিন না কেন, আগে আইশ্যাডোর বাড়তি গুঁড়া ফেলে দিন। নইলে এগুলো চোখে চলে যেতে পারে। হাত দিয়েই হোক বা ব্রাশ দিয়ে—আইশ্যাডো অবশ্যই ভালোভাবে বসিয়ে দিতে হবে।
কাজল, লাইনার আর মাসকারা : আইলাইনার চোখে দেওয়ার আগেই আঙুলের ত্বকে দিয়ে দেখুন। চুলকানি বা লালচে ভাব হলে সেটি আর চোখে দেবেন না। অনিয়মিত ব্যবহারের ফলে আইলাইনার বা মাসকারা পানি ছেড়ে দিতে পারে। এখানে জীবাণুর সংক্রমণও হতে পারে। এগুলো চোখে দেওয়ার আগে আঙুলে লাগিয়ে অপেক্ষা করে দেখুন, ঠিকভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে কি না। আঙুলে সঠিকভাবে না শুকালে তা চোখে দেবেন না।
কারও চোখ অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হলে এক টানে আইলাইনার দেওয়া একটু কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। চোখ থেকে পানি পড়ে, বারবার মুছতে গিয়েও সমস্যা হয়। আইলাইনার দেওয়ার সময় কোনার দিক থেকে শুরু না করাই ভালো। মাঝ বরাবর শুরু করে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যান। এরপর আবার গোড়ার প্রান্ত থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত।
আইলাইনারের সূক্ষ্ম তুলি ব্যবহার করুন। আইলাইনার কখনোই চোখের একবারে কাছের লাইনে (যেখানে কাজল দেওয়া হয়) দিতে নেই। চোখের ভেতরেও যেন লাইনার না লাগে। কাজল বা রঙিন পেনসিল ব্যবহারের সময় অবশ্যই খুব সতর্ক থাকতে হয়। চোখের নিচের অংশে কাজল বা রঙিন পেনসিল ব্যবহার করতে চাইলে আঙুল দিয়ে একটু টেনে নিয়ে সাবধানে ব্যবহার করুন। শেষ হয়ে গেলে সাবধানে ছেড়ে দিন। খুব ভালোমতো আকার করে নিন দেওয়ার আগেই। কাজল বা পেনসিলে যেন কাঠের গুঁড়া রয়ে না যায়।
আইলাইনারের সূক্ষ্ম তুলি ব্যবহার করুন। আইলাইনার কখনোই চোখের একবারে কাছের লাইনে (যেখানে কাজল দেওয়া হয়) দিতে নেই। চোখের ভেতরেও যেন লাইনার না লাগে।
মাসকারা খুব দ্রুততার সঙ্গে ব্যবহার করবেন না। সাবধানে ধীরে ধীরে ব্যবহার করুন, যাতে চোখে লেগে না যায়। ধাপে ধাপে লাগাতে হবে মাসকারা। একটি ধাপ শেষ হওয়ারপর শুকিয়ে গেলে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে।
কনট্যাক্ট লেন্স : চোখে কনট্যাক্ট লেন্স পরা ক্ষতিকরই বটে। এর ওপর মানহীন লেন্স কিনে বিপদের ভয় তো আছেই। তারপরও যদি নিতান্ত বাধ্য হয়ে কনট্যাক্ট লেন্স পরতেই হয়, তাহলে খেয়াল রাখুন কিছু বিষয়।
ভালো ব্র্যান্ডের আসল পণ্য কিনুন। যথানিয়মে সংরক্ষণ করুন। লেন্স পরার আগে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন। সাবধানে নিয়ম মেনে লেন্স লাগান। লেন্স খোলার সময়ও নিয়ম অনুসারে খুলুন। লেন্স একটানা পরে থাকা যাবে না। দু-তিন ঘণ্টা পর লেন্স খুলে নির্দিষ্ট দ্রবণে ভিজিয়ে রাখুন। প্রতিবারই পরিষ্কার করে লেন্স হোল্ডারে লেন্স রাখুন। তবে দ্রবণের মান ও মেয়াদ দেখে নিন।
আবার লেন্স পরতে চাইলে পছন্দমতো একই ধরনের অন্য লেন্স বা সম্পূর্ণ অন্য ধরনের কোনো লেন্স পরুন। একেবারেই আর কোনো উপায় না পেলে পরিষ্কার করা লেন্স জোড়া আবার পরতে পারেন, তবে এই লেন্স জোড়া তখনই পুনর্ব্যবহার না করা সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। কোনো লেন্স পরলেই যদি জ্বালাপোড়া, চুলকানি বা চোখ থেকে পানি পড়ার মতো সমস্যা শুরু হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই তা খুলে ফেলতে হবে। কিছুক্ষণ পর ভালো হয়ে যাবে, একটু অপেক্ষা করি—এমনটা ভেবে অপেক্ষা করা যাবে না।
রাজশাহী বার্তা/admin