জীবনসঙ্গীর প্রতারণার ধাক্কা সামলাবেন যেভাবে

সময়: 7:00 pm - October 7, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 93 বার

দাম্পত্য জীবনে প্রতারণা বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা। এ সময় আপনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারেন। নিতে পারেন অনেক ভুল সিদ্ধান্ত যা আপনার জীবনে আরো বড়ো বিপর্যয় ডেকে আনবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এ সময়ে করণীয়।

প্রতিযোগিতায় যাবেন না: আপনার সঙ্গী অন্য করো সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে বলে তার মানে এই নয় যে, আপনাকেও তাই করতে হবে। এই প্রতিযোগিতামূলক চিন্তা আপনার নতুন দাম্পত্য জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। প্রতিযোগিতার ফলে আপনার রাগ জীবিত থাকবে এবং আপনি জীবনে অগ্রসর হতে পারবেন না। আপনি কষ্টদায়ক এক গোলকধাঁধায় আটকে যাবেন এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়বেন। ব্যক্তিগত রেশারেশি আপনাকে প্রতিশোধপ্রবণ করে তুলবে। দিনশেষে আপনি কোনো ইতিবাচক ফল পাবেন না।

ভেঙে পড়বেন না: দীর্ঘদিনের কোনো সম্পর্কের যদি বিচ্ছেদ ঘটে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগতে পারে। এ সময় নিজেকে গৃহবন্দী করবেন না। ভাবুন, জীবনে আরো অনেক কিছু করার আছে। জীবন এখানেই শেষ নয়। এ সময় সারাদিন টিভিতে একই প্রোগ্রাম দেখা, কারো সঙ্গে মেলামেশা না করা খুবই ক্ষতিকারক। যদিও আপনার সঙ্গে যা ঘটেছে তা খুবই খারাপ, তারপরও নতুন করে জীবন শুরু করার জন্য এটি একটি অনন্য সুযোগ। আপনার জীবন আগের তুলনায় ভিন্নতর হলেও ভালো কিছু পাওয়ার আশায় আপনার এগিয়ে যাওয়া উচিত। আপনি নিজেকে পরিস্থিতির শিকার ভাবলে এক সময় অসহায় এবং দুর্বল হয়ে পড়বেন। তখন সবকিছুর জন্য আপনি নিজেকেই দায়ী ভাবতে শুরু করবেন। এর মানে হলো আপনার আত্মপ্রত্যয় নষ্ট হয়ে যাবে এবং আপনার দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হবে।

শিশুদের জড়াবেন না: আপনার দাম্পত্য জীবনের সমস্যা থেকে শিশুদের দূরে রাখুন। শিশুদের দাম্পত্য কলহের মধ্যে জড়িয়ে ফেললে তাদের ভেতর আপনাদের দুজনের মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়ার ধারণা জন্মাতে পারে। বরং ওদের বুঝিয়ে বলুন, এটা সাময়িক। আপনারা এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

তৃতীয় পক্ষকে জড়াবেন না: আপনাদের সম্পর্কের এই টানাপোড়েন নিয়ে অন্য কাউকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দেবেন না। আপনাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে নাকি হবে না, আপনি আপনার সঙ্গীর সঙ্গে থাকবেন কি থাকবেন না, তা সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী হওয়া উচিত। কেননা জীবন আপনার, আপনিই ভালো বুঝবেন- কি করা উচিত। আপনি আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে মতামত নিতে পারেন কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, এখানে সম্পর্ক ঠিক রাখা বা সম্পর্কে না থাকার মধ্যে কোনো লজ্জা নেই।

ঘটে যাওয়া ঘটনাকে অবহেলা করবেন না: সঙ্গীর প্রতারণা উপেক্ষা করে আপনি হয়তো সাময়িক প্রশান্তি লাভ করতে পারেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না। পরিস্থিতি মোকাবিলা না করে আপনি যদি তা থেকে দূরে পালাতে থাকেন সম্পর্ক আরো ঠুনকো হয়ে পড়বে। মনে কষ্ট চেপে সবসময় বিরক্ত হয়ে থাকা একসময় আরো ভয়াবহ রূপ নেবে। আপনার প্রশ্ন মন খুলে সঙ্গীকে জিজ্ঞেস করুন। আপনার সম্পর্ক পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, কেন আপনার সঙ্গী প্রতারণা করল তা আপনার জানা উচিত।

মানসিক চিকিৎসা: আপনার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর কোনো মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ উপকারী হতে পারে। কেননা এর ফলে আপনার চিন্তা আরো অগ্রসর হবে এবং আপনি দ্রুত এরকম পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। তাছাড়া আপনার মানসিক দুরবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি, ডাক্তারি পরামর্শ আপনার অনুভূতিগুলোকে সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। আপনি যদি সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান বেরিয়ে আসুন, কেননা সবকিছু স্বাভাবিক রাখার জন্য আপনি আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। গবেষকদের মতে, আপনার পরিস্থিতির জন্য লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। আপনার জীবনে আরো ভালো কিছু হয়তো অপেক্ষা করছে সেটা নিয়ে ভাবুন। আপনার সম্পর্কের টানাপোড়েনের ফলে শরীর এবং মন উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুতরাং এরকম পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নিজের খেয়াল রাখার কোনো বিকল্প নেই। খাওয়া, ঘুম, খেলাধুলা, আড্ডা সবকিছু ঠিক রাখুন। মন ভালো রাখার জন্য গান শুনুন, বই পড়ুন এবং সর্বোপরি নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন।

স্বাভাবিক হওয়ার জন্য তাড়াহুড়া করবেন না: একটি সম্পর্কে বিচ্ছেদের পর আবার স্বাভাবিক হয়ে ওঠা বেশ কঠিন। সে কারণে বেশি দুশ্চিন্তা না করে ধৈর্য রাখুন এবং নিজেকে সময় দিন। সময় সব সমস্যার সমাধান দিয়ে দেবে। নিজেকে চাপ দেবেন না কেননা এ ব্যাপারে কোনো বাধাধরা সময় নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। বেশি চিন্তাভাবনা না করে মনকে শান্ত করুন এবং সঠিক সময়ের অপেক্ষা করুন।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর