ঈশ্বরদীতে শিকলে বেঁধে শিশুকে মারধর, থুতু চাটালেন শিক্ষক!

সময়: 3:52 pm - October 10, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 118 বার

পাবনার ঈশ্বরদীতে দিন শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে মোবারক (১১) নামে শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষক বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের কদিমপাড়া বুড়া দেওয়ান মাজার সংলগ্ন নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের সময় শিশুটি পালিয়ে যাওয়ার পর ঘটনাটি ফাঁস হয়।

মারধর ছাড়া মোবারককে থুতু ফেলিয়ে চাটান ওই শিক্ষক। প্রায় প্রতিদিন তাকে মারধর করতেন তিনি। তাই মাদ্রাসা ছেড়ে সে পালিয়ে যেত। শুক্রবার রাতে ঈশ্বরদী থানায় এসব অভিযোগ জানান ওই শিক্ষার্থীর মা মূর্শিদা খাতুন।
ভুক্তভোগী মোবারক পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের বাঁচামরা গ্রামের নজরুল ইসলাম ও মূর্শিদা দম্পতির ছেলে।

পুলিশ জানায়,মাদ্রাসাটির নূরানী বিভাগের শিক্ষার্থী মোবারক সবে আমপারা শেষ করেছে। মাদ্রাসায় শিক্ষার নামে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে পালিয়ে দাশুড়িয়ায় খালার বাড়ি যায় সে। সেখান থেকে বুঝিয়ে তাকে বুধবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরত পাঠায় তার পরিবার।

মাদ্রাসায় যাওয়ার পর মোবারককে ৩ দিন লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান শিক্ষক। এছাড়া তাকে ৭ বার থুতু ফেলিয়ে চাটান তিনি। এদিন জুমার নামাজ আদায়ের সময় লাইন থেকে পালিয়ে যায় সে। শিকল বাঁধা অবস্থায় ওকে উদ্ধার করে এলাকার লোকজন। পরে তার বাবা-মাকে খবর দেন তারা।

মোবারকের পেছন দিকে কোমরের নীচে পা পর্যন্ত নির্মম আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।  এ ঘটনায় ইতিমধ্যে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল করিমকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি ছিলাম না, ছুটিতে গিয়েছিলাম। এসময় শিক্ষার্থীদের দেখভালের দায়িত্ব ছিল শিক্ষক পিয়ারুল ইসলামের ওপর। উনি এসব করে থাকতে পারেন।

তবে তা অস্বীকার করেছেন পিয়ারুল। তিনি বলেন, আমি মোবারককে বাঁধি নাই। তার সম্পর্কে চাচা মাদ্রাসার সিনিয়র ছাত্র ছাব্বির তাকে বেঁধে রেখেছিল। কিন্তু মারধরের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে কোনো কথা বলেননি এ শিক্ষক।

সম্প্রতি মাদ্রাসায় হাফেজ সমাপ্ত করেছেন ছাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, মোবারক একবার পালিয়ে গিয়েছিল। তাই তার দাদি তাকে বেঁধে রাখার কথা বলেছিলেন। তাই ওকে বেঁধে রাখা হয়। তবে শিক্ষক পিয়ারুলই শিশুটিকে বেদম মারধর করেছে বলে জানিয়েছেন ছাব্বির।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষকদের থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ মুহূর্তে সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

রাজশাহী বার্তা/Durul Haque

এই বিভাগের আরও খবর