অপরূপ সৌন্দর্য আর রহস্য ঘেরা গ্রাম ‘মালালা’র অজানা অধ্যায়

সময়: 4:16 pm - February 25, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 282 বার

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হিমাচল প্রদেশে কুল্লু ভ্যালির পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ভারতবর্ষের প্রাচীনতম গণতান্ত্রিক গ্রাম ‘মালালা’। গ্রামটিকে অনেকে ‘মালানা নালা’ নামেও ডেকে থাকেন। ঐতিহাসিকরা মালানাকে বিশ্বের প্রাচীনতম গণতান্ত্রিক গ্রাম হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দশ হাজার ফুট উচুতে গ্রামটি অবস্থিত হওয়ার পরেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রয়েছে এই গ্রামের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক। কুল্লু ভ্যালির মোট তিনটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী এই গ্রামটি দূর থেকে দেখলে মনে হতে পারে এক সু-দীর্ঘ সবুজ কোনো গ্রাম।

তিন পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত হওয়ার পরেও এই গ্রামে প্রবেশের সবচেয়ে সহজ রাস্তাটি হলো জারি নামক স্থান থেকে ট্যাক্সি করে যাওয়া। তবে আপনি চাইলেই এই গ্রামে প্রবেশ করতে পারবেন না। জারি দিয়ে প্রবেশের আগে স্থানীয় সেনাকর্তৃপক্ষকে আপনার আগমনের হেতু এবং পূর্ণাঙ্গ বৃত্তান্ত দিয়ে তবেই যেতে হবে। আপনার আগমনের কারণে সন্তুষ্ট না হলে আপনাকে যেতে দেয়া হবে না ওই গ্রামে। তাই মালানায় যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে কারণ ঠিক করেই যেতে হবে।

মালানাকে ধরা হয় বিশ্বের প্রাচীনতম গণতান্ত্রিক কাঠামোর গ্রাম। এর অবশ্য কারণও আছে। এই গ্রামের মানুষদের বিশ্বাস তারা মূলত গ্রীক বীর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বংশধর। সেই হিসেবে তাদের জীবনাচারণ থেকে শুরু করে সার্বিক কাঠামোই গড়ে উঠেছিল গ্রীক কাঠামো অনুসারে।

এর বাইরেও মালানার রয়েছে স্বতন্ত্র আরেক পরিচয়। মাদকদ্রব্যের মধ্যে বিশ্বে চরস খুবই বিখ্যাত। হিমালয়ের এই অঞ্চলে উৎপাদিত গাঁজা থেকে তৈরি করা চরস পৃথিবীবিখ্যাত। আর এই কারণে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক মানুষ এই গ্রামে ঘুরতে যাওয়ার চেষ্টা করে। মালানা গ্রামবাসীর মূল অর্থনৈতিক উৎসও এই মাদক ব্যবসা।

মালানা কি বিশ্বের প্রাচীনতম গণতান্ত্রিক গ্রাম?

গণতন্ত্রের আলোচনা আসলেই প্রাচীন নগর রাষ্ট্র গ্রিসের প্রসঙ্গ চলে আসে। প্রায় খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকে গ্রিসের রাজধানী এথেন্স ও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য শহরে যে রাজনৈতিক পদ্ধতি বিদ্যমান ছিল তা থেকেই গণতন্ত্রের উৎপত্তি।

স্বভাবতই আমরা যখন মালানা গ্রামকে ‘প্রাচীনতম গণতান্ত্রিক’ গ্রাম বলছি, তখন নিশ্চয়ই সেই প্রাচীন গ্রিসের সঙ্গে এর কোনো ঘনিষ্ঠ সংযোগ রয়েছে; আর তা হচ্ছে, এখানকার অধিবাসীরা মনে করেন তারা গ্রিক বীর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বংশধর।

মালানা গ্রামের দুর্গম পাহাড়ি প্রবেশপথ। ছবি: উইকিপিডিয়া

ঐতিহাসিকদের সূত্রানুসারে, তাদের এই দাবির পক্ষে-বিপক্ষে মতামত রয়েছে। পক্ষের দাবি অনুসারে, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট খ্রিস্টপূর্ব ৩২৬ অব্দে যখন ভারত অভিযানে আসেন তখন তার সাথে বিপুল সংখ্যক শ্বেত সৈন্য ছিল। তাদেরকে সাথে নিয়ে তিনি ভারতবর্ষে প্রায় ১৯ মাস অবস্থান করেন। কিন্তু যখন ভারত ত্যাগ করেন তখন আর সকল সৈন্যদের সাথে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেননি।

এমন একটি অংশকে তিনি হিমাচলের পাহাড় বেষ্টিত গ্রাম মালানায় বসবাস করার আদেশ দেন। সেসব প্রশিক্ষত সৈন্যরা যখন সেখানে বসবাস শুরু করে, তখন তারা তাদের মূল জন্মভূমি গ্রিসের আদলেই শাসন ব্যবস্থা প্রণয়ন করে। সেই ব্যবস্থাপনা এখন পর্যন্ত বজায় আছে। বিশিষ্ট গবেষক মেহেক চক্রবর্তী আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সাথে বা গ্রিকদের সঙ্গে মালানার অধিবাসীদের সংযোগের একটি ভারসাম্যপূর্ণ বর্ণনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, কথিত আছে, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সেনাবাহিনীর একটি অংশ ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে একটি বিচ্ছিন্ন গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারা ভারতের পাঞ্জাবে অবস্থিত পুরি রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে আহত হয়েছিলেন। সেসব সৈন্যদের দৈহিক গঠনের সাথে মালানার অধিবাসীদের মিল রয়েছে। পাশাপাশি সেসময়ের কিছু চিত্রকর্ম এখনো সংরক্ষিত রয়েছে।

যেমন একটি চিত্রকর্ম যুক্ত তরবারি সেখানকার একটি মন্দিরে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে এই জন্ম সম্বন্ধীয় সংযোগ ঐতিহাসিকদের দ্বারা স্বীকৃত নয়। এমনকি আমি সেখানকার অনেক অধিবাসীদের এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তারা সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেননি; অনেকেই জানেন না এই উপকথার উৎপত্তি কিভাবে হয়েছে।

সর্বোপরি, এই আইনসভার কারণেই মালানাদের গ্রিক সংযোগের দাবি সবচেয়ে জোরালো হয়ে ওঠে। যদি তাদের এই দাবি সঠিক হয়ে থাকে তবে মালানাই প্রাচীনতম গণতান্ত্রিক গ্রাম। তবে প্রাচীন গ্রিসে যেসব গণতান্ত্রিক এলাকা ছিল তা ‘নগর’ বা ‘নগর রাষ্ট্র’ আর মালানা হলো ‘গ্রাম’ অর্থাৎ বিশ্বের প্রাচীনতম গণতান্ত্রিক গ্রাম। আর সেজন্যই মালানার অধিবাসীরা তাদের গ্রামকে বলে থাকেন ‘হিমালয়ের এথেন্স’।

ভাষা

এই গ্রাম আজও পৃথিবী থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন জায়গা। নেই কোনো উত্তম সড়ক বা পথ। পাহাড়ের দুর্গম পথ অতিক্রম করে পৌঁছাতে হয় সেখানে। রহস্যময় এই গ্রামের সঙ্গে ভারতের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর কোনো মিল নেই। এমনকি তাদের ব্যবহৃত ভাষা কানাসি বিশ্বের আর কোথাও প্রচলিত নেই।

মালানায় পাহাড়ের চূড়ায় একটি স্থানীয় বসতি। ছবি: হ্যালো ট্রাভেলস

কানাসি ভাষা চীন-তিব্বতি ভাষা পরিবারের অন্তর্গত, যা মালানা গ্রামে ব্যবহৃত হয়। ইন্দো-আর্য ভাষা পরিবার থেকে কানাসি ভাষা পুরোপুরি আলাদা। ফলে এই ভাষা অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি করে, যা প্রাগৈতিহাসিক যুগের সাথে সম্পর্কিত। এটি ভাষা বিজ্ঞানের যে ছক, তাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।

তবে এই ভাষা এখনো ভাষাবিদদের কাছে রহস্যময়। হিমাচল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ইনস্টিটিউট অফ ট্রাইবাল স্টাডিজের পরিচালক ভি কে ভয়েড বলেন,

তাদের ভাষার সাথে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের ভাষার কোনো সাথে মিল নেই। এমনকি কুল্লু রাজ দরবারে ব্যবহৃত ভাষার সাথেও এর কোনো মিল পাওয়া যায় না। এটি বিভিন্ন ভাষার মিশ্রণে সৃষ্ট ভাষা হতে পারে। তারা তাদের ভাষায় ব্যবহার করে এমন ৫০০-৬০০ শব্দ আমরা সংগ্রহ করে গবেষণা চালাচ্ছি। এর মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করছি, কোন শব্দটি কোন ভাষা থেকে নেওয়া হয়েছে। এটা সফলভাবে করতে পারলে বোঝা যাবে, তাদের ভাষার আদি উৎস কী।

আপনি তাদের অভ্যন্তরীণ কোনো আলাপ-আলোচনা বুঝতে পারবেন না; কেননা তাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা। আগেই বলা হয়েছে, সেই ভাষার নাম কানাসি। কানাসি নিয়ে দুটি মত প্রচলিত আছে।

প্রথমত, সেখানে যেহেতু মাদকের মতো একটি নিন্দনীয় ব্যবসা পরিচালিত হয়, যার সাথে বিশ্বের বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের সংযোগ, সেহেতু সেসব ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের থেকে নিজেদের কথাবার্তা গোপনে সেরে নিতে প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে তারা এই কানাসি ভাষা তৈরি করে নিয়েছে। দ্বিতীয়ত, এটি স্বতন্ত্র একটি ভাষা, যা প্রাচীনকাল থেকেই এখানকার অধিবাসীরা ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে, এই ভাষা ভারত কিংবা বিশ্বের অন্য কোথাও ব্যবহৃত হয় না।

ফলে আমাদের কাছে কানাসি ভাষা এখন পর্যন্ত রহস্যময়। শুধু তাদের ভাষাই রহস্যময় নয়; রহস্যময় তাদের ধর্ম বিশ্বাসও। ভাষার মতোই প্রচলিত কোনো ধর্মেও তাদের বিশ্বাস নেই। অন্য কোনো ধর্মের সাথে তাদের ধর্মের মিলও পাওয়া যায় না। একজন দেবতাকে কেন্দ্র করে তাদের ধর্ম বিশ্বাস যাপিত হয়। সেই একমাত্র দেবতার নাম ‘জমলু ঋষি’।

ভারতবর্ষে সাধারণত দেখা যায়, প্রায় সকল দেবতার মন্দিরে পূজা হয়ে থাকে, কিন্তু জমলু ঋষির জন্য সে ধরনের কোনো পূজার ব্যবস্থাপনা নেই। তবে উৎসবে তাকে সর্বশক্তিমান দেবতা হিসাবে স্মরণ করা হয়ে থাকে। প্রচলিত পদ্ধতিতে পূজা না করলেও সবার ঘরে ঘরে তার আধ্যাত্মিক বাণী সংরক্ষিত আছে। এছাড়া দুটি প্রাচীন মন্দির আছে, সেখানেও জমলু ঋষির বিভিন্ন বাণী দেয়ালে অঙ্কিত রয়েছে, কিন্তু কোনো পূজার আয়োজন সেখানে হয় না।

ধর্ম

মালানাবাসীদের ধর্মবিশ্বাস নিয়েও আছে অনেক গল্প। প্রচলিত কোনো ধর্ম বিশ্বাসে তারা বিশ্বাসী নয়। তাদের একমাত্র দেবতার নাম ‘জমলু ঋষি’। হিন্দু পুরানগুলোতে এই ঋষির নাম পাওয়া যায়। তাই ধারণা করা হয়, মালানাবাসী এখনও আর্য পূর্ববর্তী সময়ের সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী।

মালানাতে পাহাড়ের শরীর ভেদ করে চলেছে মেঠো পথ। ছবি: দ্য ট্র্যাভেলগ্রাফি

গোটা গ্রাম ঘুরে জমলু ঋষির কোনো বিগ্রহ বা মন্দির খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু প্রায় প্রত্যেকের ঘরেই রয়েছে জমলু ঋষি প্রণীত কোনো বানী বা মুর্তি রয়েছে। তবে মালানাবাসীর মধ্যে শিবের অনেক প্রভাব রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

প্রাচীন হিন্দু পুরাণগুলোতে ‘জমলু ঋষি’ নামের এক দেবতার উল্লেখ পাওয়া যায়। সেই সূত্রানুসারে অনেক গবেষক মনে করেন, মালানার অধিবাসীরা আর্য পূর্ববর্তী সনাতন ধর্মের অনুসারী। কিন্তু পার্শ্ববর্তী এলাকগুলোতে এরূপ কোনো ধর্মীয় চর্চার খোঁজ পাওয়া যায় না।

মালানা গ্রামের পরিচালনা পদ্ধতিতে এই জমলু ঋষির প্রভাব অত্যধিক। সমাজের একজন তার প্রতিনিধিত্বের শক্তি লাভ করেন। তাকে ‘গুরু’ নামে অভিহিত করা হয়। সমস্ত গ্রাম গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হলেও তার সিদ্ধান্তের গুরুত্ব থাকে সবার উপরে।

স্পর্শে নিষেধাজ্ঞা

যদি কেউ এই গ্রামে ঘুরতে যান, তাহলে তার উচিত হবে গ্রামের কোনো কিছু না ছোঁয়া। এমনকি গ্রামের দেয়ালগুলো ছোঁয়াও ঠিক নয়। আর যদি মনের ভুলেও কোনোকিছু আপনি ছুঁয়ে ফেলেন তাহলে নির্ঘ্যাৎ আপনাকে জরিমানা গুনতে হবে।

এমনকি এই গ্রামের মানুষ নিজেদের মধ্যে ভাব বিনিময়ের জন্য স্বতন্ত্র এক ভাষার জন্ম দিয়েছে, যাকে তারা ‘কানাসি’ নামে ডাকে। তাদের আভ্যন্তরীন বক্তব্য যাতে বর্হিঅঞ্চলের মানুষ বুঝতে না পারে তাই এই ভাষার সৃষ্টি করা হয়েছিল।

ভেতরে প্রবেশের পর কোনো কিছু স্পর্শ করতে পারবেন না; এটাই আইন। কোনো কিছু স্পর্শ করে ফেললে গুনতে হবে জরিমানা।

হাসিস মাদক

এই গ্রামে উৎপাদিত হাসিস বিশ্বের মাদক জগতে বেশ বিখ্যাত, যা নেশাদ্রব্য হিসেবে খুবই কার্যকরী। হাসিস নিয়ে নানা কিংবদন্তি আছে। কথিত আছে, ক্রুসেডের সময়ে একদল দুর্ধর্ষ যোদ্ধাদের হাসিস খাওয়ানো হতো যাতে তারা প্রতিপক্ষের লোকদের নির্দ্বিধায় হত্যা করে ফেলতে পারে। ফলে হাসিস অনেক আগে থেকেই ঘাতক মাদক। আর এই হাসিসের জন্যই সারা বিশ্বের অসংখ্য মাদক সম্রাট মালানায় ভিড় জমান।

দূর থেকে তোলা মেঘ ঘেঁষা মানালা গ্রাম। ছবি: সংগৃহীত

মাদক সম্রাটদের পাশাপাশি এখন প্রতিবছর বেশ কিছু পর্যটকও মালানায় ঘুরতে যান। তবে সবার জন্য কড়াকড়ি ব্যবস্থাপনা। গ্রামে ঢুকতে প্রথমেই একটি চেকপোস্ট। সেখানে আপনাকে তল্লাশি যতটা না মুখ্য, তার চেয়ে মুখ্য আপনি কী কারণে মালানায় প্রবেশ করতে চান তার সঠিক উত্তর দিতে পারা। যদি আপনি তাদের মনমতো উত্তর দিতে না পারেন তবে আপনাকে খালি হাতে ফিরে আসতে হতে পারে।

একশ্রেণীর মানুষ সকল বাধা অতিক্রম করে এই মালানায় ভিড় জমান। যারা ভিড় জমান তারা মূলত বিশ্বের বড় বড় মাদক সম্রাট। মালানায় উন্নত মানের গাঁজা চাষ ও গাঁজা থেকে বিভিন্ন মাদক তৈরি করা হয়, যা সংগ্রহ করার জন্য মাদক সম্রাটরা মালানায় আসেন। মালানায় গাঁজা থেকে এমন কিছু মাদক তৈরি হয় যা বিশ্বের আর কোথাও তৈরি করা সম্ভব হয়নি বলে কথিত রয়েছে। মালানার অধিবাসীরা এসব মাদক উৎপাদন পদ্ধতি গোপন রাখেন।

১৯৯৪ এবং ১৯৯৬ সালে পরপর দুবার বিশ্বের সবেচেয়ে ভালো এবং দামি হাসিস উৎপাদনের রেকর্ডটিও মারানাবাসীর দখলে। গাঁজার সবচেয়ে ভালো প্রজাতিটিই এই অঞ্চলে জন্মায় এবং মালানাবাসীরা নিজস্ব পন্থায় এই গাঁজাকে প্রক্রিয়াজাত করে। বিভিন্ন দেশের মাদকসম্রাটরা মালানা থেকে হাসিস তৈরির বিশেষ প্রক্রিয়া জেনে নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানা যায়।

কিন্তু নব্বইয়ের দশকে মালানায় একবার একসাথে ১২ জন পর্যটকের লাশ পাওয়া যায়; তখন তাদের লাশ নিয়ে বিভিন্ন গল্প প্রচলিত হয়। তার মধ্য অন্যতম হলো, এরা পর্যটকের বেশে মালানায় উৎপাদিত বিভিন্ন মাদকের ফর্মুলা গোপনে বা জোরাজুরি করে জেনে নিতে চেয়েছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় মালানার মাদক প্রস্তুতকারীরা তাদের হত্যা করে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে ফেলে রাখে।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর