চলছে মানুষ-মশার লড়াই, ওষুধে হচ্ছে না কাজ

সময়: 11:31 pm - March 13, 2021 | | পঠিত হয়েছে: 133 বার

রাজধানীর বস্তি থেকে অভিজাত এলাকায় মশার উপদ্রব জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলছে। ঘরে কিংবা বাইরে কোথাও মশা থেকে মুক্তি মিলছে না। ওষুধ-কয়েল জ্বালিয়েও রেহাই পাচ্ছে না মেগাসিটি ঢাকার কোটি মানুষ। এ যেন এক অদৃশ্য লড়াই। মশা নিয়ন্ত্রণ করার যেন কেউ নেই।

তথ্য বলছে, গত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে কিউলেক্স মশার ঘনত্ব বেড়েছে প্রায় চার গুণ। রাজধানীর উত্তরা, খিলগাঁও, শনির-আখড়া, শাঁখারীবাজার, মোহাম্মদপুর ও পরীবাগে গড় ঘনত্ব প্রতি ডিপে মশা মিলেছে ৬০টিরও বেশি। যেখানে অন্যান্য সময় পাওয়া যায় ১৫ থেকে ২০টি।

তবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, মশা নিয়ন্ত্রণে নগর জুড়ে নিয়মিত ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। পাশাপাশি নগরবাসীকেও সচেতন হতে হবে। বাড়ির আঙিনা পরিষ্কারসহ যেকোনো জায়গায় আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

রাজধানীর উত্তরখান এলাকার বাসিন্দা মো. সোহেল বলেন, মশার ভয়ে সারাক্ষণই দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। যদি একটু সময় আলো বাতাসের জন্য জানালা খোলা হয়, তাহলে মশায় সারা রুম ভরে যায়। ফলে কয়েকদিন মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ থাকতে হয়।

রাজধানীর পান্থপথ এলাকার বাসিন্দা সেলিম মিয়া বলেন, মশারি টানিয়ে ঘুমালেও শান্তি নেই। মশারির ফাঁক গলে ঢুকে পড়া মশা মারতে গিয়ে রাতের ঘুম নষ্ট।

রাজধানীর কালশী এলাকার বাসিন্দা সাবরিন রুমি বলেন, পড়তে বসলে মশার কামড়ে হাত-পা, মুখে রক্ত বিন্দু জমে থাকে। রান্নাঘরে কাজ করতে গেলে কানের কাছে প্যান প্যান করে মশা। মশা মারতে কয়েল, স্প্রে, বৈদ্যুতিক ব্যাট সবই কিনেছি। কিন্তু কিছুতেই মশার কামড় থেকে নিস্তার পাচ্ছি না।

পল্লবীর বাসিন্দা তরু আহমেদ বলেন, সন্ধ্যার আগেই বাসার দরজা-জানালা বন্ধ করা হয়। তারপরও মশার কামড় থেকে রক্ষা নেই।

মিরপুরের ১১ নম্বর সেকশনের বাসিন্দা দিলরুবা সুলতানা নেহা বলেন, ‘সাত তলায় থাকি, কিন্তু মশার যন্ত্রণা থেকে নিস্তার নেই। সিটি করপোরেশন কাজ করেছে বললেও সে কাজের ফল আমরা পাচ্ছি না।

গুলশান সোসাইটির মহাসচিব শুক্লা সারওয়াত সিরাজ বলেন, গুলশানে মশার সাংঘাতিক উপদ্রব। এটি একটি অভিজাত এলাকা। সে হিসেবে আশা করেছিলাম হয়তো মশার উপদ্রব থেকে স্বস্তি পাবো। কিন্তু ঠিক উল্টো, এখানেও রেহাই নেই মশার উপদ্রপ থেকে।

তিনি বলেন, এ এলাকায় সিটি করপোরেশনের নিয়মিত কাজ করছে। কিন্তু মশার উপদ্রব ঠেকাতে পারছে না।

বৃষ্টি হলে কিউলেক্সের লার্ভা ভেসে গেলে মশার ঘনত্ব কমে আসবে বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. কবিরুল বাশার।

তিনি বলেন, বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে ও পানি বহমান না থাকার কারণে কিউলেক্স মশার জন্মানোর হার বেড়ে গেছে। বৃষ্টি হলে মশার উপদ্রপ কমে আসবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, কিউলেক্স মশার বংশবিস্তার রোধে লার্ভিসাইডিং করা হচ্ছে, ফগিংও চলছে। মশা নিয়ন্ত্রণে চতুর্থ প্রজন্মের নোভালিউরন ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে। খুব দ্রুত মশক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর