সোনামসজিদে সিঅ্যান্ডএফ কার্যালয়ে ১০ দিন থেকে তালা

সময়: 12:00 pm - March 1, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 198 বার

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে তালা ঝুলছে। অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বের কমিটি ও প্রতিদ্বন্দ্বী অপর একটি কমিটি গঠন করে কার্যালয় দখল নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় তালা ঝুলিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

 

সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কাস্টমসে দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার সাইফুর রহমান জানান, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমানে দুটি কমিটি। একটি কমিটি বিদ্যমান থাকার পর অপর একটি কমিটি গঠিত হয়েছে।

 

দুটি কমিটির মধ্যে কার্যালয়ের দখল নিয়ে যে কোনো মুহূর্তে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে এ আশঙ্কায় কার্যালয়ে অতিরিক্ত একটি তালা দেয়া হয়েছে।

 

সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এ কার্যালয় কাস্টমস বিভাগের সরকারি জমিতে অবস্থিত। বন্দরের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে বন্দর এলাকায় তাদের কার্যালয় রয়েছে।

 

কিন্তু কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ইতিপূর্বে অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয় সরিয়ে নেয়ার জন্য একাধিকার বলা হলেও সরানো হয়নি। বর্তমানে দুটি কমিটি সৃষ্টি হওয়ায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। বন্দর এলাকায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার দায়দায়িত্ব কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নেবে না। ফলে অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে অতিরিক্ত একটি তালা দেয়া হয়েছে।

 

এর আগে গেল বছরের ৩ ডিসেম্বর গঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের অনুমোদন নিয়ে আগের কমিটি গঠিত হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুদ্দীন মণ্ডল ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম পরের কমিটিকে সুপারিশ করেছেন।

 

দুটি কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। নবগঠিত কমিটির একজন সদস্য বলেন, আগের কমিটির অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সদস্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে।

 

দুটি কমিটির কারণে উদ্বুদ্ধ জটিলতার সৃষ্টির কারণে কাস্টমস অফিস এলাকায় কর্তৃপক্ষ কার্যালয়ে তালা দিয়েছে। তবে এ পরিস্থিতি নিরসনে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।

 

অন্যদিকে আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বন্দরে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

এ কমিটির অনেকেরই লাইসেন্স নেই। তবে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি সমাধানের একটি মাত্র পথ সুষ্ঠু নির্বাচন। নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করলে একদিকে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে গতিশীলতা ফিরে আসবে।

 

অন্যদিকে অ্যাসোসিয়েশনের ভেতরে কোনো ধরনের দ্বন্দ্ব থাকবে না বলে অধিকাংশ ব্যবসায়ী অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

 

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বিবদমান সমস্যা নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন, পদাধিকার বলে আমি বন্দরের উপদেষ্টা। সুষ্ঠুভাবে বন্দর পরিচালনার স্বার্থে আমি একটি কমিটির অনুমোদন দিয়েছি। এ অধিকার আমার রয়েছে।

 

এ কমিটির নেতৃবৃন্দের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সাধারণ সদস্যদের কাছে। এ ছাড়া এ কমিটির শ্রম অধিদফতরের অনুমোদনও রয়েছে। নতুন যে কমিটি গঠিত হয়েছে তা সুপারিশ করার বৈধতা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

 

শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানান, নবগঠিত কমিটির তালিকায় আমি কোনো সুপারিশ করিনি। সরকারি বিধি মোতাবেক স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন পরিচালিত হোক এ কথা লিখেছি। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি নিরসনের জন্য নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি হওয়া উচিত।

 

উল্লেখ্য, গত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আলহাজ এনামুল হকের হস্তক্ষেপে তৎকালীন নির্বাচিত কমিটি ভেঙে তার অনুমোদিত কমিটি গঠন করেন।

 

সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচিত কমিটি না করে আগের মতোই অনির্বাচিত কমিটি দিয়ে অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে আসছে। এর পর আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম রাব্বানী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের নেতৃত্বে অনির্বাচিত কমিটি বন্দর পরিচালনা করে আসছে।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর