জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাড়ি ফিরছে মানুষ
আটকে রাখা যাচ্ছে না ঈদে ঘরমুখো মানুষদের। ঢাকা থেকে কেউ কেউ ভেঙে ভেঙে মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান, মুরগির গাড়ি, বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, পণ্যবাহী ট্রাকে করে গ্রামের বাড়ির দিকে ছুটছেন। তবে মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকলও কোন যানজট হচ্ছে না।
এবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদযাত্রায় ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে মোটরসাইকেল। ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতেই স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ভাড়া মোটরসাইকেলযোগে সিরাজগঞ্জে আসছেন তারা।
এমনই একজন সিরাজগঞ্জ উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের পিপুলবাড়ীয়া গ্রামের আকবর হোসেন (৪৮)। তিনি ঢাকার একটি গার্মেন্টসে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেন। স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে অনেক কষ্টে মোটরসাইকেলে গাদাগাদি করেই বসেই শুধু গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন বলে রওনা হয়েছিলেন।
বুধবার (১২মে) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড়ের কড্ডার মোড় গোলচত্বর এলাকায় তাঁর সঙ্গে কথা হয়।
এত কষ্ট করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও মোটরসাইকেলে কেন এসেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে আকবর হোসেন বলেন, ‘সারা বছরে ঈদেই একটু ছুটি পাই। এছাড়া বাকি সময় গ্রামের বাড়িতে বাবা-মাকে দেখতে আসা সম্ভব হয় না। বাবা, মা, ছোট ভাইবোনেরা অনেক আশায় থাকে, আমি বাড়িতে আসব। সবাই একসঙ্গে ঈদের দিনে আনন্দ করব। যে কারণে কষ্ট হলেও সেই আনন্দের জন্য এই কষ্ট কিছুই না।’ স্ত্রী-সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড় এলাকায় আসতে আকবর হোসেনকে মোটরসাইকেল ভাড়া দিতে হয়েছে ২ হাজার ৩০০ টাকা।
ঢাকা থেকে ঈদ করতে আসা এমন আরেকজন কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল এলাকার রহিজ উদ্দিন (৩৮)। ভোর রাতে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে এসেছেন তিনি কড্ডার মোড় এলাকায়। এ জন্য তাঁদের ভাড়া দিতে হয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা। যেখানে বাসে আসতে ৮০০ টাকা লাগতে সেখানে বেশি টাকা দিয়েও স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পেরে তৃপ্তি হাসি ফুটেছে তাদের মুখে।
ঢাকা, নারায়নগঞ্জ থেকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড়ের কড্ডার মোড় গোলচত্বর পর্যন্ত অনেকেই আসছেন এভাবে। সেখান থেকে নিজ গন্তব্যস্থল সিরাজগঞ্জ শহর, কামারখন্দ, কাজিপুর, উল্লাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ছুটছেন।
জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, মহাসড়কে সকাল থেকে কোন যানজট নেই। তবে ট্রাকে, পিকআপ ভ্যানে ও মোটরসাইকেলে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে বিভিন্ন যানবাহন। তবে মহাসড়কে যাতে কোনো যানজট সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে মহাসড়কে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে।
রাজশাহী বার্তা/admin