মোহনপুরে পুলিশে চাকুরী দেওয়ার নামে সেই রনির প্রতারণা

সময়: 10:49 am - March 12, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 252 বার

রাজশাহীর মোহনপুরে পুলিশ কন্সটেবল পদে চাকরি দেওয়ার নামে ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা সৈনিক লীগের সাবেক সভাপতি রনিউজ্জামান ওরফে জিমি কাটার রনির বিরুদ্ধে। রনিউজ্জামান ওরফে জিমি কাটার রনি (৩৮) উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে। এ ব্যাপারে মোহনপুর থানায় গত মঙ্গলবার (১০ মার্চ ২০২০) একটি প্রতারনা মামালা দায়ের হয়েছে।

 

মামলা ও ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রনিউজ্জামান ওরফে জিমি কাটার রনি মোহনপুর উপরজলা বাসীর এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। রাজশাহী জেলা সৈনিকলীগের সভাপতি হিসেবে নেতৃত্বে আসার পর থেকেই বেপোরোয় হয়ে উঠেন তিনি। মাদক, চাদাবাজি,বদলির তদবির,নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মাদকের বিভিন্ন স্পট থেকে চাঁদা উঠানোসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরি ও বদলির তদবির করার নামে তার প্রতারনায় পড়েছেন অনেক সরকারি চাকরিজীবিসহ সাধারণ মানুষ। অবশেষে বিষয়টি কেদ্রীয় নেতৃবৃন্দের কানে পড়ায় হারিয়েছেন দলীয় পদ। পদ হারালেও থেমে থাকেনি তার অনৈতিক কর্মকান্ড সাবেক প্রতিমন্ত্রী, এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা, প্রশাসনিক ও বিভিন্ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে তার প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন পুলিশ, শিক্ষক, কৃষক পরিবারের শিক্ষিত বেকার যুবকসহ অসংখ্য শ্রেণী পেশার মানুষ।

 

 

 

এলাকা ও এলাকার বাইরেও বিভিন্ন থানা এলাকায় তার বিরুদ্ধে প্রতারণার ব্যাপক অভিযোগ। তার বিভিন্ন অপকর্ম এখন এলাকার মানুষের মুখে মুখে। তার প্রতারণার শিকার মোহনপুর উপজেলার আমরাইল গ্রামের আজেদা বেগমের ছেলে রাজিম ইসলাম (২০)। তাকে পুলিশ কন্সটেবল পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রয়ারি সকাল সাড়ে ১১ টার সময় রাজিমের বাড়ীতে যায় জিমি কাটার রনি। গিয়াস,মিঠু,পারভীন বেগমের উপস্থিতিতে পুলিশ কন্সটেবল পদে চাকুরি দেওয়ার নামে গুনে নেয় নগদ ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। চাকরি না দিতে পারলে টাকা ফেরত দিবেন জানানো হয় রাজিমের পরিবারকে। চাকরি দিতে না পারায় ভুক্তভোগীর পরিবার জিমি কাটর রনির কাছে টাকা ে ফেরত চাইলে আজ দিব কাল দিব বলিয়া কালক্ষেপন করিতে থাকে। অবশেষে ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই তারিখে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ধুরইল ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলমগীর মেম্বার,৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজাদ আলী ও হযরত আলীসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের নিয়ে বসে সালিশ বৈঠক। সালিশ বৈঠকে ইউপি সদস্য ও অন্যান্যদের স্বাক্ষী করে একটি সাদা কাগজে স্বীকারোক্তি পত্রে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে টাকা ফেরত দিবে বলে লিখিত দেন জিমি কাটার রনি।

 

 

 

তারিখে নির্ধারত ভুক্তভোগীর পরিবার ও তার লোকজন জিমি কাটার রনি বাড়ীতে গিয়ে টাকা চাইলে তিনি টাকা ফেরত না দিয়ে তাদেরকে অপমানসহ হুমকি ধামকি দিয়ে বাড়ি থেকে বের কওে দেন। এ ঘটনার পর জিমি কাটার রনি বলেন, এরপর টাকা চাইলে তাদের প্রানে মেরে ফেলা হবে। ভুক্তভোগীর পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন তিনি।

 

 

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ব্যাক্তি বলেন, সে মাদকসেবি ও চাঁদাবাজ,সন্ত্রাসী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলেনা। সে বিভিন্ন জায়গায় মেয়র লিটন,এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীসহ ডিআইজি ও এসপি,র‌্যাব তার হাতের লোক। তার হাত অনেক লম্বা হওয়ায় স্থানীয় পুলিশ তার বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারেনা। অবশেষে গত বুধবার মঙ্গলবার (১০ মার্চ ২০২০) রনিউজ্জামান ওরফে জিমি কাটার রনির বিরুদ্ধে মোহনপুর থানায় ৪০৬,৪২০/৫০৬ ধারায় একটি মামলা রজু হয়েছে। মোহনপুর থানার মামলা নম্বর-১৩,তারিখ ১০/০৩/২০২০।

 

এ ব্যাপওে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, রনিউজ্জামান ওরফে জিমি কাটার রনির বিরুদ্ধে মোহনপুর থানায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেহেতু ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ফেনসিডিল সেবন ও রাখার অপরাধে তিনি জেল হাজতে আছেন। সেহেতু তাকে পুনঃ গ্রেফতারের জন্য আদালতে আবেদন পাঠানো হয়েছে।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর