করোনা ভাইরাস কতোটা মারাত্মক?
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৮০ জন মারা গেছে। রোগের প্রকোপের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম মনে হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যেতে বেশ খানিকটা সময় লাগে, ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, বিশ্বে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে কিন্তু হাসপাতাল বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়নি, এমন রোগীদের সংখ্যা আসলে কতো, সেই তথ্য কারো জানা নেই।
রোগটির প্রাদুর্ভাবের শুরুতে চীনের কর্তৃপক্ষ বলেছিল যে, ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছে না, কিন্তু বর্তমানে এই রোগী মানুষের মধ্যে ব্যাপক আকারে ছড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে চীনের অনেক লোক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘পরবর্তীতে করোনা ভাইরাসটি বড় মহামারি আকারে চীন ও এশিয়া অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়লে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।’
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের মধ্যে খুব সহজে করোনা ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। একেকজন সংক্রমিত ব্যক্তি গড়ে ১.৪ থেকে ২.৫ জন ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে এই ভাইরাসটি। একের বেশি হওয়া মানে হলো রোগটি স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে। সুতরাং এটি এমন একটি ভাইরাস যা নিজে থেকে বিনষ্ট বা বিলুপ্ত হয়ে যাবে না।।
যদিও এই রোগটির চীন কেন্দ্রিক। কিন্তু থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, নেপাল এবং যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞানিরা বলছেন, করোনা ভাইরাস এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এটা হয়তো একজন ব্যক্তি থেকে আরেকজন ব্যক্তিতে ছড়ানোর জন্য পরিবর্তিত হতে পারে কিংবা আরও মারাত্মক উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
এই রোগ থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় হলো অন্যদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ হতে না দেয়া। এ জন্য সাবধানতা হিসেবে যা করা প্রয়োজন…
১. ঘরের বাইরে যখনই বের হবেন, মাস্ক ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
২. প্রচুর ফলের রস এবং পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
৩. ঘরে ফিরে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালো করে হাত-মুখ ধুয়ে নিন।
৪. কিছু খাওয়া কিংবা রান্না করার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন।
৫. ডিম কিংবা মাংস রান্নার সময় ভালো করে সেদ্ধ করুন।
৬. ময়লা কাপড় দ্রুত ধুয়ে ফেলুন।
৭. উচ্চ তাপমাত্রায় ভালভাবে ব্যবহারের কাপড় শুকিয়ে নিন।
৮. গণপরিবহন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
পৃথিবীতে সব সময়েই নতুন নতুন ভাইরাস সনাক্ত হয়ে থাকে। কোন একটি প্রাণী থেকে এসে এসব ভাইরাস মানব শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। এর আগে সার্স ভাইরাস প্রথমে বাদুরের শরীর থেকে খট্টাশের শরীরে, এরপরে সেটা মানব শরীরে চলে আসে।
মধ্যপ্রাচ্যের ফুসফুসের রোগ মার্স, যাতে ২৪৯৪ জন সংক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৮৫৮ মারা গিয়েছিল, রোগটি নিয়মিতভাবে এক কুঁজওয়ালা উট থেকে মানব শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এবারও করোনা ভাইরাসটি ছড়িয়েছে কোন প্রাণী থেকে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
রাজশাহী বার্তা/admin