জানুন শীতকে ‘বিয়ের মৌসুম’ বলা হয় কেন
লাইফস্টাইল ডেস্ক: শীতকে বলা হয় বিয়ের মৌসুম। কারণ শীতকাল এলেই বিয়ের ধুম পড়ে যায়। তবে শীতকালে কেন এত বিয়ের ধুম পড়ে যায় তা কি জানেন? এবার জেনে নিন শীত এলে কেন এত বিয়ের ধুম পড়ে।
২০১৫ সালে দু’টি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশিত হয় ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ইকনমিক রিসার্চ-এর জার্নালে। ওই রিপোর্টে বলা হয় যে তাপমাত্রার উপরে অনেকটা নির্ভরশীল মানুষের শরীরের হরমোন মাত্রা।
তাপমাত্রা যদি ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি হয়, তবে তা পুরুষ এবং নারী উভয়েরই প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। আবার তাপমাত্রা খুব কম হলেও মোটামুটিভাবে ৫ ডিগ্রির কম হয়ে গেলেও একই বিষয় ঘটে।
আসল কথা হল মন ভাল থাকা এবং ভাল থাকার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনগুলি শীতে শরীরে নিঃসৃত হয়। প্রবল গরমের পরে যখন হালকা শীত নামে তখন শরীরে যে স্বস্তিটা বোধ হয়, সেটা অক্সিটসিন জাতীয় হরমোনের কারণে।
আর এই অক্সিটোসিনকেই মূলত প্রেমের হরমোন বলে ধরা হয়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে উলটো ব্যাপারটাও ঘটে। ঠাণ্ডা পড়লে অনেকের ডিপ্রেশনও হয়। সেটাও হরমোনজনিত। তবে প্রেম কিংবা বিয়ে এই ডিপ্রেশন কাটাতেও ভূমিকা রাখে।
এছাড়া আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে শীতে বিয়ে হওয়ার আরো কয়েকটি কারণ রয়েছে। যেমন-
ছুটি: ডিসেম্বর মাসে ছেলেমেয়েদের বার্ষিক পরীক্ষার শেষে স্কুল বন্ধ থাকে। এসময় তাদের সঙ্গে ছুটি মিলিয়ে বড়রাও সহজে বেড়াতে যেতে পারেন। আর এই সুযোগেই সব আত্মীয়-পরিজন একত্রিত হতে পারেন। বছরের অন্যান্য সময় সবাইকে একত্রে পাওয়া এমন সহজ হয় না। তাই বিয়ের জন্য বেশিরভাগ মানুষ শীতকালই বেছে নেন।
খাওয়া দাওয়া: গরমের সময়ে খেতে হয় রয়ে-সয়ে। খাবারে একটু এদিক-সেদিক হলেই পেটের ভেতর গুড়গুড় শুরু হয়ে যায়। কিন্তু শীতকালে সেই চিন্তা নেই। এমনিতেই নানা পিঠাপুলি পেট ভরে খাওয়া হয়, পাশাপাশি দাওয়াতেও খাওয়া যায় কবজি ডুবিয়ে। আর বিয়ে মানেই বিশেষ খানাপিনা। তাই বিয়ের জন্য শীতকালই উপযুক্ত সময়।
খাটাখাটনি: গরমের দিনে একটু পরিশ্রম করলেই হাপিয়ে উঠতে হয়। ঘেমেনেয়ে একাকার হতে হয়। কিন্তু শীতে সেই ভয় একদমই নেই। বরং কাজ করলে শীতের অনুভূতিটা কম হয়। বিয়েতে হাজারটা কাজ করার লোকের অভাব হয় না। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করে দিতে আগ্রহী থাকে। তাই এসময় বিয়ের ধুম পড়ে যায়।
ফুলের সাজ: ফুল ছাড়া আবার বিয়ে হয় নাকি! আর কে না জানে, শীত মানেই ফুলে ফুলে রঙিন চারদিক। হাত বাড়ালেই ফুল আর ফুল। ফুলের সহজলভ্যতা বিয়ের উৎসবকে আরও বেশি জমকালো আর অভিজাত করে তোলে। ফুলের রঙ আর গন্ধে মন ভালো হয়ে যায় সবার।
সাজ: বরের সাজ নিয়ে খুব বেশি মাথাব্যথা না হলেও চলে কিন্তু কনের সাজ? বিয়ের সাজে কনেকে দেখতে সবার থেকে সুন্দর লাগা চাই। আর তাইতো মনের মতো করে সাজতে চান প্রত্যেক কনেই। কিন্তু গরমের সময়ে তা কতটুকু সম্ভব? যত দামি প্রসাধনীই ব্যবহার করা হোক না কেন, গরমে ঘেমে সব নষ্ট হবে। আর শীতে? যত খুশি সাজুন, নষ্ট হওয়ার এতটুকু ভয় নেই।
হানিমুন: শীতের সময়টা ঘোরাঘুরির জন্য উপযুক্ত সময়। তাই এসময় বিয়ে এবং এর পরে হানিমুনে ঘোরাঘুরিটা জমে বেশ। পরস্পরের পাশাপাশি থেকে উষ্ণতাও ভাগাভাগি, সেই সুযোগে সঙ্গীকে চিনে নেয়া, জেনে নেয়া। তাই বিয়ে এবং হানিমুনের জন্য শীতের সময়টাই উপযুক্ত।
রাজশাহী বার্তা/admin