৫টি সহজ পদ্ধতি জেনে নিন; আপনার দ্রুত গর্ভধারণের
অসংখ্য মানুষের অসংখ্য রকমের সমস্যা। তাই শিরোনাম দেখে চমকে যাবেন না! কেউ না চাইলেও কোনো নিয়ম না মানলেও গর্ভধারণ করতে পারেন আবার অনেক দম্পতি সন্তান গ্রহণ করতে চান কিন্তু অজানা কারণে তা হয় না। কনডম ব্যবহার না করা বা পিল খাওয়া বন্ধ করে দিলেই একজন নারী প্রেগন্যান্ট হয়ে যাবেন তা কিন্তু নয়। নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন, স্বাস্থ্যকর খাবার-দাবার ইত্যাদি বিষয় ঠিক রাখা খুব জরুরী মা হতে চাইলে। তবে আর একটি ব্যাপার আছে। শারীরিক মিলন। শারীরিক মিলনের কিছু নিয়ম গর্ভবতী হওয়াটা সহজ করে দিতে পারে। তাই গর্ভবতী না হয়ে থাকলে ভয় না পেয়ে স্বামীর সাথে মিলনে সচেতন হতে পারেন। যা ঘরে বসে করতে পারেন তার জন্য আর ডাক্তারের কাছে যাওয়া কেন? নিজেই এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে সেক্স ট্রাই করে দেখুন।
তবে প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে। মাসিকের সঠিক হিসাব রাখতে হবে যেন আপনি চাইলে সে সময় মাথায় রেখে শারীরিক মিলনের নিয়ম কাজে লাগাতে পারেন।
ডিম্বানু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাব্য সময় : গর্ভবতী হওয়ার জন্য অনেক কিছু তো করা হলো, এবার ভেবে দেখতে হবে স্বামীর সাথে মিলিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে। অনেকে কনডম ব্যবহার না করলেও গর্ভবতী হতে পারেন না প্রায়ই। এর কারণ তেমন কিছুই না অনেক ক্ষেত্রে। হিসাব করলে দেখা যাবে স্ত্রীর ডিম্বানু নিষিক্ত হওয়ার সময় হয়তো মিলন ঘটে নি যার ফলে গর্ভধারণও হয় নি। একজন নারীর ডিম্বাশয় মাসে একবার ডিম্বানু তৈরি করে। যখন এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় শুধুমাত্র তখনই বীর্যের সংস্পর্শে এলে ডিম্বানুটি নিষিক্ত হতে পারে। তবে শুক্রাণু নারীর গর্ভে গিয়ে প্রায় পাঁচদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।। তখন যদি নারীর ডিম্বানু প্রস্তুত হয় তখনই শুক্রাণু ডিম্বানুটির সাথে মিলিত হতে পারে।
একজন নারীর মাসিক শুরুর দিন থেকে গুণে গুণে সাতদিন পর্যন্ত এই ডিম্বাণু পুরোপুরি তৈরি হওয়ার সুযোগ নেই বলা চলে। যাদের মাসিক অনিয়ম তাদের কথা আলাদা। কিন্তু যাদের প্রতিমাসে ঠিকঠাক মতো সঠিক সময় মাসিক হয় তারা এ বিষয়টা মাথায় রাখতে পারেন। ইমার্জেন্সি পিল খেলে এ হিসাব কাজ করবে না, এটাও মনে রাখতে হবে। স্বাভাবিক মাসিক হয় যাদের তাদের পিরিয়ড শুরুর প্রথম দিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত স্বামীর সাথে মিলিত হলেও এ থেকে গর্ভধারণ করার সুযোগ খুব কম। গর্ভবতী হতে চাইলে এর পরের ১০ দিন স্বামীর সাথে একবার করে মিলিত হলে কোনো সমস্যা না থাকলে গর্ভবতী হবেন নারী। কারণ এ সময়ের ভিতরেই ডিম্বানুটি প্রস্তুত হয়।
জন্ম বিরতিকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করা : আপনি যে ধরণের জন্ম নিরোধকই ব্যবহার করুন না কেন, সেটা বন্ধ করে দিতে হবে। কনডম ব্যবহার বন্ধ করে মাসিকের প্রথম দিন থেকে হিসাব রাখতে হবে কবে কবে ডিম্বাণু প্রস্তুত হওয়ার সম্ভাব্য সময়টা। আর পিল বন্ধ করলেও হুট করে বন্ধ না করে যেদিন পিল স্ট্রিপ শেষ হয়ে যায় এরপরের মাসিকের প্রথম দিন আর পিল খাবেন না। মাসিক শুরু হলে তখন থেকে হিসাব রাখবেন।
ডিম্বাণু প্রস্তুত হওয়ার আগেই শারীরিক মিলন : পুরুষের শুক্রাণু জরায়ু বা ডিম্বনালীতে দুই থেকে তিনদিন বেঁচে থাকে। কিন্তু নারীর ডিম্বাণু মাত্র ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা নিষিক্ত হওয়ার অবস্থায় থাকে। এরপর সেখানে আর কোনো শুক্রাণু কাজ করতে পারে না। তাই ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাব্য দিনে শারীরিক মিলন না করে মাসিক শেষ হওয়ার পর একদিন পর পর শারীরিক মিলন করতে হবে। যেন ডিম্বাণু প্রস্তুত হলে শুক্রাণু মিলিত হতে পারে। জরায়ুতে অপেক্ষ্মান শুক্রাণুও সেটা করতে পারে।
শারীরিক মিলন প্রতিদিন নয় : অনেকের ধারণা বাচ্চা চাইলে প্রতিদিন শারীরিক মিলন জরুরী। এটা ঠিক নয়। প্রতিদিন শারীরিক মিলনে অবসাদ বা ক্লান্তি চলে আসতে পারে। নারীর মিলিত হওয়ার আগ্রহ কমে যেতে পারে এবং পুরুষের বীর্্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এর ফলে ডিম্বাণু প্রস্তুত হওয়ার সময় শারীরিক মিলন না ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তাই এক দিন পর পর শারীরিক মিলন গর্ভবতী হওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায়। এতে করে শারীরিক মিলনের আগ্রহও থাকে আবার ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশী থাকে।
শারীরিক মিলনে করণীয় : শারীরিক মিলনের পর বিছানায় পিঠ লাগিয়ে শুয়ে থাকুন। যেন বীর্য জরায়ুর দিকে সহজে প্রবাহিত হতে পারে। একটা কোলবালিশ পায়ের নীচে দিয়ে রাখতে পারেন যেন পাগুলো একটু উঁচু হয়ে থাকে। মোট কথা বীর্য যতখানি সময় ধরে জরায়ুর ভিতরে রাখা যায় ততই ভালো।
* শারীরিক মিলনের জন্য ঘুমের আগের সময় বেছে নিন। যেন মিলনের সাথে সাথেই উঠে না যেতে হয় বিছানা থেকে।
* মিলনের পর পরই নিজেকে পরিষ্কার করে নেয়ার অভ্যাস খুবই ভালো। এতে কোনো রকম ইনফেকশনের ভয় থাকে না। কিন্তু গর্ভধারণের জন্য অন্তত ১ ঘন্টা পানি বা সাবান দিয়ে যৌনাঙ্গ না ধুয়েই থাকতে হবে।
* যৌন মিলনের বহুল প্রচলিত পজিশন নারীর উপরে পুরুষ। একে মিশনারি পজিশন বলে। মিশনারি পজিশনে শারীরিক মিলন এক্ষেত্রে সাহায্য করেতে পারে বলে মনে করেন অনেকে। কারণ এতে নারী কোনো রকম নড়াচড়া ছাড়াই বিছানায় পিঠ লাগিয়ে শুয়ে থাকতে পারেন।