গোমস্তাপুরে বোরো মৌসুমে কৃষকরে মুখে হাসি ব্রি ৮১ ধান চাষে
আল-মামুন বিশ্বাস, গোমস্তাপুর : ব্রি ধান ৮১ গোমস্তাপুর উপজেলা তথা দেশের কৃষকদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে। অন্যান্য জাতের চেয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষক পর্যায়ে ধানের এ জাতটির বীজ দ্রুত সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হলে ধান উৎপাদনে ব্যাপক সহায়ক হবে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবির বুধবার গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইাউনিয়নের শুক্রবাড়ি মাঠে ব্রি ধান ৮১’র নতুন শষ্য কর্তন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন,সরকার কৃষকদের নিয়মিতভাবে কৃষি ভুর্তুকি দিচ্ছে। বীজ, সার, ফসল কর্তনে মেশিন কেনাসহ দুর্যোগকালীন সময়ে কৃষকদের ভুতুর্কি দিয়ে সহায়তা করছে। কৃষিকে টিকিয়ে রাখতে না পারলে সব ধরনের উন্নয়ন স্থবির হয়ে পড়বে। সকল অর্জনই সাময়িক হবে।তাই কৃষকদের নতুন জাত দেওয়ার পাশাপাশি ভাল ব্যবস্থাপনা দিতে পারলে কৃষকরা বেশী করে এই জাত চাষাবাদ করবে। ফলনও বেশী হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) রাজশাহীর প্রধান ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.আমিনুল ইসলাম ও ঊর্ধŸতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন-অর-রশিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এগ্রিকালচারের পরিচালক নজরুল ইসলাম, গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন, চৌডালা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম ও আওয়াল হোসেন, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আতিকুল ইসলাম আজম, কৃষক মাহবুবুল আলম বুলবুল প্রমূখ।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) রাজশাহীর প্রধান ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আমিনুল ইসলাম বলেন, ব্রি ৮১ ধান গাছের উচ্চতা হয় ১০০ সে.মি. এবং গাছ বেশ শক্ত হওয়ায় ঝড় বৃষ্টিতে সহজে হেলে পড়েনা। ধানটির জীবনকাল ২৮ এর সমান ১৪০ থেকে ১৪৫দিন। বোরো মৌসুমের জন্য উদ্ভাবিত এ ধান উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং ধানের সকল বৈশিষ্ট বিদ্যমান রয়েছে। চালে অ্যামোইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৬ দশমিক ৫ ভাগ হওয়ায় ভাত হয় বেশ ঝরঝরে ও সুস্বাদু। ধানের আকৃতি হয় বাসমতি চালের ন্যায় লম্বা ও চিকন। বিদেশেও রপ্তানিযোগ্য। জাতীয় বীজ বোর্ড গত ২০১৭ সালে ব্রি ধান ৮১’র অনুমোদন প্রদান করেছে।
ঊর্ধŸতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুনুর রশিদ বলেন, ব্রি ধান ৮১’র রোগ ও পোকামাকড়ে আক্রমন প্রচলিত অন্যান্য জাতের চেয়ে অনেক কম। দেশীয় বাজারে ২৮ ও মিনিকেটের চালের বিকল্প হিসেবে সমাদৃত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন বলেন, উপজেলায় এ বছর ব্রি ধান ৮১ প্রায় ২ হাজার হেক্টের জমিতে চাষাবাদ করা হয়। কৃষকদের ব্রি ধান ৮১ বীজতলা তৈরী, মাঠ তৈরী, চারা রোপন, পরিচর্যা সব বিষয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিয়ে আসছিল।
কৃষক মাহবুবুল আলম বুলবুল বলেন, কোনো রোগের আক্রমণ ছাড়াই খুব ভালো ধান উৎপাদন হয়েছে। খরচ কম হয়েছে। ২ বিঘা জমিতে তার ৫৬ মন ধান উৎপাদন হয়েছে। ধানের উৎপাদন অন্য জাতের ধানের চেয়ে অনেক বেশি পেয়ে তিনি দারুন খুশি। তবে তিনি আরও জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের তদরকি আমাকে উদ্দীপনা যোগাচ্ছিল। এছাড়া রহনপুর মরিচাডাঙ্গায় ব্রি ধান ৮৬ নমুনা শষ্য কর্তন করা হয়। এ ধানের উৎপাদন বিঘায় ২৭ মন হয়েছে।
রাজশাহী বার্তা/Asfraful Islam