রাজশাহীতে মেসভাড়া মওকুফের দাবিতে মানববন্ধন
মেসভাড়া মওকুফসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী ঐক্য পরিষদ। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের মেসভাড়া মওকুফের দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী ঐক্য পরিষদ চার দফা দাবি জানান।
দাবিগুলো হল- সব মেস-বাসার এপ্রিল-জুন মাসের ভাড়া ৪০ শতাংশ মওকুফ, জুলাই মাস থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সব মেস-বাসার ভাড়া সম্পূর্ণ মওকুফ, মেস-বাসা মালিকদের হয়রানি থেকে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ছাত্র-ছাত্রীদের স্ব-স্ব মেস-বাসাতে থাকার নিশ্চয়তা দেয়া।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র-ছাত্রী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রাজু আহমেদ আপন, সদস্য মুনমুন আক্তার রানীসহ অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী।
হাসিবুল হাসান শান্ত বলেন, রাজশাহী মহানগরীতে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী মেস এবং ভাড়া বাসায় থাকেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তারা এখন সবাই গ্রামে ফিরে গেছেন। কিন্তু তাদের ভাড়ার টাকার জন্য ফোন করে চাপ দেয়া হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পরিবারেরই সেই ভাড়া টানার মতো সক্ষমতা নেই। তাই তারা রাস্তায় নেমেছেন। তাদের দাবি নায্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সংগঠনের আহ্বায়ক রাজু আহমেদ বলেন, জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এপ্রিল মাস থেকে ৪০ শতাংশ ভাড়া মওকুফের সিদ্ধান্ত আসে। কিন্তু এক সপ্তাহ না যেতেই একটি নতুন মেস মালিক সমিতি এসে জানায়, তারা পুরো ভাড়াই নেবে। এটা করোনাকালে শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে জুলুমের সিদ্ধান্ত। তাই তাঁরাও নতুন একটি সংগঠন করেছেন। এই সংগঠনের ব্যানারে মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের সব সমস্যার বিষয়ে তারা পাশে থাকবেন।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জন্য গত ১০ মে জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকে মেসভাড়া ৪০ শতাংশ মওকুফের সিদ্ধান্ত আসে। কিন্তু ১৭ মে ‘রাজশাহী মহানগর মেস মালিক সমিতি’ নামে একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। তাঁরা ঈদের পর ২৮ মে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে ১ জুন একটি ‘জরুরি নোটিশ’ দিয়ে জানায়, শিক্ষার্থীদের এপ্রিল থেকে জুনের পুরো ভাড়াই দিতে হবে। যদি কোনো শিক্ষার্থীর পরিবার করোনার পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন, সে ক্ষেত্রে মেস মালিকরাই বিবেচনা করে সর্বোচ্চ মেস ভাড়ার ছাড় দেবেন। এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
রাজশাহী মহানগর মেস মালিক সমিতির সভাপতি এনায়েত করিম বলেন, আমরা এপ্রিল ও মে মাসের পুরো ভাড়াটা নিচ্ছি। কিন্তু জুন এবং জুলাই মাসের ভাড়া অর্ধেক মওকুফ করছি। পুরো ভাড়া তো মওকুফ করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমরা ভাড়া মওকুফ করছি না এটা সত্য নয়। আমার সংগঠনের ৩০০ সদস্য রয়েছে, আরও ৪০০ সদস্য অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় আছেন, সবাইকে বলে দেয়া হয়েছে যেন জুন এবং জুলাই মাসের ভাড়া অর্ধেক মওকুফ করেন। তারপর পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত।
রাজশাহী বার্তা/admin