রাবি ছাত্রীকে ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেইল: মাহফুজ ঠাণ্ডা মাথার অপরাধী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেইলের ঘটনার মূল হোতা অর্থনীতি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাহফুজুর রহমান সারদ মুখ খুলছে না।
রিমান্ডের প্রথমদিনে তাকে ব্যাপক বিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজ বলছে, সে মেয়টিকে ধর্ষণ করেনি। অন্য আসামিদের সে চেনে না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিহার থানার এসআই আবদুর রহমান জানান, মাহফুজ ঠাণ্ডা মাথার অপরাধী। এর আগেও সে এমন কাজ করেছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে রাবি ছাত্রী ধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারী মাহফুজ। পুলিশের কাছে সে প্রমাণও রয়েছে।
পুলিশ জানায়, মাহফুজসহ গ্রেফতার হওয়া ৫ জন একই মেসে ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে থাকত। ২৪ জানুয়ারি রাতের ঘটনার পর তারা মেস ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। ৫ জনের ফেসবুকের পাতায় একই সঙ্গে ছবিও রয়েছে। তারপরও মাহফুজ জিজ্ঞাসাবাদে বলছে সে বাকিদের চেনে না।
ছাত্রীটির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে এবং তাকে সে ধর্ষণ করেনি। মাহফুজের এই দাবি প্রসঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুর রহমান বলেন, মাহফুজ নিজেকে বাঁচাতেই এমন দাবি করছে।
তার দাবির বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই। মাহফুজ ছাত্রীটিকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেছে- এটা ভিডিওতে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, মাহফুজের কাছ থেকে তথ্য বের করতে পুলিশ চেষ্টা করছে। এটা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধের ঘটনা। বাদীকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেয়া আমাদের এক নম্বর কর্তব্য। পাশাপাশি এই ধরনের অপরাধীদের শাস্তির মুখোমুখি করাও পুলিশের বড় দায়িত্ব।
জানা যায়, মাত্র কয়েক মাস আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে মাহফুজের সম্পর্ক হয়। ঘটনার আগে মাহফুজ মেয়েটিকে নিয়ে রাবি ক্যাম্পাসে ঘনিষ্ঠভাবে চলাফেরাও করত।
ছাত্রীটি তার কয়েকজন বান্ধবীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মির্জাপুর এলাকার হানুফার মোড়ের একটি মেসে থাকত। ওই মেসের বাইরে মাহফুজ মাঝে মাঝেই মেয়েটির সঙ্গে দেখা করত। মাঝে মাঝে ধারের নাম করে মেয়েটির কাছ থেকে টাকা-পয়সাও নিত।
মাহফুজুর রহমানের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বড়িকান্দি উপজেলায়। তার বাবার নাম মাহবুবুর রহমান। আরেক অভিযুক্ত প্লাবন তারিক তালুকদারের বাড়ি জয়পুরহাট সদরে।
রাফসানের বাড়ি রাজশাহীর বহরমপুরে। জয় ও জীবনের বাড়িও রাজশাহীতে। অন্যদিকে বিশাল নামের যে আসামিকে খুঁজছে পুলিশ তার বাড়িও রাজশাহীর মতিহারে।
আসামিদের মধ্যে রাফসান, প্লাবন, জয় ও জীবন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। তারা একসঙ্গে রাবি ক্যাম্পাসেও আড্ডা দিত বলে জানিয়েছেন রাবির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থনীতি বিভাগের এক ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. লুৎফর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি আগে কর্তৃপক্ষের নজরে আসেনি। কেউ অভিযোগও করেনি। ছাত্রীটি যদি অভিযোগ করে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি ছাত্রীটিকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।
উল্লেখ্য, ২৪ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলার সাকোপাড়ার একটি মেসে ওই ছাত্রীকে তার বন্ধু মাহফুজ একাধিকবার ধর্ষণ করে। যা ভিডিও করে তার ৫ সহযোগী।
রাজশাহী বার্তা/admin