পাবনায় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২৫
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় আসন্ন উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুইপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে।
পাবনা-৪ আসনের (আটঘরিয়া-ঈশ্বরদী) উপনির্বাচন উপলক্ষে সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আয়োজিত ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভা শুরুর আগে সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, উপনির্বাচনকে সামনে রেখে ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনকে অভ্যর্থনা জানাতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন দলীয় নেতারা।
অভ্যর্থনায় সামনে থাকাকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু এবং সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথার মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। এর রেশ ধরে তাৎক্ষণিকভাবে পৌর আওয়ামীলীগের এই দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এক পর্যায়ে অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ার একে-অপরের দিকে ছুঁড়তে থাকে। কেন্দ্রীয় নেতারাও তাদের থামাতে ব্যর্থ হন। পরে এই সংঘর্ষ দফায় দফায় অন্য নেতা-কর্মীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের মধ্যে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন যুবলীগ নেতা সানোয়ার হোসেন লাবু ও উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে রনি হোসেন। তাদের দুইজনকে প্রথমে পাবনা সদর হাসপাতাল ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা জানান, সংঘর্ষ ও ছুরিকাঘাতে তিনি নিজে, আওয়ামী লীগ নেতা আবু কালাম, মুলাডুলি ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কার মালিথা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবির মালিথা, পৌর যুবলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন বিপ্লবসহ ১২ জন আহত হযেছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, ‘এ ঘটনা নৌকার নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর উপনির্বাচনে নৌকার বিজয় লাভ করার মধ্য দিয়ে ষড়যন্ত্রের জবাব দেওয়া হবে।’ আর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা বলেন, ‘নির্বাচন বানচালের জন্য পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মিন্টু ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘর্ষ ঘটিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে ঈশ্বরদীর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার সঙ্গে ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের যে সকল নেতা-কর্মী জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দীন জানান, আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে সংঘর্ষ হয়েছে। শহরে পুলিশ মোতায়েন ও নিরাপত্তার জোরদার করা হয়েছে।
তবে কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানান তিনি।
রাজশাহী বার্তা/admin