নিয়ামতপুরে কলেজছাত্রীর মাথার চুল কেটে শ্লীলতাহানি
নওগাঁর নিয়ামতপুরে নিয়ামতপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে মাথার চুল কেটে শারীরিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে বখাটেদের বিরুদ্ধে। চুল কাটার পর কয়েক ঘণ্টা ধরে ওই ছাত্রীর আপত্তিকর অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছাড়ার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে তারা।
রোববার সন্ধ্যার আগে উপজেলা সদরের বালাহৈর জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের ঝাজিরা গ্রামের মতিউর রহমানের বিবাহিত ছেলে রায়হান আলমের সঙ্গে এক মাস আগে মোবাইল ফোনে নিয়ামতপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর পরিচয় হয়। কথা বলার এক পর্যায়ে রায়হান মেয়েটিকে খারাপ প্রস্তাব দেয়। ওই ঘটনার পর মেয়েটি রায়হানের সঙ্গে ফোনে কথা বলা বন্ধ করে দেয়।
এরপর নিয়ামতপুর উপজেলা সদরে কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেটের জন্য যাওয়া-আসার পথে রায়হান তার পথ আটকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করত। রোববার বিকালে নিয়ামতপুর উপজেলা সদরে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্রীকে জোর করে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। তাকে নিয়ে বালাহৈর বাজার এলাকায় পৌঁছলে রায়হানের সঙ্গে আরও তিন যুবক যোগ দেয়। পরে ওই ছাত্রীকে বালাহৈর বাজারে রায়হানের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানে ওই ছাত্রীকে আটকে রেখে বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রায়হান ও তার বন্ধুরা ওই তরুণীর আপত্তিকর ছবি তোলে। পরে ওই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ওই তরুণীকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চাপ দেয়া হয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা ওই তরুণীর মাথার চুল কেটে নেয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে বালাহৈর বাজারের লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হলে রায়হান ও তার বন্ধুরা মেয়েটিকে ছেড়ে দেয় এবং ওই তরুণী খারাপ চরিত্রের বলে প্রচার করতে শুরু করে। পরে স্থানীয় লোকজন নিয়ামতপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। খবর পেয়ে রোববার রাতে মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা।
ওই তরুণীর মুখে ঘটনা শোনার পর তার বাবা রায়হান ও অজ্ঞাত দুই যুবকের বিরুদ্ধে সোমবার নিয়ামতপুর থানায় মামলা করলে নিজ বাড়ি থেকে রায়হানকে দুপুরের দিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ওই তরুণী বর্তমানে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই তরুণীর বাবা অভিযোগ করেন, ওই বখাটেরা আমার মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এখন পর্যন্ত একজন গ্রেফতার হলেও আরও দুইজনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আমার মেয়ের আপত্তিকর ছবি রয়েছে তাদের মোবাইলে। যে কোনো মুহূর্তে তারা সেসব ছবি ছড়িয়ে দিতে পারে। তখন আমাদের সমাজে মুখ দেখানোর উপায় থাকবে না।