রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

সময়: 11:16 pm - February 5, 2021 | | পঠিত হয়েছে: 120 বার
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে আজ শুক্রবার রাত ৭.৩০টায় কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান এমপি। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার। মতবিনিময় সভা শুরুর পূর্বে প্রধান অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের নেতৃবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, রাজশাহী মহানগরের আহ্বায়ক আলিমুল হাসান সজল ও সদস্য সচিব মীর ইসতিয়াক আহম্মেদ লিমন সহ নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাজাহান খান বলেন, বঙ্গবন্ধু কোন সাধারণ মানুষ ছিলেন না, ছিলেন মহামানব। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যখন বঙ্গবন্ধু সহ আগরতলা মামলার সকল আসামীকে বিচারের জন্য জেলখানা হতে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তখন তিনি প্রিজন ভ্যানে দেশাত্মবোধক গান গাইছিলেন। সঙ্গে থাকা অন্যরা যখন অবাক হয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলো যে, মুজিব ভাই আপনি গান গাইছেন, আমাদের যে বিচার হবে, বিচারে সাজা হবে। তাদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেন, ওরা আমাদের কিছুই করতে পরবে না। বাংলার মুক্তিকামী জনগণ আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে আমাদের মুক্ত করে আনবে। দেশে সাধারণ নির্বাচন হবে, সে নির্বচানে আমরা জয়ী হবো। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠি পরাজয়ের গ্লানি মেনে নিতে পারবে না। আর পারবে না বলেই জনগণের প্রতিনিধির হাতে তারা ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। দেশে মুক্তিসংগ্রাম শুরু হবে এবং পাকিস্তানীদের কবল হতে দেশ একদিন মুক্ত হবেই হবে। তাঁর কথা সত্য প্রমানিত হয়েছিলো। বাঙ্গালী মুক্তিসংগ্রামে অংশ নিয়ে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে।
তিনি আরও বলেন, রক্ত কথা বলে, আর রক্ত কথা বলে বলেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবেই দেশরত্ন শেখ হাসিনা সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশে উন্নীত হবে শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে।
সভাপতির বক্তব্যে এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে দেশে আজ উন্নয়ন দৃশ্যমান, যা জনগণ প্রত্যক্ষ করছে। শেখ হাসিনা’র উন্নয়নে ঈর্ষানি¦ত হয়ে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি আজ নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কোন ষড়যন্ত্রই দেশের উন্নয়নের চাকা থামিয়ে রাখতে পারবে না। দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ একটি রোল মডেল। পৃথিবীর অনেক দেশ বাংলাদেশকে অনুসরণ করে।
তিনি একটি দলকে ইঙ্গিত করে বলেন, তারা কোনদিনই জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করেন নি। তারা যখন ক্ষমতাই থাকে তখন লুটপাটের রাজনীতি। আর বিরোধী দলে গেলে জ্বালাও পোড়াও ও দেশ ধ্বংসের রাজনীতি ছাড়া জাতিকে আর কিছুই দিতে পারে নি। রাজপথের রাজনীতিতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি তাদের ব্যর্থতার গ্লানি ঢাকতে বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপ-রাজনীতি বেছে নিয়েছেন।
তিনি বিএনপি’র চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্যে বিএনপি’র নেতৃবৃন্দকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, কোমরভাঙ্গা নেতৃত্ব দিয়ে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি করতে হলে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রয়োজন।
মোঃ ডাবলু সরকার বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে আমার পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদের পরাজিত চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিলাম। কিন্তু এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, পাকিস্তানীদের দোসর এদেশীয় রাজাকার-আলবদরদের সন্তানরা এখনও বাংলাদেশের রাজনীতিতে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। রাজাকার-আলবদরদের ষড়যন্ত্রের ফলেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর জেল হত্যা করে বাংলার মাটিতে কলঙ্কিত ইতিহাস রচনা করেছিলো। তাদেরই সন্তানরা আজ ঐ কুলাঙ্গার তারেক জিয়ার নেতৃত্বে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে দেশের ভাবমূর্তি ও মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করার জন্য হেন ষড়যন্ত্র যে তারা করছে না। তারা তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার জন্য আল-জাজিরা-কে বেছে নিয়েছে। কি এই আল-জাজিরা? এই আল-জাজিরা হলো জঙ্গীবাদের মদদপুষ্ট একটি গণমাধ্যম। আমাদের দেশে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছিলো, তখন এই আল-জাজিরা সারাবিশ্বে প্রচার করেছিলো যে, ইসলামী নেতাদের হত্যা করা হচ্ছে। হেফাজত যখন দেশে সরকার উৎখাতের নামে তান্ডব লীলা চালাচ্ছিলো। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যখন তাদের প্রতিহত করেছিলো, তখন আল-জাজিরা বলেছিলো শত শত মানুষ হত্যা করা হয়েছিলো। কিন্তু তার কোন প্রমান তারা দিতে পারে নি। কারণ আল-জাজিরা একটি ভিত্তিহীন জঙ্গীবাদের মদদপুষ্ট একটি গণমাধ্যম।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগর কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ, থানা আওয়ামী লীগ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর