বিলুপ্তির পথে খেজুর রস
নেই পর্যাপ্ত খেজুর গাছ। শীতের সকালে বাতাসে নেই রসের সুমধুর গন্ধ। রস ও গুড় তৈরি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কৃষকের মনেও নেই বাড়তি আনন্দ। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে খেজুর গাছ এখন চরাঞ্চল থেকে অনেকটা বিলুপ্তির পথে। নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চিত্র এটি। গাছি, কৃষক, উপজেলা কৃষি অফিসের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
হাতিয়ার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেজুর গাছ রয়েছে নিঝুম দ্বীপ ও জাহাজমারা ইউনিয়নে। এ দুটি ইউনিয়নে অনেকে আদি বংশধর থেকে গাছি (খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহকারী)। এদের মধ্যে কেউ শুধু গাছ কাটার কাজ করে, কেউ গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ পেশায় এখন পারিবারিক ব্যয় নির্বাহ হয়না বলে অনেকে পাশাপাশি কৃষি কাজও করেন বলে উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের উত্তর সোনাদিয়া গ্রামের গাছি মোজাম্মেল হোসেন (৫৭) জানান।চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বেড়ীর ওপরে বসবাসকারী গাছি সেকান্তর মিয়া (৬৫) জানান, এক সময় হাতিয়ায় শীতের সকালে রসের সুমধুর গন্ধে গাছির বাড়ির চার পাশে মুখরিত হয়ে যেত। বড় তাবাত (রস জাল দেওয়ার বড় পাত্র) করে রস জাল দিত গাছিরা। এখন রস অনেক কম পাওয়ায় ছোট পাতিল ব্যবহার করে গুড় তৈরি করছে গাছিরা।
হাতিয়া কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন জানান, বয়স বেদে খেজুর গাছের আয়ুকাল অনেক কম। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক গাছ মরে গেছে। নতুন করে কৃষকরা খেজুর গাছ রোপণ না করায় রস উৎপাদন অনেকাংশে কমে গেছে।তিনি আরও জানান, রস সংগ্রহে অপরিষ্কার পাত্র ব্যবহার ও পাখির মুখ দেওয়াতে নানান রোগ ছড়াতে পারে বলে কোনও ধারনাই নেই হাতিয়ার গাছিদের। এতে রস এখন বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার অনেক কমে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-এ আলম জানান, সরকারিভাবে তালগাছ লাগানোর একটি প্রকল্প সরকার বাস্তবায়ন করছে । অনুরূপভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় কৃষকদের প্রণোদনা দিয়ে খেজুর গাছ রোপণ করলে খেজুর রস ও গুড় এ শিল্প অনেক সম্পসারিত হবে।
রাজশাহী বার্তা/admin