নির্বাচন কমিশনে অভিযোগের পরেও শিবগঞ্জের মর্দানা উত্তপ্ত : ককটেল বিস্ফোরণে মামলা
আগামী ৩১ মার্চ বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে স্থগিত হওয়া শিবগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ভোট গ্রহণ। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি পানির বোতলের প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী খাইরুল আলম জেম সুষ্ঠ নির্বাচনের লক্ষে নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ওই এলাকার কতিপয় ব্যক্তি নির্বাচনে বিভ্রান্তি ও বিশৃংখলার আশঙ্কা রয়েছে মর্মে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জানা গেছে- আগামী ৩১ মার্চ নির্বাচনের পূর্বেই এলাকার কিছু লোকেরা ককটেল ফাটিয়ে জনমতে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে এবং প্রায় এক বছর আগে যারা গ্রাম ছাড়া হয়েছিল, তারা ভোট দেয়ার জন্য এলাকায় প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটে। এতে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দায়ী করে। এদিকে দেওয়ার দুইদিনের মাথায় পুনরায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মর্দানা গ্রাম। গেল ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৭০টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতেই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে ২৪টি ককটেল। এতে কোন হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্ক বিরাজ করছে বিচ্ছিন্ন ওই গ্রামটিতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মর্দানা গ্রামে গত বুধবার দুপুরে পুলিশের টহল জোরদার লক্ষ্য করা গেছে। গ্রামের রাস্তাঘাট ফাঁকা এবং অনেকটায় পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। কয়েকজন সাধারন ভোটার নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, গত ১৫ বছর ধরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলে আসছে মর্দানা গ্রামে। এ সব সহিংসতায় অন্তত ৬ জন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। অসংখ্য বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। এ ব্যাপারে উটপাখি প্রতীকের প্রার্থী গোলাম আজম অভিযোগ করে জানান, একাধিক মামলা মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন পলাতক ছিল প্রতিপক্ষ পানির বোতলের প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেম। গত ২২ মার্চ সোমবার নির্বাচন কমিশনে একটি মনগড়া অভিযোগ দিয়ে সে অভিযোগটি প্রতিষ্ঠিত করতেই গত ২৩ মার্চ মঙ্গলবার জেম তার নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে শোডাউন দিতে দিতে এলাকায় ঢুকে এবং বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অপরদিকে প্রতিপক্ষ পানির বোতলের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেম অভিযোগগুলো অস্বীকার করে জানান, আমাকে নির্বাচন থেকে দুরে রাখতে একটি পক্ষ হামলা-ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আমার উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। আমি বেশকিছুদিন যাবত অসুস্থ হয়ে ঘরবন্দি রয়েছি। শিবগঞ্জ থানার ওসি ফরিদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। সেখানে বিপুল পরিমান পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওসি আরও জানান, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলায় কামাল নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর হাট এলাকায়। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগামী ৩১ মার্চ নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন দুটি ভোট কেন্দ্রে দুজন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র্যাব, গ্রাম পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকবেন। সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারী শিবগঞ্জ পৌরসভায় নির্বাচন হলেও ৯নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুস সালামের মৃত্যুজনিত কারণে ওই পদে নির্বাচন স্থগিত করে ৩১ মার্চ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। এর আগে মেয়র ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন সম্পন্ন হয়।
রাজশাহী বার্তা/admin