তুলে নেয়া হচ্ছে রাজশাহীর সেই ‘প্রজাপতি সড়কবাতি’
রাজশাহী মহানগরীর বিলশিমলা থেকে কাশিয়াডাঙ্গা পর্যন্ত ৪ দশমিক ২ কিলোমিটার সড়কের ১৭৪টি ‘প্রজাপতি সড়কবাতি’ খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে আবারও ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে সড়ক বিভাজন। বুধবার (৭ এপ্রিল) থেকে সড়কবাতির খুঁটিগুলো খোলার কাজ শুরু হয়।
এর আগে বছরের প্রথম কালবৈশাখী ঝড়ে উপড়ে পড়ে ৬৯ দৃষ্টিনন্দন প্রজাপতি সড়কবাতি। মাত্র কয়েকটি বাদে সবগুলো পোল হেলে পড়ে। রাসিকের এই সড়কবাতি বসানোর কাজটি পেয়েছিল ‘হ্যারো ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
অভিযোগ উঠেছে, কংক্রিটের যে স্তম্ভের ওপর খুঁটিগুলো বসানো হয়েছিল সেটি শিডিউল অনুযায়ী হয়নি। আকারে ছোট সেই স্তম্ভটি সামান্য একটু মাটিতে পুঁতেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বেলে মাটির ওপর স্তম্ভটি কম করে পোঁতার কারণে ঝড়ে সেটি গোঁড়া থেকেই উপড়ে যায়।
এর পরদিন সোমবার সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সরেজমিনে খুঁটিগুলো পরিদর্শনে যান। এ সময় তিনি খুঁটিগুলোর সবই তুলে নেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর কংক্রিটের স্তম্ভটি বেশি করে পোঁতার পর তার ওপরে আবারও খুঁটিগুলো স্থাপনের নির্দেশনা দেন। সে অনুযায়ী বুধবার থেকে খুঁটিগুলো কংক্রিটের কাঠামো থেকে খুলে ফেলা হচ্ছে।
বুধবার বিকেলে নগরীর ডিঙ্গাডোবা এলাকায় দুটি ক্রেনের সাহায্যে খুঁটিগুলো খুলে ফেলছিলেন শ্রমিকেরা।
তারা জানান, সড়কবাতির খুঁটিগুলো খুলে নগরীর সিটিহাট এলাকার এক গুদামে রাখা হচ্ছে। সব খুঁটি সরিয়ে নেয়ার পর কংক্রিটের কাঠামোটি তোলা হবে। তারপর সেটি আরও একটু বেশি করে মাটির নিচে পোঁতা হবে। পরে সড়কবাতির খুঁটিগুলো এনে কংক্রিটের কাঠামোর ওপর আবারও স্থাপন করা হবে।
রাসিক সূত্র জানায়, এই কাজের শর্ত অনুযায়ী- এক বছরের মধ্যে কোনো ক্ষতি হলে তা নিজ খরচে ঠিক করে দেবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। যেহেতু ত্রুটি থাকার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তাই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকেই আবার সবকিছু নতুন করে বসাতে বলা হয়েছে। শর্ত অনুযায়ী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী আশরাফুল হুদা টিটো বলেন, ‘কংক্রিটের কাঠামোটি বেশি করে পুঁতে দিলে সড়কবাতির দৃষ্টিনন্দন নিচের অংশটি আইল্যান্ডে ঢাকা পড়ছিল। ওপরের প্রজাপতির মতো অংশটিও নিচু হয়ে যাচ্ছিল। সে কারণে কংক্রিটের কাঠামোটি কম করে পোঁতা হয়েছিল। এখন মেয়র আবারও নতুন করে কাঠামোটি তুলে আরও বেশি করে মাটির নিচে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে সব কাজ শেষ করা যাবে।’
উল্লেখ্য, হ্যারো ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন এর আগে রাসিকের ১৬টি ফ্লাড লাইট বসানোর কাজ করেছে। ৯ কোটি ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৭ টাকা ব্যয়ে নগরীর ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফ্লাড লাইটগুলো বসানো হয়। এই কাজেই ছয় কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টি অনুসন্ধান করছে। এর মধ্যেই ৫ কোটি ২২ লাখ টাকার প্রজাপতি সড়কবাতি বসানোর কাজ পায় এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
রাজশাহী বার্তা/admin