পুলিশ কনস্টেবল কর্তৃক প্রেমিকা হত্যা ও লাশ গুম: আটক ০৩

সময়: 2:44 am - April 19, 2021 | | পঠিত হয়েছে: 272 বার

রাজশাহী মহানগরীর সিটি হাট এলাকায় ডোবায় ফেলে যাওয়া  ড্রামের ভেতর থেকে  শুক্রবার উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত নামা তরুণীর লাশের পরিচয় মিলেছে।

তরুনীর নাম  ননিকা  রানী। বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদরের মিলনপুর।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পায় তার ভাই। তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় তরুনীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আজ রাত ৯ টায় শাহমখদুম থানার ওসি সাইফুল ইসলাম  সরকার  মর্গ থেকে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।

 

ননিকা রাজশাহী সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা পাস করেন গত বছর। নগরীর পাঠানপাড়া এলাকার একটি ছাত্রী মেসে থাকতেন। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের  রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই রাজশাহী। গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে রাজশাহী রেল পুলিশের কনস্টেবল নিমাই সহ ৪ জনকে।

 

প্রেমিকা হত্যা ও লাশ গুম ঘটনার সহিত জড়িত মূল আসামী ১। নিমাই চন্দ্র সরকার (৪৩), পিতা-মৃত হেমান্ত সরকার, সাং-চরাডাঙ্গা, থানা-আতাইকুলা, জেলা-পাবনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পিবিআই, রাজশাহীর একটি চৌকশ পুলিশ টিম আজ ১৮/০৪/২০২১ ভোর রাতে নাটোরের লালপুরস্থ আসামীর বোন-জামাই’র বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

 

গত ইং-১৬/০৪/২০২১ তারিখ সকাল ১০.৩০ ঘটিকার সময় রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানাধীন সিটি হাটের অনুঃ ৩০০ গজ পশ্চিমে ইউনাইটেড কলেজের সামনে উত্তর পার্শ্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ টু রাজশাহী বাইপাস মহাসড়কে কালভার্টের নীচে কচুরীপানা যুক্ত পানিতে চালের ড্রামের মধ্যে অজ্ঞাতনামা একজন মহিলার অর্ধ গলিত লাশ পাওয়া যায়। বয়স অনুঃ ২২ বছর । মৃতার গলায় কালো ওড়না দ্বারা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করিয়া কে/কাহারা হত্যা করিয়া চাউল রাখার প্লেইন সিট ড্রামের মধ্যে ভরে ঘটনাস্থল ব্রীজের নিকট পানিতে ফেলিয়া দিয়া যায়। পরবর্তীতে শাহমখদুম থানা পুলিশ সংবাদ পাইয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইয়া মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন এবং মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্নয়ের জন্য লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহীতে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে  শাহমখদুম থানার এস,আই(নিঃ) মোঃ আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করিলে মামলা রুজু হয়।

 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পিবিআই, রাজশাহী জনাব আবুল কালাম আযাদ মহোদয়ের নির্দেশে লাশ সনাক্তের জন্য পিবিআই, রাজশাহীর একটি চৌকশ পুলিশ টিম ঘটনাস্থল হইতে লাশের আঙ্গুলের ছাপ নিয়া সনাক্তের চেষ্টা করাকালে ডিসিস্টের (ভিকটিম) পরিচয় সনাক্ত হয়। ডিসিস্টের নাম শ্রীমতি ননিকা রানী রায় (২৩), পিতা-শ্রী নিপেন চন্দ্র বর্মন, মাতা-শ্রীমতি শান্তি রানী, গ্রাম-মিলন পুর (গড়েয়া), থানা ও জেলা-ঠাকুরগাঁও বলিয়া জানা যায়। পরিচয় সনাক্তের পর পিবিআই, রাজশাহী টিম পাবনা ও নাটোর জেলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করিয়া মামলার ঘটনার সহিত জড়িত মূল আসামী ১। নিমাই চন্দ্র সরকার (৪৩), পিতা-মৃত হেমান্ত সরকার, সাং-চরাডাঙ্গা, থানা-আতাইকুলা, জেলা-পাবনাকে গ্রেফতার করে। এরপর ধৃত আসামীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সহিত জড়িত অপরাপর আসামী ২। মোঃ কবির আহম্মেদ (৩০), পিতা-মোঃ জয়নাল আবেদীন, গ্রাম-আদারী পাড়া, থানা-কাশিয়াডাঙ্গা, মহানগর রাজশাহী ৩। মোঃ সুমন আলী (৩৪), পিতা-নরুল ইসলাম, গ্রাম-শ্রীরামটিবাধ, থানা-রাজপাড়া. মহানগর রাজশাহী দ্বয়কে গ্রেফতার পূর্বক জিজ্ঞাসাবাদে তাহারা তাহাদের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার নিজ নিজ ভুমিকার জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে। তাহাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিসিস্টের মৃতদেহ গুম করার কাজে বহনকারী মাইক্রোবাস যাহার রেজিষ্টেশন নং-ঢাকা মেট্রো-গ-১৩-১৮২৮ উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয় এবং মাইক্রোবাসের চালক ৪। মোঃ আব্দুর রহমান@সঞ্জয় (নব মুসলিম) (২৫), পিতা-শ্রী সতীশ রায়, গ্রাম-বিলশিমলা, থানা-রাজপাড়া, মহানগর রাজশাহী কে গ্রেফতার পূর্বক ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে সেও ঘটনায় তাহার ভুমিকার কথা স্বীকার করে।

 

মূল আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার সহিত জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে আরোও জানায়, ডিসিস্ট শ্রীমতি ননিকা রানী রায় এর সহিত তাহার অনুমান ৬/৭ বছর হইতে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই কারনে ডিসিস্ট ধৃত আসামী নিমাই চন্দ্র সরকার কে বিবাহের জন্য চাপ প্রয়োগ করিলে সে কৌশলে তাহার ভাড়া বাড়ীতে ডিসিস্টকে ডেকে নিয়ে হত্যা করিয়া লাশ গুমের উদ্ধেশ্যে ঘটনাস্থলে ফেলে দেয়। ধৃত আসামীদের প্রদত্ত্ব তথ্য মোতাবেক ঘটনার সহিত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আলামত উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর