বগুড়ায় বাফার গুদামে শ্রমিকদের কর্মবিরতি

সময়: 9:39 pm - April 19, 2021 | | পঠিত হয়েছে: 80 বার

বগুড়া তিনমাথা রেলগেট এলাকায় অবস্থিত বাফার গুদামে কর্মবিতরতি পালন করেছে শ্রমিকরা। আব্দুর রহমান নামে একজন শ্রমিক কে ছাটাই করার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে এই কর্মবিতরতি পালন করে জেলা বিসিআইসি সার গুদাম কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা।

 

এছাড়াও আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঐ শ্রমিক কে কাজে যোগদান করানো না হলে বৃহত্ত্র আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

 

এ বিষয়ে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাফার কর্মকর্তাবৃন্দ ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ১১ই মার্চ নগরবাড়ি ঘাট থেকে ২১ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারবাহী একটি ট্রাক যার নং-বগুড়া –ট-১১-০৬৭৫ বগুড়া বাফার গুদামে আসে এবং ঐ ট্রাক থেকে শুধুমাত্র ১ টন সার এই গুদামে আনলোড হবে। এরপর ঐ অফিসের লোকজন যথারীতি ট্রাক থেকে সার আনলোডের সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে ট্রাক টিকে বিদায় করে দেয়। পরবর্তীতে ঘন্টা খানেক পর কর্মকর্তাদের নজরে আসে যে উক্ত নম্বরের ট্রাক থেকে কোন সার আনলোড না করেই তাকে চালান দিয়ে দেয়া হয়েছে। তৎক্ষনাত ঐ ট্রাকটিকে আবারো ডেকে ১টন সার আনলোড করানো হয়। এদিকে এ সমস্ত ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় আব্দুর রহমান নামক একজন কুলি শ্রমিক কে। অফিস থেকে বলা হয় যে ঐ আব্দুর রহমান অসৎ উদ্দেশ্যে ঐ ট্রাক থেকে সার আনলোড না করে আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেছিল। যার ফল শ্রুতিতে তাকে ঐ গুদামের সমস্ত কাজ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়ে নোটিশ ঝুলানো হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে অন্যন্য কুলি শ্রমিকদের ভিতরে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করে এবং তারা একত্রে হয়ে বিষয়টির সুরাহার জন্য বাফার গুদামের ব্যবস্থাপক মোস্তাফা কামালের নিকট ধর্ণা দিতে থাকে। কিন্তু এক দিন দুই দিন করে বিষয়টি মাস পেরিয়ে গেলেও কোন সমাধান হয়নি।

 

এরই জের ধরে আজ সকাল থেকে সকল কুলি শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আন্দোলন শুরু করেছে। বিষয়টি সর্ম্পকে গুদামের ব্যবস্থাপক মোস্তফা কামালে নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত ১১ মার্চের ঘটনায় প্রতারনার অভিযোগ সহ আরো অনেক অনিয়মের বিষয়ে আব্দুর রহমানকে কাজ থেকে অব্যাহতির জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিলয় এন্টার প্রাইজ কে লিখিতভাবে জানানো হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ঐ প্রতিষ্ঠান আব্দুর রহমান কে সমস্ত কাজ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন।

 

এদিকে মেসার্স নিলয় এন্টার প্রাইজের সত্ত্বাধীকারী গোলাম রব্বানী জানান, আমরা অফিস থেকে তার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েই ব্যবস্থা নিয়েছি।

 

এদিকে অভিযুক্ত আব্দুর রহমান তার বিষয়ে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান তিনি শুধুমাত্র কিছু ব্যক্তির ব্যক্তি আক্রোশের স্বীকার হয়েছেন। সেদিন ঐ ট্রাক আনলোডের সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি অন্য ট্রাকের মাল লোড আনলোডের দায়িত্বে ছিলেন।

 

এ ব্যাপারে ট্রাক ড্রইভার সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি যখন সারবাহী ট্রাক নিয়ে গুদামে যাই তখন আব্দুর রহমান আমার ট্রাকের কোন দায়িত্বে ছিল না। ওখানকার ব্যবস্থাপকের হাতে আমি চালান পত্র দিয়েছিলাম। যার কারনে আব্দুর রহমানের দোষী হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।

 

জেলা বিসিআইসি সার গুদাম কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাফিজার রহমান বাবু বলেন, আগামী ২৪ঘন্টার মধ্যে বরখাস্তকৃত শ্রমিক আব্দুর রহমানকে কাজে যোগদান করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

 

এদিকে আন্দোলনরত শ্রমিকরা একটি প্রশ্ন তুলেছেন যে, যেখানে কোন চালানের সহি সাক্ষর ছাড়া একটি ট্রাকও মাল লোড আনলোড করতে পারে না। সেখানে এতবড় একটি ঘটনার দায় কেন শুধুমাত্র একজন কুলি শ্রমিকের উপর চাপিয়ে দেয়া হলো? এর  দায়ভার বাফার গুদামে কর্মরত কর্মকর্তাদের উপর কি বর্তায় না? এ বিষয়ে আশু সমাধানের জন্য শ্রমিকরা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর