ঈশ্বরদীতে গৃহবধুকে গলা কেটে হত্যায় গ্রেপ্তার ২

সময়: 9:32 pm - April 30, 2021 | | পঠিত হয়েছে: 211 বার

ঈশ্বরদীতে মোছা. মুক্তি খাতুন রিতা (২৭) নামে এক গৃহবধূকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান।

গ্রেপ্তাররা হলেন শরিফ সরকার (২০) ও হেলাল সরকার (২২)। তাদের বাড়ি নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল চরগোবিন্দপুর গ্রামে।

তারার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই জাকির হোসেন।

লোমহর্ষক এ হত্যার ঘটনায় নিহত গৃহবধূ রিতার বাবা মোজাফ্ফর হোসেন বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঈশ্বরদী পৌরসভার মশুড়িয়া পাড়া এলাকায় মুক্তি খাতুন রিতাকে গলা কেটে নৃশংশভাবে হত্যা করা হয়। রিতা ওই এলাকার বায়োজিদ সারোয়ারের স্ত্রী।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।

হত্যাকান্ডের সময় রিতার শাশুড়ি মোছা. নিলিমা খাতুন বেনুকেও (৫৫) গলা টিপে ও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তবে তার চিৎকারে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়।

হত্যাকারীরা সংখ্যায় পাঁচজন ছিল বলে নিলিমা খাতুন বেনু উপস্থিত পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানান।

পাবনা পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খাঁন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীর, পৌর মেয়র মো. ইছাহক আলি মালিথা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

নিহত গৃহবধুর শাশুড়ি নিলিমা খাতুন বেনু জানান, তার ছেলে বায়োজিদ সারোয়ার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরি করেন। সেই সুবাদে বায়োজিদ সারোয়ার বেশ কিছু মানুষকে রূপপুর প্রকল্পে চাকরিও দিয়েছেন। ঘটনার দিন বেলা ১১টার সময় পাঁচ যুবক চাকরির জন্য বাড়িতে আসে। বায়োজিদ সেই সময় বাজারে থাকায় ড্রয়িং রুমে বসিয়ে তাদের আপ্যায়ন করেন পুত্রবধূ মোছা. মুক্তি খাতুন রিতা। সে সময় তিনি তার ঘরে কোরআন পড়ছিলেন। হঠাৎ হত্যাকারীরা তার ঘরে ঢুকে গলা টিপে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। সে সময় তিনি চিৎকার করলে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তিনি পুত্রবধূর ঘরে গিয়ে তার গলা কাটা লাশ পরে থাকতে দেখেন। হত্যাকারীদের মধ্যে তিনি একজনকে চিনতে পেরেছেন। তার নাম সাব্বির হাসান, বাড়ি নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল চরগোবিন্দপুর গ্রামে। বাকিদের মুখে মাস্ক থাকায় তিনি চিনতে পারেননি বলে জানান।

নিহত গৃহবধু রিতার স্বামী বায়োজিদ সারোয়ার জানান, তিনি রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাংলা পাওয়ার কোম্পানিতে চাকরি করেন। রূপপুর প্রকল্পে চাকরির জন্য তার নানীর বাড়ির এলাকা থেকে কিছু মানুষ বাড়িতে আসবে তাই বাজারে গিয়েছিলেন বাজার করতে। এসে দেখেন তার স্ত্রী মুক্তি খাতুন রিতাকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে গেছে তারা। তিনি কাউকে দেখেননি। তবে তার মায়ের কাছ থেকে সব শুনেছেন।

এলাকাবাসী জানান, বায়োজিদ সারোয়ার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরির কারণে টাকার বিনিময়ে অনেক মানুষকে চাকরি দিয়েছেন। হয়তো চাকরির জন্য টাকা-পয়সা লেনদেনর বিষয়ে এ হত্যা।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, অনেকগুলো বিষয় নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এর মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। কী কারণে রিতাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে তা এখনই বলা যাবে না আরো সময় লাগবে।

তিনি বলেন, সিআইডির বিশেষ টিম এসে আলামত সংগ্রহ করে গেছে। দু’এক দিনের মধ্যেই সব পরিস্কার হয়ে যাবে।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর