বন্ধু কি আপনাকে বদলে দিচ্ছে?
নতুন বছরের শুরুতে অনেকেই তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করে থাকেন। কেউ কেউ খাদ্যাভাস থেকে অস্বাস্থ্যকর খাবার বাদ দেয়ার পরিকল্পনা করেন। কেউ কেউ সিদ্ধান্ত নেন নিয়মিত শরীরচর্চা শুরু করবেন।
কিন্তু আমরা কি জানি যে আমাদের পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধবও আমাদের স্বাস্থ্যের ভাল-মন্দে প্রভাব রাখেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি হলো, ধূমপান বা অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের মতো খারাপ অভ্যাসগুলো আমরা নিকটজনের প্রভাবেই শুরু করি।
আমরা যেসব মানুষকে গুরুত্ব দেই। বা আমাদের জীবনে যে সম্পর্কগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি, যাদের সঙ্গে আমাদের ওঠাবসা করি তাদেরকে নিয়ে ‘ফ্রামিংহ্যাম হার্ট’ গবেষণা করেছে সামাজিক যোগাযোগের প্রভাব সম্পর্কে। ম্যাসাচুসেটস শহরের ফ্রামিংহ্যাম এর বাসিন্দাদের তিন প্রজন্মের সদস্যদের মধ্যে।
গবেষণা বলছে, বন্ধুদের গ্রুপে একজন যদি স্থুল হয় তাহলে অন্যদের স্থুল হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। গবেষণামতে ঘনিষ্ঠ বন্ধু স্থুল হলে অপর বন্ধুর স্থুলতার আশঙ্কা ৫৭% বেড়ে যায়। ভাই/বোন স্থুল হলে সেই আশঙ্কা ৪০% এবং স্বামী বা স্ত্রী স্থুল হলে ৩৭%। নিকটজন একই লিঙ্গের হলে মানুষ প্রভাবিত হয় বেশী।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিবেশীরা বেশী ঘনিষ্ঠ না হলে তাদের সঙ্গে প্রতিদিন দেখা হলেও তারা সেভাবে প্রভাবিত করেন না। বন্ধুত্বের সম্পর্কে যদি ভারসাম্য না থাকে তাহলে দেখা যায় স্থুল বন্ধুকে বেশী গুরুত্ব দিলে অপর বন্ধু নিজের ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করে। পরিবার এবং বন্ধুত্বের প্রভাব বিবাহ বিচ্ছেদ, ধূমপান এবং মদ্য পানের ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায়।
সামাজিক যোগাযোগও আমাদের আচরণ ও মানসিক অবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে। বন্ধুদের প্রভাবে তরুণদের মধ্যে ধূমপানে আসক্ত হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশী।
বন্ধুদের কারণে তরুণদের মধ্যে বিষাদগ্রস্থতার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। এক বন্ধু বিষাদগ্রস্থ হলে অন্যের মধ্যেও তা সঞ্চারিত হয়। তবে এটা চরম হতাশার পর্যায়ে যায় না সাধারণত। তবে সেই আশঙ্কা থেকেই যায়।
গবেষণার এসব তথ্য বিবেচনা করতেই হয়। কারণ বাংলায় একটা কথা চালু আছে, ‘সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে।’
রাজশাহী বার্তা/admin