ঈদের আগে রাজশাহীর বাজারগুলোতে মানুষের ঢল

সময়: 5:40 pm - May 13, 2021 | | পঠিত হয়েছে: 183 বার

ঈদের আগের দিনও রাজশাহীতে মানুষের ঢল বাজারের দিকে। তাই শহরজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। রিকশা-অটোরিকশার এই জট সামাল দিতে ঘাম ঝরছে ট্রাফিক পুলিশের। বৃহস্পতিবার (১৩ মে) নগরীতে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

 

সকালে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অসহনীয় যানজট। সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট থেকে রাজশাহী কলেজ পর্যন্ত প্রায় আধাকিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে রিকশা-অটোরিকশার কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগছে।

 

এই সড়কটির একপাশে নগরীর আরডিএ মার্কেট। এই মার্কেটের সামনে ফুটপাতে বসেছে টুপি, আতর-সুরমা, কসমেটিকস, ইমিটেশন, ছেলেদের বেল্টসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দোকান। রাস্তার অপর পাশে ফুটপাতেই বসেছে শাড়ি-লুঙ্গিসহ হকারদের অস্থায়ী দোকানপাট। এসবের ভেতর দিয়েই রাস্তার ওপর দিয়ে ব্যাগ হাতে হেঁটে যাচ্ছেন মানুষ।

 

রাস্তা পারাপারেও বেশিরভাগ মানুষ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করছেন না। বাজার করতে আসা বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের রাস্তা দিয়েই চলাচলের কারণে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট।

 

সাহেববাজার এলাকায় একদল পুলিশ সদস্যকে যানজট মোকাবিলায় কাজ করতে দেখা গেছে। হ্যান্ড মাইকে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, কোন রিকশা-অটোরিকশা যেনো না দাঁড়ায়। কিন্তু মানুষের চলাচলের কারণে রিকশা-অটোরিকশার চালকদের ব্রেক কষতেই হচ্ছিলো। পুলিশের ওই ঘোষণায় কোনো কাজই হচ্ছিলো না। রাস্তা ও ফুটপাতে মানুষ ঠাসাঠাসি করে যাতায়াত করছিলেন।

 

রাজশাহী কলেজের সামনে থেকে সাহেববাজার হয়ে জিরোপয়েন্টে এসে অটোরিকশার চালক আবু জাফর (৩০) বলেন, এইটুকু পথ পাড়ি দিতে তার ২৫ মিনিট সময় লাগলো। আগে জানলে অন্য রাস্তা ঘুরে এইটুকু পার হতেন।

 

জাফর বলেন, দিনে এইটুকু রাস্তা পাঁচ-ছয়বার পার হতে গেলে দিন এখানেই শেষ হবে। অন্য কোথাও আর গাড়ি চালানো লাগবে না।

 

নগরীর রেলগেট, লক্ষ্মীপুর, নিউমার্কেট, শিরোইলসহ অন্যান্য এলাকাতেও তীব্র অটোজট দেখা গেছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার অনির্বান চাকমা বলেন, শহরে কয়েকদিন ধরেই যানজট দেখা যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার আরও বেশি। যানজট ঠেকাতে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি তাই থানা পুলিশও কাজ করছে। তাও যানজট ঠেকানো যাচ্ছে না।

 

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাত থেকে মার্কেটের ভেতর-সবখানেই মানুষের ভিড়। ঈদের শেষ মূহুর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সবাই। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মানা বলতে ছিলো শুধু মাস্ক। এর বাইরে বাজারে স্বাস্থ্যবিধির কিছুই ছিলো না। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সরকারের তরফ থেকে কড়া নির্দেশনা থাকলেও স্থানীয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কোনো চেষ্টা করতেও দেখা যায়নি।

 

বাজারে মানুষের এমন হুড়োহুড়িতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও ক্রেতাদের পেয়ে খুশি ব্যবসায়ীরা। আরডিএ মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান বলেন, লকডাউনের মধ্যে ব্যবসায়ীদের অবস্থা খুব খারাপ ছিলো। বাজার খুলে দেওয়ার পর তারা কিছুটা ব্যবসা করতে পারছেন। হঠাৎ মঙ্গলবার দুপুরে বৃষ্টি শুরু হলে ক্রেতা কমে যায়। বুধবার মার্কেটে আবার ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। বৃহস্পতিবারও মানুষ কেনাকাটা করছেন। এ দিন বেচাবিক্রিও বেশ ভালো হচ্ছে।

 

বাজারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত না হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, আসলে মানুষ সচেতন না হলে কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। মানুষের যদি মৃত্যুর ভয় না থাকে, তাহলে প্রশাসন কতোটুকু স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পারে! তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। দোকান মালিকদের বলা আছে যেনো দোকানের ভেতর ক্রেতাদের হুড়োহুড়ি না থাকে। দুই-তিনজনের কেনাকাটা শেষ হলেই যেনো অন্যদের দোকানে ঢোকানো হয়।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর