রাজশাহীতে ঈদ জামাতে করোনা থেকে মুক্তির প্রার্থনা
রাজশাহীতে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাতে বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বে চলমান করোনা মহামারী থেকে সবাইকে পরিত্রাণের জন্য মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানানো হয়েছে। একই সথে জীবনের সকল পাপ মোচন, এক মাসের সিয়াম সাধনা কবুল ও নাজাতের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে।
এছাড়া হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি আর কূপমণ্ডুকতার বিপরীতে মানবিক মূল্যবোধ আর পরমতসহিষ্ণুতার বারতা ছড়িয়ে দিয়ে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের আহ্বান এসেছে বিভাগীয় শহর রাজশাহীর প্রধান ঈদ জামাত থেকে।

আজ শুক্রবার (১৪ মে) সকাল ৮টায় রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম (রহ.) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
নিজ নিজ জায়নামাজ নিয়ে মসজিদে গিয়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে মুসল্লিরা ফাঁকা ফাঁকা হয়ে সারিবদ্ধ হয়ে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত শেষে আজ পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি বা করমর্দন করেন নি কেউ। তবে দূর থেকেই কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সবাই। নামাজকে ঘিরে এ সময় কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এখানে ঈদের দ্বিতীয় জামাত হয় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে। এতে ইমামতি করেন- মসজিদের সহকারী ইমাম হাফেজ রেজাউল করিম। এছাড়াও নগরের রানীবাজার জামে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে।
এখানে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব মাওলানা শাহাদত আলী। তিনি সাধারণত প্রতিবছর রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজে ইমামতি করে থাকেন। কিন্তু এ বছর সেখানে জামাত অনুষ্ঠিত না হওয়ার কারণে তিনি এই মসজিদে ইমামতি করেন।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এবার সরকারি নির্দেশনা মেনে রাজশাহীতেও মসজিদের ঈদের জামাত আয়োজন করা হয়।
রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম (রহ.) দরগাহ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সরকার শরীফুল ইসলাম শরীফ জানান, ‘প্রতিবছর ইসলামি ফাউন্ডেশন, সিটি করপোরেশন ও হযরত শাহ মখদুম (রহ.) দরগাহ ট্রাস্টি বোর্ড যৌথভাবে ঈদগাহগুলোতে ঈদ জামাতের সময় নির্ধারণ করা হতো। কিন্তু করোনা সংকটের ফলে সরকারি নির্দেশনার কারণে এবার রাজশাহীর কোনো ঈদগাহেই ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই নিজ নিজ এলাকার মসজিদ কমিটিকে তাদের ঈদের নামাজ পড়ার সময় ঠিক করে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
সরকার শরীফুল ইসলাম শরীফ আরও বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য সবাইকে এবার বাড়ি থেকেই ওজু করে আসতে হয়। সঙ্গে আনতে হয় জায়নামাজ। তারা মসজিদ ফটকে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রেখেছিলেন। সরকারি নির্দেশনা মেনেই তারা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
এদিকে, ঈদগাহের বদলে বাড়ির কাছে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। সেইসঙ্গে মসজিদে ঈদ জামাত আয়োজনের ক্ষেত্রে সুরক্ষার ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়।
মুসুল্লীরা আজ মাস্ক পড়ে, শারীরিক দূরুত্ব বজায় রেখে কাতারে দাঁড়ানো, জামায়াত শেষে কোলাকুলি ও হাত মেলোনা পরিহার করেন।
এবার সব ঈদ জামাত ঘিরে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যারা ঈদ জামাতে অংশ নিতে গিয়েছিলেন জায়নামাজ ছাড়া আর কিছু যাতে কেউ সঙ্গে না আনেন, সে বিষয়ে আগেই সবাইকে সতর্ক করেছিল মহানগর পুলিশ।
রাজশাহী বার্তা/admin