গোমস্তাপুরে গরু ডাকাতির ঘটনা, দায়িত্বে অবহেলায় ৬ পুলিশ সদস্য ক্লোজড
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে গরুর খামারে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে খামার মালিক ও তার স্ত্রীকে বেঁধে রেখে খামার থেকে ১৫টি গরু নিয়ে যায়। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ৬ পুলিশ সদস্যকে গোমস্তাপুর থানার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে।
শনিবার (০৪ ডিসেম্বর) রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের জিনারপুর-গড়বাড়ি গ্রামে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। শনিবার রাতে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ৬ পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোমস্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলীপ কুমার দাস।
ক্লোজড করা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে গোমস্তাপুর থানার তিনজন কনস্টেবল, দুইজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও একজন উপপরিদর্শক (এসআই) রয়েছেন।
গরুর মালিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত দেড়টার দিকে বাড়িতে মাদক আছে বলে তল্লাশি শুরু করে ৫ জন লোক। এ সময় গরুর মালিক আশরাফুল ইসলাম ও তার স্ত্রীকে বেঁধে রেখে খামারের পেছন দিকের ধানখেতে গিয়ে গরু নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। আশেপাশের লোকজন আশরাফুলের বাড়িতে আসার আগেই ১৫টি গরু নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
গরুর মালিক আশরাফুল ইসলাম বলেন, রাত ১টা ৩০মিনিটে আমি আর আমার স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিলাম। ৫ জন ডাকাত আমাকে পুলিশের লোক বলে পরিচয় দেয়। এরপর খামারে মাদক রয়েছে বলে তল্লাশি শুরু করে। আড্ডা-সাপাহার সড়কের জিনারপুর গড়বাড়ি কালভার্টের পাশে ধানের খেতে হাত ও পা বেঁধে আমাদের ফেলে রেখে ধানখেত দিয়ে গরুগুলো নিয়ে চলে যায় তারা।
তিনি আরও বলেন, কোনোরকমে হাত-পায়ের বাঁধন খুলে চিৎকার করতে থাকলে আমার ভাই মিজানুর রহমান বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে আমাদের উদ্ধার করে। মিজানুর তাৎক্ষণিক তার ছেলে শাহীনকে পুলিশকে খবর দিতে বলে। শাহীন রাত ৪টা ২৫ মিনিটে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গোমস্তাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বদিউজ্জামান ঘটনাস্থলে সকাল ৭টায় আসে।
আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী বেলী বেগম জানান, আমাকে ও আমার স্বামীকে বেঁধে নিয়ে গিয়ে কিছু দূরে কালভার্টের নিচে ফেলে রাখে। এ সময় মুখে গামছা ও হাত-পা বেঁধে রাখে। চিৎকার করতে গেলে ব্যাপক কিল-ঘুষি মারে তারা। আমাদের বেঁধে রেখে খামারের ১৭টি গরু নিয়ে চলে যায়। পরে ২টি গরু বাড়িতে ছুটে পালিয়ে এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা তুহিন খান জানান, তারা নিজেরাই হাত-পা ছুটিয়ে কাঁদতে কাঁদতে খামারের কাছে আসে। পরে ঘটনা শুনে পুলিশকে ফোন দেয়। কিন্তু পুলিশ সকালে আসে। ১৫টি গরুর আনুমানিক দাম ১৩ লাখ টাকা হতে পারে।
শনিবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান, সহকারী পুলিশ সুপার (গোমস্তাপুর সার্কেল) শামছুল আজম ও গোমস্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলীপ কুমার দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গোমস্তাপুর থানার ওসি দিলীপ কুমার দাস জানান, খামারের পেছন দিয়ে বেড়া কেটে গরুগুলো নিয়ে গেছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজশাহী বার্তা/admin