সামাজিক দূরত্ব রক্ষার নির্দেশনা মানছেন না কেউ কেউ

সময়: 5:30 pm - March 27, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 353 বার

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ঘরে অবস্থানের নির্দেশনা মানছেন না কেউ কেউ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যে ফাঁকফোকর দিয়ে অপ্রয়োজনে কিছু মানুষ ঘর থেকে রাস্তায় বের হচ্ছেন।

 

এদের অনেকেই বাড়ির বাইরে এসে অলিগলিতে মেতে উঠছেন গল্প-আড্ডায়। সংবাদপত্র ও স্বাস্থ্য বিভাগের বাইরে অপ্রয়োজনে বের হওয়া ব্যক্তিগত কিছু গাড়িও রাস্তায় দেখা গেছে। বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে।

 

অথচ সংক্রমণ যাতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য লোকজনকে রাস্তায় বের না হতে নির্দেশনা এসেছে সরকারের কাছ থেকে। প্রধানমন্ত্রীও জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। সারা দেশে অধিকাংশ লোকজনই মেনে চলছেন সরকারি নির্দেশনা। ব্যতিক্রম খুবই কম।

 

কিন্তু শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, দু’একজনের দেখাদেখি অন্যরাও রাস্তায় নেমে আসার ক্ষেত্রে উৎসাহিত হতে পারে। এতে সড়কে গাড়ির সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে পারে। সেক্ষেত্রে করোনার সংক্রমণ রোধে ঘরে থাকার যে আহবান জানানো হয়েছে তা ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা আছে।

 

সরেজমিন দেখা গেছে, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে সরকারি আদেশ বাস্তবায়নে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাস্তায় সক্রিয় দেখা গেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করছিলেন সেনাবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও।

 

তারা সাধারণ মানুষকে মাইকিং করে বা সরাসরি বুঝিয়ে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। দু-একটি জায়গায় অবশ্য কঠোরতা অবলম্বন করার খবর পাওয়া গেছে। তবে সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও সতর্ক তৎপরতা প্রত্যাশা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সাধারণ ছুটি শুরু হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ঘরে থাকার কথা সাধারণ মানুষের। বৃহস্পতিবার শহরের রাস্তা ও অলিগলিতে সাধারণ মানুষের চলাফেরা অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু এরপরও অপ্রয়োজনে কিছু মানুষকে রাস্তায় ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। ঢাকার একটি এলাকায় ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতো অনেক মানুষ সেখানে বাইরে চলাচল করছে।

 

বনশ্রী এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে পাওয়া যায় এর অনেকটা বিপরীত চিত্র। ওই এলাকাটিতে রাস্তায় অল্প কিছু রিকশা চলাচল করলেও জনসাধারণের চলাচল ছিল সামান্য। এলাকাটির রিকশাওয়ালা আমির উদ্দিন জানান, তারা কয়েকজন শুধু রিকশা চালাচ্ছেন। ফলে মানুষের চলাচল কম হলেও ভাড়া পাচ্ছেন। শংকর ও ধানমণ্ডি-২৭ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কিছু ব্যক্তিগত পরিবহন চলছে। কোনো গণপরিবহন নেই।

 

ফাঁকা রাস্তায় চলছে রিকশা। প্রধান সড়কে লোকসমাগম না থাকলেও বিভিন্ন গলিতে দেখা গেছে মানুষের চলাচল। অল্প দূরত্বেই ছিল পুলিশের টহল। সংসদ ভবন এলাকার সামনেও অনেককে চলাচল করতে দেখা গেছে। মিরপুর-১ এলাকার বাসিন্দা সুপ্রিয়া খান বলেন, বিভিন্ন গলিতে মানুষ মনের সুখে ঘুরতেছে।

 

মেইন রোড থেকে ভেতরে বলে তাদের কেউ দেখছেও না। কাওলা এলাকার বাসিন্দা অভ্র হাসান জানান, রাস্তায় মানুষের চলাচল অনেকটা কম। তবে মুদি দোকানে ভিড় রয়েছে। অন্যান্য দোকান বন্ধ। মুরব্বিরা মসজিদে নামাজে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছে। যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা গণমাধ্যমের এক কর্মী বলেন, যেখানে মানুষের জন্য ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সুযোগ ছিল না, সেখানে ফুটপাতে দীর্ঘক্ষণ হাঁটার পর হয়তো কাউকে চোখে পড়ছে। কামরাঙ্গীরচর এলাকাতে দোকানপাট সব বন্ধ রয়েছে, তবে রাস্তায় অনেক লোক সমাগম রয়েছে বলে জানান এলাকাটির বাসিন্দা মামুন হোসাইন।

 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহম্মেদের নেতৃত্বে সাতটি থানা এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, আমরা ৮টার দিকে যখন অভিযান শুরু করি তখন দেখেছি অনেকেই নির্দেশনা অমান্য করে রাস্তায়, অলিগলিতে অবস্থান করছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সরকারি নির্দেশনার বাইরে গিয়েও অনেক দোকান খোলা ছিল।

 

পরে পুলিশের তৎপরতা শুরু হলে সেটা অনেকটাই কমানো গেছে। অনেককে বুঝিয়ে বলেছি, আবার যেখানে চাপপ্রয়োগ করা দরকার সেখানে সেটা করেছি। পাশাপাশি সব এলাকায় টহল প্যাট্রোল নিশ্চিত করা হয়েছে। যা নিয়মিত মনিটর করা হবে।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর