ঘরে না থাকলে অবস্থা ভয়ংকর

সময়: 8:09 pm - April 6, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 65 বার

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই মুহূর্তে কেউই নিরাপদ নয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই নিজ উদ্যোগে ঘরে না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও ইতালির চেয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থা হবে বাংলাদেশে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন।

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে শনিবার বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯ জন। ঠিক ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে গতকাল ১৮ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে এক জন। দ্বিগুণ হয়ে করোনার আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৮ জন। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে হলো ৯ জন।

করোনার ঝুঁকি ঢাকায় সবচেয়ে বেশি। আক্রান্ত ৮৮ জনের মধ্যে ৫৪ জনই ঢাকার, বাকিরা ১০ জেলার বাসিন্দা। ঢাকার মধ্যে মিরপুর, টোলারবাগ ও বাসাবো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় ঢাকা থেকে যাতে কোনো লোক বাইরে যেতে না পারে এবং ঢাকার বাইরে থেকে কোনো মানুষ যাতে ঢাকায় আসতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশনা দিয়েছেন আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। রোববার তিনি এই নির্দেশনা দেন। আইজিপির এই নির্দেশে ঢাকা লকডাউনের কথা উল্লেখ না করা হলেও কার্যত ‘লকডাউন’ হলো ঢাকা।

অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে অ্যাকশন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। প্রয়োজনে কারফিউ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, কেউই নিরাপদ নই। তাই সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সামাজিক দূরত্ব সবাই যদি না মানি, তবে স্বাস্থ্য বিভাগ একা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। ঘরে থাকতে হবে। তা না মানলে পরিস্থিতি আমেরিকার ও ইতালির চেয়ে ভয়াবহ হবে।

আইইডিসিআর পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় রোগী পাওয়া যাচ্ছে, এ কারণে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে বলা যায়। তবে তা ক্লাস্টার ভিত্তিতে আছে।

তিনি বলেন, এখনো বলছি, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। এটা যদি না করি তাহলে সংক্রমণ কিন্তু ক্লাস্টার থেকে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। সুতরাং সবাইকে অনুরোধ করছি সব ধরনের জনসমাগম এড়িয়ে চলুন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজার ৮০২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইন, ২৬৭ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। এর মধ্য গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইনে গেছেন ১ হাজার ১১১ জন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে গেছেন ৯ জন। এ পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৪১২ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে; ফলে এখন কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১২ হাজার ৬৫৯ জন। এখন পর্যন্ত মোট ৫২০ জনকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, এই অভিজ্ঞতা পৃথিবীর সবার কাছে নতুন। আমরা যদি কোনো ভুল করেই থাকি, সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। এই ভুলের কোনো পুনরাবৃত্তি করা যাবে না।

এদিকে ঢাকার বাইরে আক্রান্তের মধ্যে মাদারীপুরে ১১ জন, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন, গাইবান্ধায় পাঁচ জন, গাজীপুরে এক জন, চুয়াডাঙ্গায় এক জন, কুমিল্লায় এক জন, কক্সবাজারে এক জন, শরীয়তপুরে এক জন, রংপুরে এক জন ও চট্টগ্রামে এক জন রয়েছেন।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর