মতের বিরুদ্ধে গেলেই এদেশে জামায়াত-শিবির ট্যাগ দেয়া হয়: আজহারী

সময়: 4:53 pm - January 30, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 308 বার

ইসলামি চিন্তবিদ ও জনপ্রিয় ধর্মীয় বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীকে জামায়াতের প্রোডাক্ট বলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ যে মন্তব্য করেছেন তার জবাব দিয়েছেন আজহারী।

বুধবার রাত পৌনে ১২টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর এ মন্তব্যের জবাব দেন।

আজহারী ফেসবুকে লেখেন– তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের এজেন্ট বা প্রোডাক্ট নন। কোনো সংগঠনের টাকায় তিনি পড়ালেখা করেননি। নিজের চিন্তা আর মতের বিরুদ্ধে গেলেই এ দেশে একটি সস্তা ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয় বলেও লেখেন আজহারী।

আজহারী লেখেন, তিনি ইসলামের একজন দায়ী। দ্বীনের খেদমতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। ইসলামের মধ্যমপন্থার সৌন্দর্যকে প্রমোট করাই তার উদ্দেশ্য।

পাঠকদের উদ্দেশে আজহারীর স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘আমি কোনো দলের এজেন্ট বা প্রোডাক্ট নই। আর কোনো রাজনৈতিক দলের অর্থায়নে আমার শিক্ষাজীবনও কাটেনি। মিথ্যাচার যেন এ দেশে মহামারীতে রুপ নিয়েছে। আর সেটি যখন প্রকাশ্যে, গণমাধ্যমে, দেশের কোনো উচ্চপদস্থ দায়িত্বশীলের মুখ থেকে প্রকাশ পায়, তখন আফসোস আর হেদায়েতের দোয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।

নিজের চিন্তা আর মতের বিরুদ্ধে গেলেই এ দেশে একটা সস্তা ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয়। আর সেটি হলো– ‘জামায়াত-শিবির’। এবার আপনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হোন অথবা মনেপ্রাণে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক হোন। দ্যাট ডাজেন্ট মেটার। ভিন্নমতকে দমনের এই অপকৌশল পুরো জাতির ভাগ্যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

একজন দা’ঈ ইলাল্লাহর কোনো দল নাই। তিনি সব দলের, সব মানুষের। তাদের দলীয়করণ না করে ব্যাপকভাবে দ্বীনের খেদমতের সুযোগ করে দেয়া উচিত। দেশের সব দলের মানুষ যেন তাদের দ্বারা আলোকিত হতে পারে সেটির পরিবেশ থাকা উচিত।

আমি সরকারবিরোধী নই। আমি অন্যায়বিরোধী। তাই কোনো অন্যায় দেখলে সে ব্যাপারে কথা বলা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এবার সে অন্যায় যেই করুক না কেন, যে দলই হোক না কেন।

ব্যক্তিগতভাবে, এ দেশের রাজনীতিতে আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই। সোশ্যাল অ্যাক্টিভিটি ও দাওয়াহ অ্যাক্টিভিটি এ দুটি কাজই হলো আমার আগ্রহের মূল কেন্দ্রবিন্দু।

আমার মিশন হলো– এ দেশে ইসলামের মধ্যমপন্থার সৌন্দর্যকে প্রমোট করা। যেটিকে আরবিতে বলে আল-ওয়াসাতিয়্যাহ। জীবনযাপনে ভারসাম্য, চিন্তায় ভারসাম্য, কাজে ভারসাম্য এবং আচরণে ভারসাম্যপূর্ণ মুসলিম তৈরি করা।

ভিন্নমতের ব্যাপারে আমি বরাবরের মতোই শ্রদ্ধাশীল। সব মুসলমানকে আপন ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করি ও ভালোবাসি। তাদের নাজাতের জন্যে মন ভরে দোয়া করি। কারও পিছু লেগে থাকা, কাদা ছোড়াছুড়ি করা এবং কোনো মুসলিম ভাইয়ের ব্যাপারে অন্তরে হিংসা পুষে রাখা পছন্দ করি না। কারণ ইসলাম আমাকে এটি শেখায়নি। আর প্রিয় নবীর (স.) আদর্শও এমনটি নয়।

আমি চাই বিভিন্ন ঘরানার আলেমরা সহনশীলতার ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের চর্চা করুক। তাদের উদারতার প্রভাব পড়ুক দেশের সব শ্রেণির মানুষের মাঝে। সংকীর্ণতা আর হীনমন্যতা পরিহার করে, দ্বীনের সব দায়ীরা কোরআন সুন্নাহর সুধা বেলাতে থাকুক পুরো দেশজুড়ে, পুরো পৃথিবীজুড়ে।’

প্রসঙ্গত দুদিন আগে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ আজহারীর কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আজহারী-মাজহারীরা তলে তলে জামায়াতের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর