বগুড়ার ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কে ‘টিউমার’!
বগুড়ায় সংস্কারের অভাবে ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ-পাথর দেবে গিয়ে পাশে উঁচু হয়ে উঠেছে। মহাসড়কের মাঝেও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর কারণে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত ও মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয় জনগণ ও পরিবহন শ্রমিকরা এটিকে ‘মহাসড়ক টিউমার’ বলছেন। তারা বড় দুর্ঘটনা এড়াতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বলেছেন, কিছু অংশ মেরামত করা হয়েছে; শিগগিরই মিলিং মেশিন দিয়ে কেটে মহাসড়কের অবশিষ্ট অংশ ঠিক করা হবে।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বগুড়ার দক্ষিণে শেরপুর উপজেলার চান্দাইকোনা ও উত্তরে শিবগঞ্জ উপজেলার রহবল পর্যন্ত প্রায় ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়ক।
বগুড়া-নাটোর মহাসড়কেরও প্রায় একই অবস্থা। সংস্কারের অভাবে চান্দাইকোনা-রহবল পর্যন্ত মহাসড়কের শেরপুর, বগুড়া সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পিচ ও পাথর দেবে গিয়ে পাশে উঁচু হয়ে উঠেছে।
বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের নন্দীগ্রাম, শাজাহানপুর অংশে এমন অবস্থা হয়েছে। মহাসড়কের মাঝেও গর্ত হয়ে গেছে। এতে দূরপাল্লার, জেলা ও আন্তঃজেলা রুটের যানবাহন চলাচলের সময় প্রচণ্ড ঝাঁকুনি হচ্ছে।
অনেক সময় কোনো কোনো যানবাহনের চালক নিয়ন্ত্রণ করতে না পেয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগী জনগণ ও পরিবহণ শ্রমিকরা এটিকে ‘মহাসড়ক টিউমার’ বলছেন।
এ মহাসড়কের চলাচলকারী বাসের চালক আবদুর রশিদ, সিএনজি অটোরিকশাচালক আবদুল বাছেদ, ট্রাকচালক কোরবান আলী, ব্যবসায়ী শাজাহান আলী, শিক্ষক আসাদুর রহমান, শিক্ষিকা রোমেনা আহমেদ জানান, জীবিকার প্রয়োজনে তাদের প্রতিদিন ওই মহাসড়কে চলাচল করতে হয়।
মহাসড়কের দুপাশে পাথর ও পিচ দেবে গিয়ে পাশে ২ থেকে ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত স্থান উঁচু হয়ে গেছে। এসব এলাকায় মাঝে মাঝে পেছনে আসা বড় গাড়িকে সাইড দিতে গিয়ে এ উঁচু ঢিবির সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগে এক মোটরসাইকেলচালক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।
প্রাইভেটকারচালক মুরাদ হাসান জানান, বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের শাজাহানপুর উপজেলার প্রায় সাড়ে ৯ কিলোমিটার অংশের অনেক স্থানে পিচ ও পাথর দেবে গিয়ে পাশে টিউমারের মতো উঁচু হয়ে গেছে।
এ ছাড়া ছিলিমপুর, তিনমাথা, মারমাথাসহ বিভিন্ন স্থানে একই অবস্থা। এসব স্থানে চাকার নিচে ফাঁকা হয়ে যায়। আর তখন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি দুর্ঘটনার জন্য মহাসড়কের বেহাল অবস্থা অনেকাংশে দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন।
ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে মহাসড়কের এসব ‘টিউমার’ অপসারণে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান জানান, ওভারলোডিং গাড়ির কারণে মহাসড়কের পাথর ও পিচ সরে একখানে উঁচু হয়ে যায়। মহাসড়ক নির্মাণে ছোট পাথরের বেশি ব্যবহার ও বিটুমিন কমবেশিসহ বিভিন্ন কারণে এ সমস্যা হয়েছে।
তিনি জানান, মিলিং মেশিন খুব দামি। মহাসড়কের শেরপুর অংশে মেরামত করা হয়েছে। ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিগগিরই মিলিং মেশিনের মাধ্যমে উঁচু স্থানগুলো কেটে সরিয়ে ফেলা হবে।
রাজশাহী বার্তা/admin