রাজশাহীর আম বাগান চাষিরা, বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত
শীত ফুরোলেই আসবে বসন্ত। মুকুলে মুকুলে ভরে উঠবে আমগাছ। তাই এখন থেকেই আমবাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন রাজশাহীর চাষিরা। ভালো ফলনের আশায় তারা গাছে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করছেন। গাছের গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করে পানিও দিচ্ছেন নিয়মিত।
কৃষি বিভাগ বলছে, চাষিরা সার্বক্ষণিক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শেই তারা বাগান পরিচর্যায় নেমেছেন। আর গাছে মুকুল আসার আগে আগে এমন পরিচর্যা খুব জরুরি। তাই এখন থেকেই আম বাগানে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে মালিক এবং চাষিদের।
সরেজমিনে রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। কেউ স্প্রে করছেন, কেউ গাছের গোড়ায় পানি দিচ্ছেন আবার কেউ কেউ বাগানের আগাছা পরিষ্কার করছেন। নগরীর রায়পাড়া ও কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় দু’একটি গাছে মুকুলও দেখা গেছে। সোনারাঙা সেই মুকুলের পরিমাণ এখন খুব কম হলেও সৌরভ ছড়াচ্ছে বাতাসে। তা দেখে পরিচর্যায় আরও ব্যস্ততা বাড়াচ্ছেন বাগানের মালিক ও লিজ নেওয়া চাষিরা।
বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের আমচাষি সাইদুর রহমান বলেন, এখন মাঘ মাস। শীতের ভরা মৌসুম। ভরা শীতে গাছে মুকুল আসা ভালো নয়। এখন হাতে গনা গাছে দু’একটি করে মুকুল দেখা যাচ্ছে। কুয়াশায় সেগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ফলন যেন ভাল পাওয়া যায় তার জন্য এখন থেকেই গাছের পরিচর্যা করা হচ্ছে। পোকামাকড় দমন করতে পারলেই ফলন ভাল হবে।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র জানায়, ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় অবধি বারোমাসি বা স্থানীয় জাতের আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। তবে এবার জানুয়ারির মধ্যভাগে কিছু কিছু গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। ফেব্রæয়ারি মাসেই মূলত সব গাছে মুকুল আসবে। শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা ও ঘন কুয়াশার কারণে গাছের মুকুল নষ্ট হতে পারে। এ জন্য এখন থেকেই বাগানের পরিচর্যা বাড়াতে হবে। পোকামাকড় দমন করতে হবে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামসুল হক বলেন, গাছে মুকুল আসার আগে, পরে এবং আমের গুটি যখন মটরদানার মতো আকারে থাকবে তখন আমবাগানে কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হয়। তাহলে গাছে পোকামাকড় এবং রোগ-বালাই আক্রমণ করতে পারে না। এখন মুকুল আসার আগেই কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা আমের বাগান ঘুরে ঘুরে চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
রাজশাহী জেলায় ১৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এখানে ৩৫ থেকে ৪০ জাতের আম চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ফজলি, গোপালভোগ, মোহনভোগ, ল্যাংড়া, হিমসাগর, আম্রপালি, দুধসর, দুধকলম, বিন্দাবনী উল্লেখযোগ্য। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এ বছর রাজশাহী থেকে শতভাগ বিষমুক্ত আম জাতিকে উপহার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
রাজশাহী বার্তা/admin