মান্দার চৌবাড়িয়া পশুর হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি
আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে নওগাঁর মান্দা উপজেলার চৌবাড়িয়া পশুর হাটে খাজনার অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইজারা প্রাপ্তির তিন মাসেও হাটে টাঙানো হয়নি সরকার নির্ধারিত খাজনা (টোল) আদায়ের তালিকা। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইজারাদারের লোকজন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের নিকট থেকে ইচ্ছেমত আদায় করছেন খাজনা।
অন্যদিকে বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংকটময় মূহুর্তেও এ পশুর হাটে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিধি। হাটে আগতদের মাস্ক পরার বালাই নেই। কোরবানীর পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নেই পশুচিকিৎসক। এ অবস্থায় হাটে আগতদের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম পশুর হাট চৌবাড়িয়া। চলতি ১৪২৭ সনে আয়কর ভ্যাটসহ হাটটি ইজারা প্রদান করা হয়েছে ৫ কোটি ৪১ লাখ টাকায়। ইজারা নিয়েছেন নওগাঁ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম।
শুক্রবার (৩ জুলাই) সরোজমিন চৌবাড়িয়া হাটে গিয়ে দেখা গেছে, হাটে আগত মানুষের মুখে মাস্ক নেই। স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই চলাচল করছেন লোকজন। প্রচন্ড ভীড় ঠেলে হাটের ভেতরে প্রবেশ করা ছিল অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। ইজারাদারের লোকজন হাটের বিভিন্ন স্থানে টেবিল-চেয়ার পেতে আদায় করছেন খাজনার টাকা। এসময় দেখা যায় সরকার নির্ধারিত খাজনা ছাড়াও আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।
শুধুমাত্র ক্রেতার নিকট থেকে খাজনার টাকা আদায়ের নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না ইজারাদারের লোকজন। বিক্রেতাদেরও গুনতে হচ্ছে অর্থ। এছাড়া বিভিন্ন ফান্ডের কথা বলেও আদায় করা হচ্ছে টাকা। কোরবানী পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য দেখা মেলেনি কোনো চিকিৎসকের।
হাটের গরু কিনতে আসা রাজশাহীর তানোর উপজেলার মাদারীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ৭৫ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় কিনেছেন। এজন্য তাকে খাজনা দিতে হয়েছে ৫শ টাকা। এছাড়া বিক্রেতার নিকট থেকেও নেয়া হয়েছে আরও ৩০ টাকা। নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের হামিদুর শাহ একজোড়া হালের বলদ কিনেছেন। খাজনা বাবদ তার কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ১ হাজার টাকা। একই গ্রামের আব্দুল মান্নাককে একজোড়া বলদের জন্য একই হারে খাজনা দিতে হয়েছে। এসব গরু বিক্রেতাদের নিকট থেকেও বিভিন্ন ফান্ডের কথা বলে নেয়া হয়েছে অতিরিক্ত অর্থ।
হাটে আগত ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের নিকট থেকে গরু প্রতি ৫শ টাকা করে নেয়া হলেও ইজারাদারের লোকজন রশিদে টাকা অংক উল্লেখ করছেন না। ওই স্থান ফাঁকা রেখেই আমাদের রশিদ সরবরাহ করা হচ্ছে।’
হাট ইজারাদার আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই মাস হাট করা সম্ভব হয়নি। এসময় হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি ছিল না। হাটে তালিকা না টাঙানো ও গরু প্রতি ৫শ টাকা করে খাজনা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পরে কথা হবে বলে মোবাইলফোনের লাইন কেটে দেন।
এ প্রসঙ্গে মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে কাজ চলছে। আগামি হাটগুলোতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
রাজশাহী বার্তা/admin